রাজ কুন্দ্রার (Raj Kundra) পর্নোগ্রাফিক কনটেন্ট (Pornographic Content)তৈরির মামলায় অভিনেত্রী গেহনা বশিষ্টের (Gehana Vasisth) নামও উঠেছে। যে ছবি নিয়ে এত চর্চা হচ্ছে তার মধ্যে রাজ কুন্দ্রার প্রোডাকশনের তিনটি ছবিতে কাজ করেছেন গেহনা। তিনি বলেন, 'যে ভাবে ছবিগুলিকে পর্ন কনটেন্ট হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা ঠিক নয়। এগুলো বোল্ড ইরোটিক ফিল্ম (Erotica) তবে পর্নের সঙ্গে বিস্তর ফারাক রয়েছে।'
এ বিষয়ে বিখ্যাত আমেরিকান পরিচালক লুসি ফিশার (Lucy Fisher) বলেছেন, 'ইরোটিকা আমাদের মধ্যে মধ্যবিত্ত লেখাপড়া জানা মানুষদের জন্য। অন্য দিকে পর্নোগ্রাফি একা, অনাকর্ষক এবং অশিক্ষিত মানুষদের জন্য তৈরি।'
ডিকশনারির সংজ্ঞা বলছে, যে বই, পত্রিকা, ফিল্ম ইত্যাদির কোনও শৈল্পিক মূল্য নেই। শুধুমাত্র যৌন দৃশ্যের বর্ণনা, নগ্ন মানুষের প্রদর্শন করে, তাকে পর্নোগ্রাফি (Pornography) বলা হয়। কিন্তু যে বই, পত্রিকা বা ফিল্ম ইত্যাদি যৌন ইচ্ছে এবং মানসিক আনন্দ তৈরি করে, কিন্তু পর্নোগ্রাফি নয়, তাকে ইরোটিকা (Erotica) শ্রেণিতে ফেলা হয়।
সাধারণ ভাবে জনমানসে পর্নোগ্রাফি এবং ইরোটিকা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই। অনেকেই এই দুইয়ের পার্থক্য বোঝেন না। তাঁরা লুসি ফিশারের মন্তব্য পড়ে আশ্চর্য হতে পারেন। খুব কম মানুষই আছএন যাঁরা পর্ন এবং ইরোটিকাকে আলাদা শ্রেণিভুক্ত হিসাবে ভাবেন এবং দেখেন।
ইরোটিকা এমন একটি শৈল্পিক কাজ যা শিল্পকে আশ্রয় করেই যৌন উত্তেজনা এবং মানসিক আনন্দ প্রদান করে থাকে। যেমন পেইন্টিং, সাহিত্য, ফিল্ম, কবিতা, গান, ভাষ্কর্য ইত্যাদি। এটা পর্নোগ্রাফির থএকে অনেকটাই আলাদা।
বই, ফিল্ম বা পত্রিকার মাধ্যমে শুধুমাত্র যৌন ইচ্ছা জাগানোর জন্য পর্নোগ্রাফির ব্যবহার হয়। এর সঙ্গে শিল্প বা শৈল্পিক মূল্যের কোনও সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে বিখ্যাত মার্কিনি মনোবিদ লিয়ন এফ সেলৎজার (Leon F. Seltzer) ২০১১-য় একটি প্রতিবেদনে লেখেন, 'কোনও কাজ যা কামুকতার সঙ্গে করা হয়েছে তাতে বিষয়বস্তু শিল্পের সাহায্য নেওয়া হয়ে থাকে। এর সঙ্গে মানসিক, সেলিব্রেশন এবং আনন্দের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।'
তিনি আরও লেখেন, 'পর্নোগ্রাফির এর সম্পূর্ণ বিপরীত। যৌনতা বাদে কামুকতার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও কাজ কতটা কামুক এটা যিনি নির্ণয় করতে পারেন, তিনিই শিল্পী।'
পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্য দর্শকদের তৎক্ষণাৎ তীব্র যৌন উত্তেজনার অনুভব করানো। এটাই এক এবং একমাত্র উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন ওঠে, ইরোটিকা কি শেষ পর্যন্ত পর্নের মতো প্রভাব ফেলে না? এর জবাব না। ইরোটিকার সঙ্গে মানসিক আনন্দ এবং কামুকতাকে সেলিব্রেট করা জড়িয়ে রয়েছে। রয়েছে বিষয়বস্তু শিল্পের আশ্রয়। তাই ইরোটিকা কখনও পুরনো হয় না। নতুন ভাবে নতুন রূপে ধরা দেয়।