কলকাতা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন এক বাংলাদেশি মডেল- অভিনেত্রী। নাম শান্তা পাল। জানা যাচ্ছে, তাঁর বয়স ২৮ বছর। অভিযোগ, ভারতীয় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং রেশন কার্ড রয়েছে তাঁর কাছে। ২০২৩ সাল থেকে কলকাতার গলফ গল্ফ গ্রিন থানা এলাকার বিক্রমগড়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন শান্তা। তাঁর সঙ্গে যুবকও ছিলেন।
শান্তার বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। তাঁকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। ধৃতকে ৮ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভারতীয় বিভিন্ন নথি ছাড়াও, বাংলাদেশের একাধিক পাসপোর্ট ও সেদেশের এক বিমান সংস্থার পরিচয়পত্র, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড (ঢাকার) মিলেছে তাঁর কাছে। যদিও তিনি কোনও ভিসা দেখাতে পারেননি। ২০২৩ সালে ভিসা নিয়ে এদেশে এসেছিলেন তিনি। সেই ভিসার মেয়াদ ফুরিয়েছে। এরপর নতুন করে ভিসার বানাননি তিনি। শুধু তাই নয়, পাসপোর্টের মেয়াদও ফুরিয়েছে চলতি বছরে।
অভিনেত্রীর কাছে পাওয়া গেছে দুটি আধার কার্ড। যার মধ্যে একটি কলকাতার এবং অন্যটি বর্ধমানের। ২০২০ সালে তাঁর নামে বর্ধমানের ঠিকানার আধার নথিভুক্ত করা হয়েছে। এই সমস্ত নথি কীভাবে তাঁর কাছে এল, এই নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি।
তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, কলকাতায় একটি স্টার্ট আপ করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। গোটা বিষয়টির পিছিনে কোনও বড় চক্র রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। শান্তার সঙ্গী যুবককেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে তদন্তকারীরা। যদিও এখনও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি।
২০২০ সালে 'মি টু' অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি টলিউডের এক পরিচালকের বিরুদ্ধে। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রাক্তন স্বামী রাজীব কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছবিতে সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে, আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ আনেন শান্তা। তাঁর দাবি ছিল, আন্তর্জাতিক প্রযোজনায় একটি বাংলা ছবিতেও কাজ করবেন তিনি।
সেই ছবিতে তাঁর সঙ্গে নাকি কাজ করার কথা ছিল অঙ্কুশ হাজরার। সেসময় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, "ফেসবুকের মাধ্যমে রাজীব কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আমি তাঁকে চিনতাম না। তিনি আমাকে বলেন, একটি ছবির বিষয়ে কথা বলার জন্য ঢাকা আসবেন। আমি যদি তাঁর ছবিতে কাজ করতে রাজি থাকি, তাহলে হোটেলের ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হবে। তিনি আমাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি আপত্তিকর ছবিও পাঠাতে বলেন। আমি রাজি হইনি।"
এই নিয়ে সেসময় রাজীব কোনও মন্তব্য করেননি। তবে শান্তার নাম পুনরায় উঠে আসায়, বৃহস্পতিবার রাজীব সংবাদমাধ্যমকে বলেন তিনি শান্তাকে চেনেন না। কলকাতার কোনও শিল্পী হলে, তাও অভিযোগ ওঠার যোগাযোগ করে কথা বলতেন। রাজীব বলেন, যেহেতু তাঁর কাছে অভিযোগকারিণীর সঙ্গে যোগাযোগের কোনও নম্বর ছিল না, এবং তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যে বলছেন, এজন্যে তিনি এই বিষয়ে মাথা ঘামাননি।
প্রসঙ্গত, মডেলিং, অভিনয় ছাড়াও বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে সঞ্চালিকার কাজও করেছেন শান্তা পাল। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের বিমানসেবিকার কাজও করেছেন।
২০১৯ সালে, কেরালায় অনুষ্ঠিত মিস এশিয়া গ্লোবাল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এর আগে ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তেলুগু সহ বাংলা ছবির কাজে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। (সমস্ত ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)