শেষরক্ষা হল না। ক্যান্সারে মারা গেলেন কিংবদন্তী বাংলা ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলি-র বাপিদা ওরফে তাপস দাস। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন ফুসফুসের ক্যান্সারে। চিকিৎসাও চলছিল তাঁর। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলেন না চিকিৎসকরা। প্রয়াত হলেন মহীনের অন্যতম ঘোড়া। চিকিৎসার খরচ জোগাতে বাপিদার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন দুই বাংলার শিল্পীরাও। সেই খবর সোশ্যাল মিডিয়ার জেরে সকলেরই অবগত। কিন্তু রবিবার সেই সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল। বাংলা ব্যান্ডের জগতকে অভিভাবহীন করে দিয়ে চলে গেলেন তাপস দাস।
তাপস দাস যে মারণ রোগ ক্যান্সারে ভুগছেন সেই খবর চলতি বছরের জানুযারিতেই পাওয়া গিয়েছিল। প্রিয় বাপিদার অসুস্থতার খবর শোনামাত্র তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন দুই বাংলার সঙ্গীতশিল্পীরা। তাপস দাসের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে তৈরি হয় তহবিল। ‘ফসিলস’ থেকে ‘বর্ণ অনন্য’, শিল্পীরা চিকিৎসার খরচ জোগাতে একাধিক কনসার্টের আয়োজন হয় শহরেই। পরে অবশ্য তাঁর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে রাজ্য সরকার। এসএসকেএম হাসপাতালেই চলছিল শিল্পীর চিকিৎসা।
বলা চলে বাংলা ব্যান্ডের দুনিয়ায় রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছিল মহীনের ঘোড়াগুলি। যাঁদের গান আজও প্রজন্মের পর প্রজন্ম গেয়ে চলেছেন। মহীনের ঘোড়াগুলি আসলে একটা আবেগ। ১৯৭৫ সালে তৈরি হয় বাংলার প্রথম রক ব্যান্ড। মাঝে ৪৭ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। আজও এই ব্যান্ডের গানগুলির জনপ্রিয়তা এতটা হারায়নি। এই ব্যান্ডে গানের স্রষ্টাদের অধিকাংশই পাড়ি দিয়েছেন অজানার দেশে। এবার সেই দলেই নাম লেখালেন বাপিদাও। তবে স্রষ্টারা চলে গেলেও তাঁদের কীর্তি আজও অমলিন। দীর্ঘদিন ধরেই ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি।
তাপস দাসের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইটে প্রয়াত শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত শিল্পীর স্ত্রী ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
জীবনে বহু বিচ্ছেদ যন্ত্রণা সয়েছেন তখনও কিন্তু তিনি শেষদিন পর্যন্ত গানকে ছাড়েননি। চলে যাওয়ার কয়েক মাস আগে পর্যন্ত তিনি মঞ্চে উঠে গান গেয়েছেন। নাকে মুখে নল লাগানো তবুও চলতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হওয়া সঙ্গীত মেলায় তিনি ভালোবাসো গানটি গেয়ে আবার দর্শকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন। বাপিদা চলে গেলেও রেখে গেলেন পৃথিবীটা নাকি, আমার প্রিয় ক্যাফে, তোমায় দিলাম, মানুষ চেনা দায়, তাকে তাড়াই যত দূরে, ভালোবাসি, ঘরে ফেরার গানের মতো বহু কালজয়ী গান। এই গানের মাধ্যমেই শ্রোতাদের মনে চিররঙিন হয়ে থাকবেন বাপিদা।