সেই সময় নায়ক হওয়ার জন্য যে সুদর্শন চেহারার দরকার পড়ত তেমনটা মোটেও ছিলেন না শত্রুঘ্ন সিনহা। তা-ও তিনি সফল হয়েছেন। সাহিত্য তকের মঞ্চে শত্রুঘ্ন বলেন,'আমরা ছিলাম অনুপ্রাণিত অভিনেতা। লোকে দেখে বলত, এরা যদি নায়ক হতে পারে আমরাই পারি।'
কলকাতা থেকেই এফটিআইআই-এ সুযোগ পেয়েছিলেন শত্রুঘ্ন। তাঁরা কথায়,'এই ভাঙাচোরা নিয়ে চেহারা নিয়ে আমি গিয়েছিলাম অভিনয়ে। এফটিআইআই-এ সুযোগ পেয়েছিলাম কলকাতায়। সেই সময় কলকাতা ছিল না, ক্যালকাটা বলা হত। এখান থেকে শুরু হয়েছিল কেরিয়ার। সেই সময় মৃণাল সেন আমায় দেখে বলেছিলেন,এভাবেই নিজেকে রেখো। লুকিয়ে রাখবে না। সেটা ভালো লেগেছিল। আমি বিহার থেকে গিয়েছিলাম। তখনও বিহার অনেকের কাছে পিছিয়ে পড়া রাজ্য ছিল। অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছে বিহারে। রাজেন্দ্র প্রসাদ, জয়প্রকাশ নারায়ণদের মতো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলাম। বিহারই আমার দুর্বলতা, আর বিহারই আমার শক্তি।'
নিজের বিহারী পরিচয় নিয়ে তিনি গর্বিত বলেও মনে করিয়ে দেন শত্রুঘ্ন। তিনি বলেন,'খিলোনায় বিহারী নামের চরিত্র দিয়ে শুরু হয়েছিল। পরে মানুষের আশীর্বাদে বিহারীবাবু হয়েছি। সুনীল দত্ত একবার বলেছিলেন, দেশে এমন কেউ নেই যাঁর সঙ্গে গোটা রাজ্যের যোগ রয়েছে। কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর থেকে বিহারীবাবু নামেই আমি পরিচিত।'
'সাধারণ চেহারা' নিয়ে ছবিতে সুযোগ। সেখান থেকে সাফল্য। শত্রুঘ্ন বলেন,'তথাকথিত সুন্দর পুরুষরা নায়ক হতেন তখন।প্রয়াত কল্যাণজি বলতেন, দু'ধরনের অভিনেতা রয়েছে। এক ধরনের অভিনেতাদের দেখলেই ঘাম ছুটত। তাঁরা হলেন,দিলীপকুমার, রাজেন্দ্র কুমার, ধর্মেন্দ্র ও উত্তম কুমারের মতো হ্যান্ডসাম অভিনেতা। আর এক ধরনের অনুপ্রাণিত অভিনেতা। যেমন ড্যানি, মিঠুন চক্রবর্তীরা। লোকে আমাদের দেখে বলত,এরা নায়ক হলে আমিও হতে পারি। আমাদের চেহারা দেখে লোকে অনুপ্রাণিত হত।'
ছোটবেলায় দাড়ি কাটার ব্লেডে কেটে গিয়েছিল। সেই থেকে মুখ দাগ। পরে সার্জারি করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাধা দেন দেবানন্দ। শত্রুঘ্ন বলেন,'দেববাবু বারণ করে বলেছিলেন, মুখের এই দাগই তোমার স্টাইল হয়ে উঠবে। সার্জারি করিও না। পরে এটাই লোকেদের পছন্দ করেন। আমার মেয়ে সোনাক্ষী সিনহাও বলেছে, বাবার মুখের দাগই আমার ভালো লাগে।'
আরও পড়ুন- 'শোলে' ও 'দিওয়ার' না করার আক্ষেপ শত্রুঘ্নর, খুশি বন্ধুর সাফল্য়ে