বর্তমানে টলিউড তারকারা তাঁদের লুকস ও চরিত্র নিয়ে নানান ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করেই থাকেন। বাণিজ্যিক ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নিজেদের চেনা গণ্ডি থেকে বেরিয়ে নিজেদের ছক ভাঙছেন। আর পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের ছবিতে বরাবরই তারকাদের দেখা যায় ছক ভাঙতে। এই বছর শিবপ্রসাদ-নন্দিতার নতুন ছবি বহুরূপী আসছে পুজোয়। আর সেই ছবিতেই একেবারে অন্য রকম লুকসে দেখা গেল পরিচালক-অভিনেতা শিবপ্রসাদকে।
হামি ছবিতে লাল্টুকে নিশ্চয়ই ভোলেননি দর্শকেরা। ঠোঁটের ওপর ঝুপসি গোঁফ আর তাতে থাকা অমায়িক হাসি। আর হামি ছবিতে লাল্টুর জীবনযাত্রাও ছিল ভীষণভাবে সহজ-সরল। সংসার আর চাকরি বা ব্যবসা নিয়েই দিব্যি সংসার কেটে যায় তার। কিন্তু বহুরূপী ছবিতে শিবপ্রসাদের বিক্রম চরিত্রটি একেবারেই উল্টো। একাধিক ছবিতে লাল্টুর ভূমিকায় অভিনয় করে চরিত্রটা বেশ স্বভাবযাতই হয়ে গিয়েছিল তাঁর। তবে বিক্রম? 'বহুরূপী'-র জন্য বিক্রম হয়ে ওঠা ততটা সহজ ছিল না শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কাছে। শিবপ্রসাদ নিজের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে বলেছেন, আমি খুবই কৃতজ্ঞ আমায় বিক্রম চরিত্রটির জন্য বেছে নেওয়ার কারণে। আশা রাখছি দর্শকেরা যেরকম ভালোবাসা লাল্টু ও কন্ঠের অর্জুনকে দিয়েছে সেরকম সমর্থন অর্জুনও পাবে।
শিবপ্রসাদ তাঁর এই বিক্রম চরিত্রটি জন্য নিজেকে ভেঙে গড়েছেন। লাল্টুর চরিত্রে অভিনয় করার সময় ওজন ছিল প্রায় ৭৮ কেজি। বিক্রম চরিত্রটির জন্য সেই ওজন তাঁকে কমিয়ে ৬৫-তে নিয়ে আসতে হয়েছিল। ঠিক কী ধরনের ডায়েটের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে শিবপ্রসাদকে? এ প্রসঙ্গে পরিচালক এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে সকালে ওটসের রুটি দিয়ে সবজি সেদ্ধ খেতেন তিনি। কোনও তেল ছাড়া খাবার খেতে হয়েছে পরিচালককে। দুপুরেও পাতে কোনও কার্ব থাকত না। ডালসিদ্ধ খেতেন। বিকেলে কোনও খাবার খেতে দেওয়া হত না তাঁকে। খুব খিদে পেলে ড্রাইফ্রুটসই ভরসা। রাত ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিতে হত শিবপ্রসাদকে। সেখানেও কোনও কার্ব ছিল না। স্যালাড আর সবজি সেদ্ধ খেতেন তিনি। বিকেলে কাঠবাদাম আর চা। শিবপ্রসগাদ মুড়ি খেতে ভীষণ ভালবাসতেন। কিন্তু এই চরিত্রের জন্য তাঁকে মুড়ি, বিস্কুট, ভাত সবকিছু ছাড়তে হয়।
শিবপ্রসাদের আগে কৌশানী মুখোপাধ্যায় ও আবির চট্টোপাধ্যায়ের লুকও সামনে এসেছে। ব্যারাকপুরের এসপি শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে দেখা যাবে আবিরকে। অপরদিকে কৌশানীর চরিত্রের নাম ঝিমলি। এই প্রথমবার তিনি 'উইন্ডোজ'-এর ছবিতে কাজ করছেন, তাও আবার একেবারে ডিগ্ল্যাম চরিত্রে। খোঁপায় পলাশ, কপালে চন্দন, নাকে নোলক টলিপাড়ার চেনা কৈশানীর থেকে একেবারে ছকভাঙ্গা অবতারে হাজির নায়িকা। তাঁর এই নতুন অবতার যে দর্শকদের মন কাড়বে তা বলাই বাহুল্য।