
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে অনেক সিনেমাই তৈরি হয়েছে। সেটা টলিউড ও বলিউড দুই জায়গাতেই। নেতাজির অন্তর্ধান এখনও এক বিরাট রহস্যের মতোই। আর সেই রহস্যের মাঝেই উত্তরপ্রদেশের এক রহস্যময় বাবা এই জল্পনাকে আরও উস্কে দেন। শোনা যায়, সেই সাধুর সঙ্গে নাকি নেতাজির বহু মিল পাওয়া গিয়েছে। এমনকী তাঁর মৃত্যুর পর সেই সাধুর ঘর থেকে এমন অনেক তথ্যই পাওয়া যায়, যেটা নাকি নেতাজির। ১৯৮৫ সালে মৃত্যু হয়েছিল গুমনামি বাবার। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় বরাবরই একটু অন্য ধরনের গল্প নিয়ে ছবি তৈরি করার চেষ্টা করেন। ২০১৯ সালে তাঁর পরিচালিত গুমনামি বাবা রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল। আর এই সিনেমার জন্য আইনি চিঠিও পেতে হয়েছিল পরিচালককে।
‘গুমনামি বাবা’ ছবিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে আইনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর এক ভক্ত দেশপ্রেমী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে দেশবাসীর কাছে ভুল বার্তা যাবে এই অভিযোগে। আইনি চিঠিতে পরিচালকের কাছে ছবির শ্যুটিং বন্ধের আবেদন করেছিলেন দেবব্রত রায় নামে ওই ব্যক্তি। ২০১৯ সালের অগাস্টে এই ছবির টিজার সামনে আসার পরই এই আইনি চিঠি আসে সৃজিতের কাছে। আইনি চিঠিতে মুখার্জি কমিশনের তদন্তের রিপোর্ট উল্লেখ করে বলা হয়েছিল যে গুমনামি বাবা নেতাজি নন তা মুখার্জি কমিশন আগেই জানিয়ে দিয়েছে। এই ছবি (গুমনামি বাবা) দেশবাসীর মধ্যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছবে। এই ছবির শ্যুটিং বন্ধ করতে হবে নচেৎ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও এই আইনি চিঠি পরিচালক সৃজিতকে কোনওভাবেই টলাতে পারেনি। প্রসঙ্গত, এর আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘গুমনামি বাবা’ আপত্তি তুলেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রপৌত্র চন্দ্র বসুও। তিনি টুইট করে পরিচালকের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের গুমনামি বাবা ছবিতে নেতাজির ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘গুমনামি বাবা’ একটু স্বতন্ত্র পথেই হাঁটার চেষ্টা করেছে বলেই পরিচালকের দাবি। কারণ, নেতাজিকে নিয়ে অনেক ছবি হলেও গুমনামি বাবার প্রসঙ্গ কোনও ছবিতেই আসেনি। কে এই গুমনামি বাবা, কী বা তাঁর পরিচয় এই সব নিয়েই কিছুটা স্বতন্ত্রতা ছিল এই ছবিতে। এছাড়া বিমান দুর্ঘটনার পরে কী হয়েছিল? নেতাজি বেঁচে ছিলেন কি না? এই সব প্রশ্নগুলোও উঠে এসেছিল ছবিতে। পরিচালকের কথায় এই ছবির অনেকটা অংশই মুখার্জি কমিশনের একটা রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। নেতাজির ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য প্রসেনজিৎকে ওজন বাড়াতে হয়েছিল অনেকটাই।
এমনকী নেতাজীর হাঁটা-চলা, কথা বলা ভিডিও দেখে দেখে প্রসেনজিৎকে আয়ত্ত করতে হয়েছিল। এমনকী মেক আপ করতেও প্রায় তিন ঘণ্টার কাছাকাছি সময় লাগত এবং তুলতেও প্রায় দু’ঘণ্টার কাছাকাছি সময় লেগে যেত বলে অভিনেতা জানিয়েছিলেন। নিজেকে নেতাজি রূপে গড়ে তুলতে প্রসেনজিতের তিনমাসের মতো সময় লেগেছিল।