scorecardresearch
 

Mahua Roychoudhury: ছেলেকে মদ খাওয়াতেন? একাধিক পুরুষাসক্তি? টলিউডে যেভাবে ফিরল মহুয়া বিতর্ক

Queen of Bengali cinema Mahua Roychowdhury: প্রয়াত অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে তাঁরই বন্ধু রত্না ঘোষালের মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় টলিউড। ইটিভি ভারত বাংলাকে দেওয়া মহুয়া রায়চৌধুরী ও তাঁর ছেলে গোলাকে নিয়ে ব্যক্তিগত মন্তব্য করেন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল৷ আর সেই সব মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা চলছে।

Advertisement
ছেলেকে মদ খাওয়াতেন? একাধিক পুরুষাসক্তি? টলিউডে যেভাবে ফিরল মহুয়া বিতর্ক ছেলেকে মদ খাওয়াতেন? একাধিক পুরুষাসক্তি? টলিউডে যেভাবে ফিরল মহুয়া বিতর্ক
হাইলাইটস
  • মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে তাঁরই বন্ধু রত্না ঘোষালের মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় টলিউড
  • রত্না দাবি করেছেন তাঁর বন্ধু মহুয়া নাকি খুব মদ্যপান করতেন

Queen of Bengali cinema Mahua Roychowdhury: প্রয়াত অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে তাঁরই বন্ধু রত্না ঘোষালের মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় টলিউড। ইটিভি ভারত বাংলাকে দেওয়া মহুয়া রায়চৌধুরী ও তাঁর ছেলে গোলাকে নিয়ে ব্যক্তিগত মন্তব্য করেন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল৷ আর সেই সব মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা চলছে। কেউ কেউ রত্না ঘোষালের সমালোচনা করেছেন। রত্না দাবি করেছেন তাঁর বন্ধু মহুয়া নাকি খুব মদ্যপান করতেন। শুধু তাই নয় ২ বছরের ছেলে গোলার মুখেও নাকি চামচ দিয়ে মদ ঢেলে দিতেন।

বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই মহুয়া রায়চৌধুরী সম্পর্কে খুব একটা জানেন না। টিভি-তে পুরনো সিনেমাতে তাঁর অভিনয় দেখলেও মহুয়া সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের জ্ঞান খুব একটা নেই বলেই মনে করা হয়। মহুয়া রায়চৌধুরীকে 'বাংলা সিনেমার রানি' বলা হত এক সময়। ১৯৭৩ সালে তরুণ মজুমদার পরিচালিত 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' সিনেমায় তিনি প্রথম অভিনয় করেন। তাঁর আসল নাম ছিল শিপ্রা রায়চৌধুরী। পরিচালক তরুণ মজুমদার তাঁর নাম দেন 'মহুয়া'।  বলা যেতে পারে তরুণ মজুমদারই মহুয়াকে আবিষ্কার করেন। তিনি ফিল্মফেয়ার-সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। 'দাদার কীর্তি' তে অভিনয়ের জন্য তিনি আঞ্চলিক চলচ্চিত্রে ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। ১৯৮৭ সালে ৫ তম দামেস্ক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আদমি অর আওরাত (১৯৮৪) চলচ্চিত্রে তাঁর ভূমিকার জন্য তাঁকে মরণোত্তর শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার দেওয়া হয়।

Mahua Roy Choudhury: পুড়ে মারা গেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী, দুর্ঘটনা না  ষড়যন্ত্র; আজও রহস্য - mahua roy choudhurys death is still a big mystery of  tollywood entertainment news bengali actress ...

১৯৮৫ সালের ২২ জুলাই মহুয়া মারা যান। ১০ দিন হাসপাতালে থাকার পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ আজও একটি রহস্য হিসেবে রয়ে গিয়েছে। মৃত্যুর আগে পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে মহুয়া জানিয়েছিলেন যে স্টোভ বিস্ফোরণ করেই তাঁর গায়ে আগুন লেগেছিল। একই কথা বলেছিলেন তাঁর স্বামী তিলক চক্রবর্তীও।

Advertisement

মৃত্যুর আগে মহুয়া প্রায় ১৫টি সিনেমায় কাজ করছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তার অনেক ছবি মুক্তি পায় যেমন অনুরাগের ছোঁয়া , প্রেম ও পাপ, অভিমান , আশীর্বাদ, কেনরাম বেচারাম, আবীর ইত্যাদি। ১৯৮৩ সালে মহুয়া অভিনীত 'লাল গোলাপ' এবং তার আগের বছর 'শত্রু' বাংলা সিনেমাকে লাভের মুখ দেখিয়েছিল। প্রায় 90 লাখ রুপি আয় করেছিলেন।

তাঁর স্বামী তিলক চক্রবর্তীর বিবৃতি অনুসারে, মহুয়া ফিল্ম ডিরেক্টর অঞ্জন চৌধুরীর (শত্রুর নির্মাতা) বাড়িতে পার্টি করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরেও (১২-১৩ জুলাই রাত) আসেন। তিলক দাবি করেন, স্টোভ জ্বালানোর সময় হঠাৎ তা ফেটে যায়, আর মহুয়ার গায়ে আগুন লেগে যায়। যদিও পুলিশ পরে অক্ষত অবস্থায় স্টোভটি উদ্ধার করেছিল। সেখানে কেরোসিন তেলের এক ফোঁটাও পাওয়া যায়নি। অথচ কলকাতা মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জরুরি ওয়ার্ডের ডাক্তাররা দাবি করেছিলেন যে হাসপাতালে আনার পরে মহুয়ার গা থেকে কেরোসিনের গন্ধ পেয়েছিলেন। পরে মহুয়াও দাবি করেছিলেন যে তাঁর গায়ে আগুন দুর্ঘটনাবশত লেগে গিয়েছিল। আর তারপরেই সিআইডি ১৮ জুলাই এই কেসের তদন্ত বন্ধ করে দেয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, মহুয়া কোনও বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করেননি।

মহুয়া বললেন, “আমি ভাল নেই। তুমি এসে আমাকে নিয়ে যাও”

কিন্তু পরে রাজ্য পুলিশ মহুয়ার মৃত্যুর পরপরই কেসের তদন্ত আবারও শুরু করে। তারা তিলক চক্রবর্তী ও মহুয়ার বাবা নীলাঞ্জন চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্তে জানা যায়, স্বামী ও বাবার সঙ্গে মহুয়ার একাধিক জয়েন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। তার মধ্যে একটি দুর্ঘটনার চারদিন আগে বন্ধ করা হয়। পুলিশ এটাও জানতে পারে যে মহুয়া এবং তিলক সেই সন্ধ্যায় প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করেছিলেন। বাড়িতে আসার পরে নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী, সন্তান গোলা ও দুই পরিচারিকার উপস্থিতিতেই তিলক ও মহুয়ার মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে রান্নাঘরের বাসপত্র ছোড়াছুড়ি পর্যন্ত হয় তিলক ও মহুয়ার মধ্যে।

ময়নাতদন্তে মহুয়ার চোখের নীচে এবং পিঠে হেমাটোমার চিহ্ন পাওয়া যায়। যা ইঙ্গিত করে যে তাঁকে খারাপভাবে আঘাত করা হয়েছিল। তিলকের গোড়ালি খারাপভাবে মচকে গিয়েছিল। স্ত্রীকে উদ্ধার করার চেষ্টা করার সময় পেয়েছিলেন পা মচকে গিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন তিলক। পুলিশ আরও বলেছিল যে তারা মহুয়ার ব্যক্তিগত জীবনে হতাশা এবং মদ্যপানের একটি দীর্ঘস্থায়ী চক্রের প্রমাণও পেয়েছিল।

মহুয়া রায় চৌধুরীর মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি ষড়যন্ত্র, ঠিক কী ঘটেছিল সেই  অভিশপ্ত রাতে

এছাড়াও নীলাঞ্জন সম্পূর্ণরূপে তাঁর মেয়ের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং স্ত্রীকে দমদমের বাড়িতে রেখেছিলেন। তিলক শিশু শিল্পী হিসাবে জীবন শুরু করেছিলেন। পরে তিনি ব্যাঙ্কে চাকরি পান। দাম্পত্যের প্রথমে দারুণ সুখের কাটে তাঁদের। এরপরে গোলা ওরফে তমাল চক্রবর্তীর জন্ম হয়। ছেলেকে খুব ভালবাসতেন মহুয়া। কিন্তু কাজের চাপের কারণে স্বামী-সন্তানকে সময় দিতে পারতেন না। অনেকেই দাবি করেন, স্বামী ছাড়াও একাধিক পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল মহুয়ার। আর তাই নিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সন্দেহ বাড়তে থাকে তিলকের। সিআইডি আধিকারিকরা আরও জানতে পেরেছিলেন যে মহুয়া এর আগে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

Actress Mysterious Death: বাংলার চোখের মণি, একরাতে গায়ে হঠাৎ আগুন,  রহস্যজনক 'দুর্ঘটনা'য় ২৭-এই সব শেষ! তাপস-নায়িকার করুণ পরিণতি Mysterious  death of Bengali Actress who ...

মহুয়ার কাছে মহানায়িকা কিংবদন্তি সুচিত্রা সেনের মতো গ্ল্যামার ছিল না বা সত্যজিৎ রায়ের নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রতিভা ছিল না। তবে তিনি সম্ভবত তাঁদের সবার চেয়ে ভাগ্যবান ছিলেন। কারণ তিনি তাঁর নিখুঁত অভিনয়ের জন্য দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছিলেন।

Advertisement