যুগের অবসান, প্রয়াত প্রবীণ পরিচালক তরুণ মজুমদার

থেমে গেল যুদ্ধ। কাজে এল না চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা। ৯১ বছর বয়সে হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar). তাঁর প্রয়াণে শিল্পী মহলে গভীর শোকের ছায়া। তরুণের সঙ্গেই চলচ্চিত্রের একটা যুগের অবসান হল।

Advertisement
যুগের অবসান, প্রয়াত প্রবীণ পরিচালক তরুণ মজুমদারতরুণ মজুমদার

থেমে গেল যুদ্ধ। কাজে এল না চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা। ৯১ বছর বয়সে হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar). তাঁর প্রয়াণে শিল্পী মহলে গভীর শোকের ছায়া। তরুণের সঙ্গেই চলচ্চিত্রের একটা যুগের অবসান হল।

গত ২২ বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তরুণ মজুমদার। এছাড়াও বর্ষীয়ান পরিচালকের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ও ডায়াবিটিস রোগও ছিল। একাধিক জটিলতা নিয়েই SSKM-এ ভর্তি করা হয় তাঁকে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডু ও সৌমিত্র ঘোষের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। তবে অশক্ত শরীরে নিতে পারেননি চিকিৎসার ধকল। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন প্রবীণ 'তরুণ'।

মাঝে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতিতে সকলেই আশা প্রকাশ করেছিলেন, যে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে জিতে ফিরবেন পরিচালক। কিন্তু গত শনিবার হঠাৎই দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হয় তাঁর। রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। ডায়ালিসিসও করতে হয়। কিন্তু অশক্ত শরীর চিকিৎসার ধলক আর নিতে পারেনি।

পরিচালকের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ
পশ্চিমবঙ্গ সরকার
নবান্ন

স্মারক সংখ্যা: ১২৬/আইসিএ/এনবি
তারিখ: ৪/৭/২০২২

বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স  হয়েছিল ৯১ বছর। 

ভিন্নধারার রুচিসম্মত সামাজিক চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ মজুমদার উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে গেছেন। তাঁর ছবিতে রবীন্দ্রসংগীতের প্রয়োগ দর্শককে আবিষ্ট করে রাখে। তরুণ মজুমদার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র , বালিকা বধূ,  শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, ফুলেশ্বরী, দাদার কীর্তি, ভালবাসা ভালবাসা, সংসার সীমান্তে, গণদেবতা, শহর  থেকে দূরে, পথভোলা, চাঁদের বাড়ি, আলো ইত্যাদি উল্লেখের দাবী রাখে।

তিনি পদ্মশ্রী, জাতীয় পুরস্কার, বিএফজেএ পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।

তাঁর প্রয়াণ চলচ্চিত্র জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

আমি তরুণ মজুমদারের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক  সমবেদনা জানাচ্ছি।
                  

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কেমিস্ট্রির ছাত্র হলেও শুরু থেকেই ফিল্মমেকিং-এর উপর তীব্র আকর্ষণ ছিল তরুণ মজুমদারের। শচীন মুখোপাধ্যায় এবং দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলে ‘যাত্রিক’ নামে দল তৈরি করে চলচ্চিত্র পরিচালনার কাজ শুরু করেন তরুণ মজুমদার। এই দলের প্রথম ছবি চাওয়া পাওয়া। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন উত্তম-সুচিত্রা জুটি। ‘কাঁচের স্বর্গ’ (১৯৬২) ছবির জন্য প্রথমবার জাতীয় পুরস্কার পান পরিচালক। এর পর পলাতক, নিমন্ত্রণ, সংসার সীমান্তে, দাদার কীর্তি, শ্রীমান পৃথ্বীরাজের মতো বহুল প্রশংসিত ছবি পরিচালনা করেছেন তরুণ মজুমদার।

চারটি জাতীয় পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। সাতটি BFJA এবং পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৯০ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। 'ভালোবাসার বাড়ি' তরুণ মজুমদার পরিচালিত শেষ ছবি। যেটি ২০১৮ সালে মুক্তি পায়।

 

POST A COMMENT
Advertisement