
তিনি টলিউডের মেগাস্টার। সেই সঙ্গে এই মুহূর্তের প্রথম সারির প্রযোজকদের মধ্যে একজন। আবার পশ্চিমবঙ্গের ঘটালের সাংসদ। তবুও তাঁকে 'মাটির মানুষ' বলেই আখ্যা দেন অনুগামী থেকে টলিপাড়ার অন্যান্য তারকারা। কাজের ব্যাপারে কোনও আপস করতে নারাজ তিনি। তবে পরিবারের জন্যেও ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বের করেন।
ইন্ডাস্ট্রিতে ২০ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন। টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জার্নিটা সহজ ছিল না। প্রত্যাখ্যান পেয়েছেন বহুবার। কটূক্তিও কম শুনতে হয়নি। এমনকি প্রশ্ন উঠেছে তাঁর কথা বলার ভঙ্গী, উচ্চারণ, অভিনয় দক্ষতা নিয়েও। তবু হার মানেননি। উল্টে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ট্রোলারদের দিকেই। আজ সেই নিন্দুকদের অনেকের মুখে শোনা যায়, 'শিরায় শিরায় রক্ত, দেবদা'র ভক্ত'। কথা হচ্ছে দেবকে (Dev) নিয়ে। প্রতি ছবির আগে নিত্য নতুন প্রচার কৌশল কাজে লাগিয়ে, সাফল্যের শিখরে ওঠেন টলিউডের 'রাজার রাজা'।
আরও পড়ুন: জল্পনাই সত্যি! সৃজিতের ছবিতে সিরিয়ালের ফুলকি, কোন চরিত্রে দিব্যাণী?
'খাদান'-র বেঙ্গল ট্যুর, 'ধুমকেতু'-র 'দেশু' রসায়ন হিট। 'রঘু ডাকাত'-র মুক্তি একেবারে দোর গোড়ায়। এই ছবির জন্যেও অন্যরকম প্রোমোশন স্ট্র্যাটেজি করেছেন দেব। আগেই জানিয়েছিলেন, কোনও সংবাদমাধ্যমের সামনে পরিচালক, প্রযোজক বা অভিনেতাদের কেউই বিশেষভাবে মুখ খুলবেন না। উল্টে জেলায় জেলায় মানুষের একেবারে কাছে পৌঁছাবেন তাঁরা। সেই কথা মতোই বেঙ্গল ট্যুর করে 'রঘু ডাকাত'-র টিম। এরপর বড় চমক মেলে এই ছবির ট্রেলার লঞ্চেও।
নেতাজি ইনডোর স্ট্রেডিয়ামে আয়োজন হয়েছিল 'রঘু ডাকাত'-র ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠান। সেখানে বিপুল সংখ্যক অনুগামী- দর্শক ছাড়াও হাজির ছিলেন টলিউডের তাবড় তারকারা। একই মঞ্চে ইন্ডাস্ট্রিতে দেবের দুই দশক পার হওয়ার উদযাপনও হয়েছে। কোয়েল, নুসরত, পূজা, সায়ন্তিকা সহ দেবের ছবির নায়িকাদের সঙ্গে হিট গানে পারফর্ম করলেন অভিনেতা। পারফর্ম করেছেন পরিচালকেরাও। এমনকি হাজির ছিলেন এই মুহূর্তে দেবের প্রতিদ্বন্দ্বী টিম। 'দেবী চৌধুরানী'-র শ্রাবন্তি ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও সামিল হয়েছিলেন এদিন। পর্দার রঘু ডাকাতের সঙ্গে মঞ্চ মাতিয়েছেন দেবী চৌধুরানী।
আরও পড়ুন: ২০ বছরের জার্নি! প্রথম পোর্টফোলিও শ্যুটের ছবি শেয়ার করে আবেগপ্রবণ দেব
এদিকে দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি নাকি ইতিমধ্যেই টলিউডে 'মাফিয়া কার্ড' খেলা শুরু করেছেন। আসলে নাম না করেই সম্প্রতি শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পত্নী তথা চিত্রনাট্যকার জিনিয়া সেন দেবকে একহাত নেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিনেমা হল এবং শো-টাইম পাওয়ার জন্য তিনি নাকি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দেব নাকি নিজের ছবির জন্য বেশি সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহ এবং শো-টাইম দখল করেন।
এই প্রসঙ্গে, মজা করে এদিন সঞ্চালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় দেবের দিকে প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দেন। পরিচালক জিজ্ঞেস করেন, তিনি ক্রেডিট না ডেবিট না 'মাফিয়া' কার্ড বেশি ব্যবহার করছেন? উত্তরে দেব বলেন, "যার নাম মানুষের মনে থাকে, মানুষের প্রার্থনায় থাকে, যাকে লোকে আশীর্বাদ করে, যার স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য হাজার হাজার লোক আসে, তাঁর ক্রেডিট কার্ড ডেবিট কার্ড বা মাফিয়া কার্ড কোনও কার্ডই লাগে না।"
আরও পড়ুন: নেটফ্লিক্সের সিরিজ পরিচালনায় উজান, ছেলের সাফল্যে আগেবপ্রবণ কৌশিক
অভিনেতা বলেন, "মৃত্যুর পর মানুষ স্বীকৃতি পায়। আমার মা-বাবার পুণ্যের ফল আমি ভোগ করছি। বেঁচে থাকতেই আমার পেশা জীবনের উদযাপন হচ্ছে। আমার ছবির ট্রেলার অনুরাগীরা টিকিট কেটে দেখছেন। যাঁর পাশে জনতা জনার্দন তাঁকে কেন 'মাফিয়া' কার্ড খেলতে হবে? আমি যা করি হৃদয় দিয়ে করি। ভালোবাসা পেলে ভালোবাসা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করি। আমায় 'মাফিয়া' কার্ড খেলতে হয় না।" এরপরই নিজের জার্নি, খাটনি ও স্ট্রাগলের কথা বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মেগাস্টার।