বছর চারেক আগে শোনা যায় এবার রঘু ডাকাত রূপে সামনে আসবেন দেব। এতদিন ধরে অনুগামীরা অপেক্ষায় রয়েছেন কবে এই রূপে তাঁকে পর্দায় দেখা যাবে। বারবার বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে গিয়েছে বির শ্যুটিং। মাঝে শোনা গিয়েছিল নানা জট কেটে, ডিসেম্বর মাসে শুরু হবে ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ছবির শ্যুট। এসভিএফ ও দেব এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চার্সের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হবে এই ছবিটি। তবে এবার ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে গুঞ্জন, ফের বিপাকে দেবের ছবি। হঠাৎ কী হল?
বড়দিনে মুক্তি পাবে দেবের নতুন ছবি 'খাদান'। ফলে এই ছবির প্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন অভিনেতা। প্রথমে ঠিক ছিল, দেবকে ছাড়াই 'রঘু ডাকাত'-র শ্যুটিং শুরু হবে এবং 'খাদান'-র মুক্তির পর দেব শ্যুটিংয়ে যোগ দেবেন। সেই কথা মতো পুজোর আগে রাজ্যের বিভিন্ন লোকেশনে রেইকি সেরে ফেলেন ধ্রুব ও তাঁর টিম। তবে এখন টলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, বাজেট এবং ডেট সমস্যার জন্য ফের ছবির শ্যুটিং পিছিয়ে যেতে পারে।
ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে আলোচনা শোনা যাচ্ছে, বড় বাজেটের কথা ভেবেই, এই ছবিটি নিয়ে আর এগোতে চাইছে না প্রযোজনা সংস্থা। তবে ইন্ডাস্ট্রির অন্য সূত্রের দাবি, ছবিটি তৈরি হবে। এই মুহূর্তে দেবের ডেট পাওয়যাচ্ছে না বলেই, আলোচনা চলছে। সেই সঙ্গে এই ছবিতে যেহেতু বেশ কিছু আউটডোর লোকেশনে শ্যুটিং জরুরি, সেক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। সূত্রের দাবি, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ এই ছবির শ্যুটিং শুরু হতে পারে। যদিও সংবাদমাধ্যমকে ধ্রুব বলেন, 'রঘু ডাকাত' বড় মাস ছবি। সেজন্যেই ছবিটির প্রস্তুতিতে এতটা সময় লাগছে।
অষ্টাদশ শতাব্দীর সময়কালে বাংলার সাধারণ মানুষের নিপীড়ন ও অবিচারের বিরুদ্ধে 'মসিহা' হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রঘু ডাকাত। 'লার্জার দ্যান লাইফ' এই কাল্পনিক গল্পের নায়ক রঘু আজও বাঙালিদের মনে বেঁচে আছেন। এত গুরুত্বপূর্ণ একটা চরিত্র, তাই সেরা অভিনয় দক্ষতাটুকু দিয়েই নিজেকে উজার করে দেবেন দেব। এমনটাই আশা পর্দার নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী- দেবের। 'গোলন্দাজ' -এর চূড়ান্ত বক্স অফিস সাফল্যের ফর ফের জুটিতে কাজ করবেন ধ্রুব -দেব। বলাই বাহুল্য দর্শকদের প্রত্যাশাও থাকবে তুঙ্গে।
মা কালীর সঙ্গে রঘু ডাকাতের নাম বার বার উঠে আসে। কারণ তিনি ছিলেন কালীর একনিষ্ঠ উপাসক। এমনকী ডাকাতি করতে বেড়ানোর আগেও কালিকার পুজোই করতেন তিনি। এই রঘু ডাকাতকে ঘিরে রয়েছে নানা জল্পনা, গল্পকথা। বলা ভাল তাঁকে নিয়ে বাঙালিদের কৌতূহলের শেষ নেই। এখন যেন তিনি 'রহস্য'হয়েই রয়েছেন বাঙালি মননে। শোনা যায়, হুগলি জেলার মগরায় বাসুদেবপুর গ্রামে এক সময় প্রতিষ্ঠিত ছিল এক ডাকাত কালী মন্দির। যা মূলত রঘু ডকাতের মন্দির নামেই পরিচিত।
প্রচলিত কথা অনুযায়ী, ইংরেজরাও ভয় পেতেন এই রঘুকে। অত্যাচারী জমিদারদের থেকে লুথ করে আনা ধন -সম্পদ তিনি মিলিয়ে দিতেন গরীবদের মধ্যে। তবে শুধু হুগলী না, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ সহ আরও একাধিক জায়গায় রঘু ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরের কথা শোনা যায়। হাতেনাতে প্রমাণ না মিললেও, অনন্ত লোক মুখে শুনে যুগ যুগ ধরে এটাই বিশ্বাস করা হয় যে বাস্তবে তিনি ছিলেন।