
পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)মহাপঞ্চমীর দিন মুক্তি পেয়েছে এসভিএফ (SVF)- প্রযোজিত ও ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় (Dhrubo Banerjee) পরিচালিত ছবি 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' (Karnasubarner Guptodhon)। 'গুপ্তধন' ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় ছবি নিয়ে বড় পর্দায় ফিরলেন সোনা দা, আবির ও ঝিনুক। এই ছবিতেও মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন আবির চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তী ও ইশা সাহা। এছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন সৌরভ দাস। ছবির খুঁটিনাটি থেকে পুজোর প্ল্যান নিয়ে আজতক বাংলার সঙ্গে এক্সক্লুসিভ আড্ডা দিলেন ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজতক বাংলা: কেমন আছেন?
ধ্রুব: খুব ভাল আছি।
প্রশ্ন: 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' মুক্তির আগে প্রচুর প্রচার করেছেন, স্কুলে- কলেজে- ভিন্ন স্থানে...
ধ্রুব: এই ছবিটা আমি মূলত ছোটদের জন্যই বানাই। তাই ওদের কাছে পৌঁছানো খুব দরকার। গিয়ে বুঝলাম সাংঘাতিক উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষা করছে সকলে। আমার মনে হয় না এরকম প্রতিক্রিয়া খুব বেশি দেখা যায়।
প্রশ্ন: 'গুপ্তধন' ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় ছবি! প্রথম দুটি সফল, তাই এবার দায়িত্ব কি অনেকটা বেশি?  
ধ্রুব: আমি একদমই এভাবে ভাবি না। এটা দায়িত্ব না, ভালোবাসার জায়গা। আমি কাজটা করতে ভালোবাসি। তাই শেষ পর্যন্ত সেটা তৃতীয় হোক কিংবা দশম, কাজটা ভালোবাসলে সেটা ভালোবাসার জায়গাতেই থাকবে। প্রতিবারই যদি আমি মজা পাই কাজটা করে, আমার ধারণা দর্শকেরাও মজা পাবেন। তবে এবার এই মজাটা একেবারে অন্য মাত্রায় রয়েছে।

প্রশ্ন: এবার ছবিটা কীভাবে সাজিয়েছেন?
ধ্রুব: একটা মজার জিনিস হল, যে কোনও বড় ফ্র্যাঞ্চাইজির মূল বিষয় এক থাকে বলেই ওটা আমাদের এত ভাল লাগে। সেটা বদলে গেলে, একেবারেই ভাল লাগবে না। যেটা নতুন সেটা হল, এবারের গুপ্তধন কোন জায়গায় রয়েছে, সেটা খোঁজার পদ্ধতি কী হবে ইত্যাদি। সোনাদা- আবির-ঝিনুককে দর্শক যেভাবে দেখে অভ্যস্ত, এবারও ঠিক সেটাই পাবে। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার অনেকটা বেড়ে গেছে।
প্রশ্ন: আবির চট্টোপাধ্যায়কে সম্প্রতি ব্যোমকেশ চরিত্রে দর্শক দেখেছেন, সোনাদার 'আইডেন্টিটি ক্রাইসিস' হবে না?
ধ্রুব: একেবারেই না। সোনাদার একটা পজিটিভ দিক হল, এই চরিত্রটা আমাদের পরিচিত কোনও বক্সের মধ্যেই পড়ে না। সোনাদা ডিটেকটিভ বা ট্রেজার হান্টারের মধ্যে কোনওটাই না। সে এমন একজন সাধারণ মানুষ, যে বাইরে ঘুরতে বেড়িয়ে এমন একটা কিছুর মধ্যে পড়ে যায়, যেটা ঘটনাচক্রে তাকে একটা গুপ্তধনের দিকে নিয়ে যায়। সোনাদা নিতান্তই একজন ইতিহাসের প্রফেসর যে, ঘুরতে বেড়িয়ে গুপ্তধনের সূত্র পায় এবং সেই সূত্র ধরে তা খোঁজ করে।
প্রশ্ন: পঞ্চমীর দিনই মুক্তি পাচ্ছে আরও বেশ কয়েকটি ছবি। প্রতিযোগিতা কি একটু বেশি কঠিন এবার?  
ধ্রুব: 'গুপ্তধন' ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের দুটো গল্প গরমের ছুটিতে এসেছিল। এবার আনা হয়নি কারণ তখন কোভিডমুক্ত পরিস্থিতি হয়নি একেবারে। সব স্কুল খোলেনি। এই ছবিটা যেহেতু ছোটরা বেশি দেখে, আমরা চাইনি তাদের এই ছবি দেখতে অসুবিধা হোক। এজন্যেই গরমের ছুটিতে নয়, পুজোয় আনা হল সোনাদাকে। পুজো মানে বাঙালির কাছে সেলিব্রেশন। 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' ছবি হিসাবে এখন একটা সেলিব্রেশনে পরিণত হয়েছে এবং সেভাবেই ছবিটা বানানো হয়েছে। দর্শক যখন এই ছবি পুজোয় দেখবে, তখন মনে হবে এটা ছাড়া পুজোয় আর কী দেখব? আমি গল্পটা এমন ভাবেই বেঁধেছি, যেন এটা ১০০ শতাংশ পুজোয় দেখার ছবি হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে বলব, পুজোয় মানুষ আনন্দ পেতে চায়। তাই যে কটা ছবি দেখে তারা আনন্দ পাবে, সেই সবকটা ছবিই তারা দেখবে।

প্রশ্ন: বর্তমানে পুজোর সময় অনেকে না ঘুরে, ছবি দেখে রেস্তরাঁয় খেয়ে উদযাপন করতে চায়...
ধ্রুব: 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' একেবারে সেই ছবিটা! (হেসে) সবাই মিলে যাবো, প্রচণ্ড হুল্লোড় করব, ছবি দেখে খাওয়া- দাওয়া করব এবং এরপর ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে যাব।
প্রশ্ন: শ্যুটিংয়ে কতটা মজা করলেন, কাউকে বকতে হয়েছে? 
ধ্রুব: আমরা আসলে একসঙ্গে এতদিন ধরে কাজ করছি, পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছি। পুরুলিয়াতে সে সময় প্রায় ৪৫- ৪৬ ডিগ্রি গরম ছিল। কিন্তু কাজটার মধ্যে যখন মন একবার বসে যায়, সকলে যখন বুঝতে পারে কাজটা ভাল হচ্ছে, তখন আর কিছু মাথায় থাকে না। তখন মনে হয় সুন্দর করে করি, গরমটা কেউ মনে রাখবে না, সিনেমাটা মনে রাখবে। দিনে তিন ঘণ্টা করে ঘুমিয়ে সব কলাকুশলীরা যেভাবে পরিশ্রম করে কাজ করেছে এতদিন ধরে... দর্শকের যখন এবার ছবিটা ভাল লাগবে, আমি জানি টিমের প্রত্যেকের ভাল লাগবে যে, তাদের খাটনিটা স্বার্থক হচ্ছে।
প্রশ্ন: পুজোয় কী প্ল্যান এবছর? 
ধ্রুব: আমি হলাম বাড়ির বড় ছেলে (হেসে)। কলেজ জীবন থেকে বাড়ির সকলকে ঠাকুর দেখতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমার। এবার ছবিও দেখাতে হবে, আবার ঘুরতেও নিয়ে যেতে হবে (জোড়ে হেসে)। এবছর ডবল দায়িত্ব!