![rahul arunodoy banerjee Mrityupathojatri](https://akm-img-a-in.tosshub.com/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202206/rahul_arunodoy_banerjee_mrityupathojatri.jpg?h=85fd7d43)
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত এক আসামি, যার হাতে আর বারো ঘণ্টা আছে। জীবনের এই শেষ কয়েক ঘণ্টা তার মানসিক স্থিতি ঠিক কীরকম হতে পারে? এই নিয়েই গল্প বেঁধেছেন সৌম্য সেনগুপ্ত (Saumya Sengupta)। ১০ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল 'মৃত্যুপথযাত্রী' (Mrityupathojatri)। এই ছবিতে সেই আসামির চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় (Rahul Banerjee)। আজতক বাংলার মুখোমুখি হয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন অভিনেতা।
আজতক বাংলা: একজন ফাঁসির আসামির চরিত্র... কতটা কঠিন ছিল?
রাহুল: শুধুমাত্র আসামি বলেই না, এই ছবিটার সম্পূর্ণটা জুড়ে আমি। ৮০ মিনিটের মধ্যে ৮০ মিনিটই আমি আছি বলে, চাপ, তাগিদ এবং চ্যালেঞ্জ সবটাই বেশি ছিল। বেশ খাটতে হয়েছে।
প্রশ্ন: সেক্ষেত্রে দায়িত্বও তো অনেকটা বেশি?
রাহুল: দায়িত্ব সত্যি অনেকটা বেশি ছিল। চেষ্টা করেছি যতটা মনোযোগ দিয়ে কাজ করা যায়। এবার বাকিটা দর্শক বলবে।
প্রশ্ন: কোনও আক্ষেপ রয়েছে?
রাহুল: দুঃখজনক হচ্ছে আমরা সেভাবে হলই পাইনি। গোটা কলকাতায় শুধুমাত্র নজরুল তীর্থতে একটা শো পেয়েছি। সব মিলিয়ে ৬ টা হল পাওয়া গেছে শুনলাম।
প্রশ্ন: ছবির সবটা জুড়ে আপনি, অভিনেতা রাহুলের তৃপ্তি হয়েছে 'মৃত্যুপথযাত্রী'-তে কাজ করে?
রাহুল: খুব তৃপ্তি হয়েছে এবং সব সময় এরকম খাটনির চরিত্র পাওয়া যায় না। তাই এই খাটনিটাও উপভোগ করেছি।
প্রশ্ন: একজন মানুষের মানসিক রূপান্তর ফুটিয়ে তুলতে হয়েছে পর্দায়, আপনাকে কতটা মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?
রাহুল: ফ্লোরে যাওয়ার প্রায় ১৫ দিন আগে থেকে আমি একেবারে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম বাড়িতে। নিজের ঘরের বাইরে যেতাম না। আমার ঘরের বাইরে খাবার রাখা হত, খেয়ে বাইরে বাসনটা রেখে দিতাম। এছাড়া আমার পরিচালক কিছু স্টাডি মেটিরিয়াল দিয়েছিলেন। ফাঁসির আসামিদের নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করছেন উনি। এভাবেই এই চরিত্রে অভিনয় করেছি।
প্রশ্ন: আপনার কথা শুনে কোভিড আইশোলেশনের কথা মনে পড়ছে...
রাহুল: হ্যাঁ, আমারও করোনা হওয়ার পর এটা করতে কিছুটা সুবিধা হয়েছে।
প্রশ্ন: অন্য কোনও চরিত্র বা লোকেশন নেই এই ছবিতে, একঘেয়ে লাগেনি?
রাহুল: এটা তো এক ধরনের নয়। সে কখনও হাসছে, কখনও কাঁদছে, কখনও নিজের মনে গান গেয়ে ফেলছে, কখনও ক্ষমা চাইছে, কখনও রেগে যাচ্ছে... অনেক কিছু চলছে আসামির মনে সেই সময়। যেহেতু সে জানে আর বারো ঘণ্টা পরেই ফাঁসি হয়ে যাবে, অদ্ভুত এক মানসিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায় চরিত্রটা।
প্রশ্ন: মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখলেন?
রাহুল: না মৃত্যুকে আমি বরাবরই খুব কাছে থেকেই দেখেছি এবং মৃত্যু এমন একটা চেতনা যেটা আমাকে কখনই ছেড়ে যায় না। তবে হ্যাঁ এই কাজটা করতে গিয়ে আমার ডিপ্রেশন হয়ে গিয়েছিল।
প্রশ্ন: অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসতে কতটা সময় লাগল?
রাহুল: আমি মনোবিদের সাহায্য নিয়েছিলাম। কাউন্সিলিং করে তারপর ঠিক হয়েছি।
প্রশ্ন: ছবিতে বারবার 'মৃত্যু' আসছে... আপনি ভয় পান মৃত্যুকে?
রাহুল: আমি নিজের মৃত্যুর থেকেও প্রিয়জনের মৃত্যুকে ভয় পাই বেশি। তবে আগামীকাল ঘুম থেকে উঠে ভারতের একটা ক্রিকেট ম্যাচ আর দেখতে পাবো না বা, একটা নতুন ভাল সিনেমা দেখতে পাবো না, যখন এই ভাবনাটা আসে, সত্যি কথা বলতে তখন কিছুটা ভয় লাগে।
প্রশ্ন: 'মৃত্যুপথযাত্রী' কাজটা করে, অভিনেতা রাহুলের সঙ্গে কোন জিনিসটা থেকে যাবে?
রাহুল: ক্যামেরার সঙ্গে একটা নতুন করে প্রেম হল। যেহেতু কোনও লোকেশন বা সহ-অভিনেতার সাপোর্ট, এগুলো কোনও কিছুই ছিল না... আমি এবং একটা ক্যামেরা বসানো ছিল শুধু। ক্যামেরার সঙ্গে বন্ধুত্বটা যেন নতুন করে স্থাপন হল।
প্রশ্ন: অনেকটা ঝুঁকি থাকে বলেই কি এই ধরণের কাজ খুব একটা দেখা যায় না, বাংলা ছবিতে?
রাহুল: এটা নিঃসন্দেহে খুন ঝুঁকিপূর্ণ একটা কাজ। কিন্তু আমরা অত্যন্ত কম বাজেটে বানিয়েছি। তাই অনেকটা আশাবাদী।