করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এর মাঝেই নতুন আশঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছে Delta Plus variant কে ঘিরে। বিশ্বে তৃতীয় ঢেউ ছড়ানোর জন্য ডেল্টাকেই দায়ি করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর এর মাঝেই ডেল্টা নিয়ে সতর্কবাণী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) গলায়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতে প্রথম ধরা পড়ে এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি। Sars-Cov-2 এর একাধিক মিউটেশনের ফলে এই ভাইরাস প্রজাতি যেন আগের থেকেও শক্তিশালী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা গিয়েছে মুহুর্তের মধ্যেই বিশ্বের শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস প্রজাতিটি।
করোনাভাইরাসের থেকে এই মিউটেন্ট প্রজাতিটি ২ থেকে ৩ গুণ বেশি সংক্রমক। ভারত, ব্রিটেন, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফের হানা দিয়েছে এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি। ভারতে ৮০ শতাংশের বেশি নতুন সংক্রমণ হয়েছে এই ভ্যারিয়েন্টের জেরে। আগের ভ্যারিয়েন্ট আলফার থেকে এই ভ্যারিয়েন্টের ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা আছে।
২০১৯-এর শেষের দিকে প্রথম হানা দেয় করোনা ভাইরাস (Covid 19)। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই রূপ বদলাচ্ছে এই ভাইরাস। নিত্য নতুন তৈরি হওয়া ভাইরাসের স্ট্রেন (Strain of coronavirus) চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের। তবে এই সব স্ট্রেনের মধ্যে ডেল্টাই (Delta strain) যে আগামিদিনে সবথেকে শক্তিশালী হয়ে উঠতে চলেছে, সে ব্যাপারে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
ইতিমধ্যেই ইউকে, আমেরিকা বা সিঙ্গাপুরের মতো একাধিক দেশে পৌঁছে গিয়েছে ডেল্টা। সেই প্রসঙ্গ টেনে ড. ক্ষেত্রপাল সোমবার বলেন, ‘ ১০০টিরও বেশি দেশে পৌঁছে গিয়েছে ডেল্টা স্ট্রেন। এই স্ট্রেন যে ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে আগামিদিনে বিশ্ব জুড়ে সবথেকে ভয়ঙ্কর আকার ধরবে ডেল্টা।’ অন্যদিকে, আমেরিকার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্টনি ফৌসি বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বে করোনার সবথেকে শক্তিশালী স্ট্রেন এই ডেল্টা।
কেবল ডক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল নন, ডেল্টা প্রজাতির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আমেরিকার গবেষক ডক্তর অ্যান্টোনি ফাউসিও (Anthony Fauci)। তিনিও জানান, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ করোনা প্রজাতি হয়ে উঠবে ডেল্টা।
ndian SARS-CoV-2 Genomics Consortium (INSACOG) ডক্টর এনকে আরোরা জানিয়েছেন, আলফার চেয়ে ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণের হার ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি।
ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেপথ্যে ছিল Delta variant (B.1.617.2)। এরপরও এই ভাইরাসের মিউটেশন ঘটে। AY.1 এবং AY.2- যেখান থেকে উৎপত্তি ঘটে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের।
গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পান গবেষকরা। ভারতের করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য এই স্ট্রেনকেই দায়ী বলে মনে করা হয়। করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে অন্তত ৮০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে এই ডেল্টা স্ট্রেন দায়ী ছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। প্রথম মহারাষ্ট্রে এই স্ট্রেনের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে ক্রমশ উত্তর ও পশ্চিমের রাজ্যগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে এটি। সব থেকে প্রবেশ করে ভারতের মধ্য ও পূর্বের রাজ্যগুলিতে।