ভারতে করোনায় প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, নিজেদের একটি সমীক্ষায় এমনই অনুমান আমেরিকার গ্লোবাল সেন্টার ফর ডেভলপমেন্টের। যার জেরে ফের একবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, করোনায় মৃত্যুর সঠিক হিসেব কি তবে সত্যিই লুকিয়েছে সরকার? সমীক্ষায় সামিল প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম জানান, তাঁদের অনুমান অনুযায়ী সংখ্যাটা ৩০ থেকে ৫০ লক্ষর মধ্যে। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এতটাই দুর্বল যে মৃত্যুর সঠিক গণনাও হয়নি। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে জানা যাবে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা? অরবিন্দ সুব্যমণ্যম জানান, কোভিডে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা বের করা মুশকিল। সেক্ষেত্রে তাঁরা পৃথক তিনটি সূত্রকে বিবেচনা করে একটি অনুমানে পৌঁছেছেন বলে জানান তিনি।
সরকারের কি তবে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা উচিত? জবাবে অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম জানান, তাঁর মতে সরকারের কাছে যে তথ্য আছে তা প্রকাশ করা উচিত। আর তাতে যে শুধু আসল বিষয়টি জানা যাবে তাই নয়, কীভাবে এর সঙ্গে লড়াই করতে তাও বোঝা যাবে বলে মনে করেন তিনি। প্রাক্তন আর্থিক উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারের উচিত সমস্ত তথ্য জনগণের সামনে নিয়ে আসা। তাতে এক দেশ, এক সমাজ হিসেবে কীভাবে এই অতিমারীর সঙ্গে লড়াই করা যায় তা বুঝতে সুবিধা হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর সমস্ত দেশই এই অতিমারীর সঙ্গে সঠিকভাবে লড়াই করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভুল সবাই করেছে। কিন্তু তার অর্থ এটা নয়, যে তাদের থেকে শিখব না।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত দেশে ৪ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সমীক্ষা বলছে সংখ্যাটা ৩৪ থেকে ৪৯ লক্ষর মধ্যে। কিন্তু এতটা ফারাক কীভাবে? অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম জানাচ্ছেন, ইনফরমেশন সিস্টেম যতটা মজবুত হওয়া দরকার ততটা নয়। তারসঙ্গে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিও বলিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ এই দুই কারণেই সংখ্যায় এতটা পার্থক্য বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে জনস্বাস্থ্য তথ্য প্রকাশ্যে আনা দরকার, যাতে ক্ষতি কমান যায়। এতে ভবিষ্যতে সুবিধা হবে বলেই মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত আমেরিকার সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভলপমেন্ট নিজেদের সমীক্ষা ভারতে করোনার ফলে ৩৪ থেকে ৪৯ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করেছে। তাতে আরও বলা হয়েছে, প্রথম ঢেউ বেশি মারাত্মক ছিল। কিন্তু তাতে মৃত্যুর হার কম ছিল। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা হাজারে নয় লক্ষতে হয়েছে। এটাকে স্বাধীনতা ও দেশভাগের পর সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে।