করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কেউ বলছেন, ভ্যাকসিন লাগানোর পরও করোনা হচ্ছে, মানে কি? কেউ কেউ মনে করেন, এ সবই আনুষ্ঠানিকতা, যা হতে হবে, তা করোনা হয়ে যাবে। না জানি কত ভিত্তিহীন কথা এই সময় মানুষকে বিভ্রান্ত করছে! যদিও সত্য যে, ভ্যাকসিন জীবন বাঁচায়। আপনার যদি এখনও কোনও সন্দেহ থাকে, তাহলে ৯ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারির মধ্যে দিল্লিতে কোভিডের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন এমন লোকদের ডেটা পরীক্ষা করলেই এ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ক্ষতি হচ্ছিল পুরুষদের যৌনাঙ্গ, ভ্রূণের! বাতিল হল কোভিডের এই ওষুধ
হ্যাঁ, তথ্য দেখায় যে চার দিনে ভাইরাল সংক্রমণের কারণে মারা যাওয়া ৯৭ জনের মধ্যে মাত্র ৮ জন ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ পেয়েছেন। বাকি ৮৯ জনের অনেকে ভ্যাকসিনের একটি ডোজ পেয়েছিলেন, কারও আবার একটিও ডোজ নেওয়া হয়নি। মৃতদের মধ্যে, ১৯ জন করোনা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ পেয়েছিলেন এবং ৭০ জনের টিকা নেওয়াই হয়নি।
আরও পড়ুন: কেন দিল্লিতে কোভিডে মৃত্যু বাড়ছে? জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সাধারণত দেখা যায়, সম্পূর্ণ টিকা দেওয়ার দুই সপ্তাহ পর শরীরে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। যারা টিকা নেওয়ার পরেও করোনায় মারা গেছেন, তারা কবে টিকা পেয়েছেন, সে সম্পর্কে কোনও তথ্য দিল্লির সরকারি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: করোনা রুখতে সক্ষম গাঁজার দুটি উপাদান, তবে ধূমপান বিপজ্জনক!
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিডে মৃত ৯৭ জনের মধ্যে ৩৭ জনের সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পাওয়া গিয়েছে। গত ৯ থেকে ১২ জানুয়ারির মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন এই ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সরকারি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, দিল্লিতে করোনায় মৃত ৯৭ জনের অনেকে আগে থেকেই কিডনি, হার্ট বা লিভারের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। বাকিদের টিকার দুটি ডোজ নেওয়া হয়নি বা এদের মধ্যে কেউ কেউ একটিও ডোজ পাননি।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনে কাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি? জানালেন WHO প্রধান
দিল্লিতে করোনায় মৃত ৯৭ জনের অনেককে তাঁদের মেডিকেল ইমার্জেন্সির জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং ওই সময় তাঁদের রুটিন মাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও ধরা পড়ে। কোভিড পজেটিভ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তাঁদের করোনার টিকিৎসা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: COVID জানতে Self Test Kit-এর ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি কেন বিপজ্জনক?
AIIMS ট্রমা সেন্টারের প্রধান ডাঃ রাজেশ মালহোত্রা জানিয়েছেন যে, তিনিও একই ধরনের প্রবণতা দেখেছেন। তিনি বলেন, 'কোভিড সংক্রমণ এমন লোকদের জন্য একটি গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি করছে, যাঁরা আগে থেকেই কোনও গুরুতর রোগে ভুগছেন বা যাঁরা এখনও ভ্যাকসিন নেননি।
দিল্লি মেডিকেল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডাঃ অরুণ গুপ্তা জানান যে, এই ডেটা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে এই মহামারীর সময় অন্যান্য স্বাস্থ্য-সমস্যাগুলিও উপেক্ষা করা একেবারেই উচিত নয়। করোনা ছাড়াও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গত ৯ থেকে ১২ জানুয়ারির মধ্যে দিল্লির বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কোভিডে মৃত ৯৭ জনের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ডাঃ মালহোত্রা বলেন, “ভর্তি করার সময় মাত্র ১৬ জনের শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০-এর উপরে ছিল। এঁদের আর কোনও লক্ষণ ছিল না।”