কাঠ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে ফের তাক লাগিয়ে দিল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনদপ্তরের স্পেশাল ফোর্সের ১২ জন সদস্য। অসমে পাচার হওয়ার আগেই বর্ষায় ভয়ংকর সংকোশ নদীতে প্রায় ২০ কিমি রবারের বোটে ৮ শাল কাঠের লগ উদ্ধার করে নিয়ে আসলো দলটি। বনকর্মীদের অভিযানের খবর পেয়েই অসমের দিকে পালিয়ে যায় কাঠ মাফিয়ারা। পাশাপাশি মোট ৪ টি "ধরন" (বিশেষ ভাবে তৈরি মাটির গভীর গর্ত) অভিযানে নষ্ট করেছেন বনকর্মীরা।
গত ৭ দিনে গ্রেপ্তার হয়েছে ৩ জন কাঠ মাফিয়া। ভারত,ভুটান, অসম জাতীয়, আন্তর্জাতিক ট্রাই জংশন এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করেছে বনদপ্তর। উল্লেক্ষ্য,কাঠমাফিয়া, চোরাকারবারি দের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বনবিভাগ গুলির মধ্যে রেড অভিযানের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে উপরে রয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প।
তথ্য বলছে,মে মাস থেকে অগাস্ট মাস অবধি মাত্র ৪ মাসে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব ও পশ্চিম ডিভিশনে ৩৪০ টি রেড অভিযান করেছে বন দপ্তর।গ্রেপ্তার হয়েছিল ২০ জন। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব ডিভিশনের ডিএফডি হরিশ বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই জঙ্গল রক্ষায় ১২ জনের স্পেশাল ফোর্স তৈরি করেছি। সাঁতারে দক্ষ, বাছাই করা কর্মীদের রাখা হয়েছে।
এক্কেবারে অসম সীমান্তের বিত্তিবাড়ি এলাকায় শাল কাঠের লগ মজুত করা হয়েছিল। লগগুলিকে দুটি নদী পার করে আনা সম্ভব ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই নদীতে ২০ কিমি ভাসিয়ে ঘোলানি ঘাট অবদি আনতে হয়। আমরা অসম সীমান্ত, ট্রাই জংশন এলাকায় ৩ টি রিভার ক্যাম্প সক্রিয় করেছি।
পাশাপাশি বনদপ্তরের ৩ টি রেঞ্জ রেড অভিযান করছে। দুটি রাবার বোট সক্রিয় রয়েছে। উল্লেক্ষ্য, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব দিকে অসম সীমান্ত নির্দিষ্ট করেছে সংকোশ নদী। কুমারগ্রামের কাছে আছে ট্রাই জংশন। যেখানে ভারত,ভুটান,অসম মিলেছে একটি পয়েন্টে। অভিযোগ জঙ্গি সংগঠন হোক বা কাঠ মাফিয়া, অবৈধ কাজ করে সংকোশ পার করে সহজেই ভুটান অথবা অসমে পালিয়ে যাওয়া যায়।
দীর্ঘদিন ধরেই প্রক্রিয়াটি চলছে। অভিযোগ, কাঠ মাফিয়ারা একবার বাংলার সীমানা পার করে ফেললে বনকর্মী, পুলিশের কিছুই করার থাকে না।এদিকে, বনদপ্তরের চোখে ফাঁকি দিতে গভীর জঙ্গলে,এমনকি স্থানীয় বনবস্তিতেও ধরন তৈরি করা হয়।
জানা গিয়েছে, ১০ ফুট গভীর, লম্বা-চওড়া করে মাটিতে গর্ত করে ধরণ তৈরি করা হয়। উপর থেকে বিভিন্ন ভাবে ধরণ ঢেকে রাখা হয়। সহজেই ধরণের ভিতর কাঠের লগ এনে তা চেরাই করা যায়। আওয়াজ বের হয় না। মাটির গভীরে চোরাই কাঠ থাকায় বনকর্মীদের চোখেও ধুলো দেওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার কুমারগ্রামে আসাম সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় এমনই ৪ টি ধরণ নষ্ট করে বনদপ্তর। জানা গিয়েছে, অবৈধ কাঠের চোরা-কারবারে অসমের দিকেই মাফিয়ারা বেশি সক্রিয়।