হরিয়ানার সোনিপতে একটি মর্মান্তিক ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। যেখানে মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করায় বাবা এতটাই রেগে যান যে তিনি নিজের সন্তানকে খুন করলেন। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি, মেয়েকে হত্যা করে দেহ ফেলে দিলেন গঙনাহারে। তদন্তের পর অবশ্য পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে হাজতে ভরেছে।
এই মামলাটি রাই থানা এলাকার মুকিমপুর গ্রামের। মৃত্যুর আগে মেয়েটির একটি ভিডিও সামনে আসে, যাতে সে বলেছিল তাঁর মৃত্যু হলে বাবা, ভাই এবং বন্ধুরা এর জন্য দায়ী হবে।
এ ঘটনায় পুলিশ মেয়েটির বাবাকে গ্রেফতার করেছে। তার কথার পরেই পুলিশ গাঙনাহার থেকে দেহটির সন্ধান শুরু করে। মেয়েটির স্বামী তার বাবা বিজয়পাল ও আত্মীয়স্বজনসহ চারজনের বিরুদ্ধে অপহরণের রিপোর্ট দায়ের করেছিলেন। এতে তিনি বলেছিলেন যে দু'জনকে জন্মদিন উদযাপনের অজুহাতে ডাকা হয়েছিল। এর পরে থানার সামনে থেকে তাঁর স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়।
মুকিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মেয়েটি ২০২০ সালে পাড়ারি এক যুবককে প্রেম করে বিয়ে করেন। পরিবার রাজি না হওয়ায় বাড়ি থেকে পালিয়ে দুজনেই বিয়ে করেছিলেন। দুজনের বাড়িই গ্রামে কাছাকাছি ছিল এবং দুজনের গোত্রও এক। মেয়েটির পরিবার ছাড়াও আন্তিল খাপের লোকজনের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছিল। বিয়ের পর দম্পতি তাই আত্মগোপন করেছিল।
বিয়েতে নিয়ে ক্ষুব্ধ মেয়েটির পরিবার তাদের উভয়ের কাছে মিথ্যা বলেছিল যে এখন তারা এই বিয়েতে সম্মত হয়েছে । পাশাপাশি দুজনকেই পুরনো কথা ভুলে বাড়ি ফিরে আসতে বলে। তারপরে দুজনেই ফোনে পরিবারের সাথে কথা বলতে শুরু করে।
মেয়ের বাবা বিজয়পাল ৬ জুলাই কন্যাকে ডেকে বলেছিলেন যে ৭ জুলাই তার জন্মদিন। দুজনেই জন্মদিন উদযাপন করতে যাতে তাদের বাড়িতে আসে। প্রত্যেকে মিলে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করবে।
দুজনেই বিজয়পালের কথায় সতর্ক হয়ে যান ও ফোনে বাবাকে জানান যে তারা রাই থানার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। বিজয়পল এরপর ৬ জুলাই মেয়ে কণিকাকে গাড়ি করে বাড়ি নিয়ে যায়। মেয়েটির স্বামী বেদপ্রকাশের সামনেই গোটা বিষয়টি ঘটে।
দুই দিন কেটে যাওয়ার পরে, মেয়ের স্বামী বেদপ্রকাশ তার শ্বশুরকে ডেকে স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চায়। যার উত্তর বলা হয়েছিল যে সে এখনও ঘুমিয়ে আছে। পরের দিন যখন বেজপ্রাকাশ আবার ফোন করেছিল, তাকে জানানো হয়েছিল যে তার বউ পিসির সাথে আছে। দুদিন পর আবার ফোনেও একই উত্তর দেওয়া হয়। এতে বেদপ্রকাশ কিছুটা সন্দিহান হয়ে পড়েন এবং তিনি থানায় বিষয়টি জানান।
অভিযোগ রয়েছে যে থানায় অভিযোগ নথিভুক্ত করার পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর পরে ২০ জুলাই, বেদপ্রকাশ আবার থানায় গিয়ে তার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ড এবং অপহরণের সন্দেহ প্রকাশ করে। এ নিয়ে পুলিশ আবার তদন্ত শুরু করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মেয়েটির বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অপরাধ স্বীকার করে অভিযুক্ত বাবা জানায় যে গত ৬ জুলাই তিনি মেয়েকে থানার সামনে থেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে গাংনাহারে লাশ ফেলে দেন। সে তাকে গ্রামে আনেনি। এ ছাড়া অভিযুক্ত বাবা বলেন যে তার কৃতকর্মের জন্য তার কোনও অনুসোচনা নেই। কারণ আন্টিল খাপের দায়িত্বে নিযুক্ত ব্যক্তিরাও একই গোত্রে বিয়ের নিন্দা করেছেন।