ক্লাস থ্রি-র এক ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল স্কুলেরই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাও আবার স্কুলের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকা। অভিভাবকদের রোষের বিষয়টি মাথায় রেখে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়িতে ঘটেছে। অভিযুক্ত এক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ, পুণ্ডিবাড়ির একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেষ কয়েক মাস ধরে যৌন নির্যাতন চালাচ্ছিল। ওই ছাত্রীটি হঠাৎ করে স্কুলে যেতে অস্বীকার করে। কিছুতেই তাকে রাজি করানো যায়নি।পরিবারের লোকজন তাকে কারণ জিজ্ঞাসা করতে বারবার প্রশ্ন করতে থাকায়, ওই কিশোরী বিষয়টি জানান।
এরপরই মেয়েটির পরিবারের লোকজন শনিবার রাতে পুণ্ডিবাড়ি থানায় ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই ওই রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সুজিত দে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তবে যেহেতু স্কুলের ছাত্রী, ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকাজুড়ে। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই বিদ্যালয়ের অন্যান্য পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। শিশুটির বাবা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন বলে খবর। তার মা দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। ছেলে বড়, সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, মেয়ে পুণ্ডিবাড়ির ওই স্কুলেই পড়ে শুরু থেকে। কিন্তু কিছুদিন ধরে মেয়ে বিদ্যালয়ে যেতেই চায় না। এ নিয়ে তাঁকে অনেক বকাবকি করা হয়। বকা খেয়ে একদিন স্কুলে গেলেও পরদিন থেকে ফের না যাওয়ার কথা বলে। বারবার আপত্তি করায় ভাল করে চেপে ধরায় বিষয়টি খুলে বলে। বিদ্যালয়ের একটি নির্দিষ্ট ঘরে তাঁকে প্রায় দিনই ডেকে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন চালাত ওই শিক্ষক করে বলে মাকে জানায় সে। কাউকে যাতে সে না বলে তার জন্য তার জন্য হুমকিও দেয় অভিযুক্ত শিক্ষক।
চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন এক শিক্ষিকা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি শুধু ছাত্রীদের সঙ্গে নয় শিক্ষিকাদের সঙ্গেও এ ধরণের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নিজের বাড়িতেই স্কুল। তিনি নিজেই সেই স্কুলের মালিক ও প্রধান শিক্ষক। তাই তার ওপর কারও কথা বলার সাহস ছিল না। আর এই সুযোগকে কাজে এসব করত। এসব কারণেই সে তার স্কুলে পুরুষ শিক্ষক রাখত না। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।