সাদা স্করপিও গাড়ি। রাস্তার একধারে দাঁড়িয়ে। তাতে সামনের আসনে বসে মদ খাচ্ছেন ডিএসপি। রীতমতো ইউনিফর্ম পড়া। গাড়িতে সামনে লালবাতি। উপরে নীলবাতি। কোনও রকম পদাধিকারই যাতে মানুষের বুঝতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য সব রকম বন্দোবস্ত করা রয়েছে।
দিনের আলোয় মদ্যপান করেই বিপাকে
ডিএসপি দিনের আলোয়, এভাবে প্রকাশ্যে মদ খাচ্ছে এ ব্যাপারটি অস্বাভাবিক ঠেকে অনেকের কাছেই। বিষয়টি পুলিশ কমিশনারেটে জানানো হয়। তারপরই চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রকৃত পুলিশ কর্মীরা খোঁজ খবর করতে গিয়ে জানতে পারেন। ওই ব্যক্তি আসলে পুলিশই নয়। প্রতারণা ও তোলাবাজির জন্য পুলিশের মতো পোশাক ও গাড়ি ব্যবহার করছিল।
নকল ডিএসপি
চন্দননগর পুলিশ কমিশনার দ্রুত নকল ডিএসপিকে গ্রেপ্তার করে। সাদা রঙের স্করপিও গাড়িটি আটক করেছে।গাড়ির সামনে ও পিছনের কাচে "পশ্চিমবঙ্গ সরকার" লেখা স্টিকার রয়েছে। রয়েছে হুটার সহ, সামনের দিকে লাল বাতি এবং ছাদে নীল ফ্ল্যাশার। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অর্ণব ঘোষ বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। বিস্তারিত তথ্য জোগাড় হোক, তারপর জানানো যাবে।
গাড়িতে জমিয়ে মদ্যপান
চন্দননগর রানিঘাটের কাছে স্ট্র্যান্ড রোডে দাঁড়িয়ে ছিল গাড়িটি। পুলিশের একজন ডিএসপি হিসাবে ইউনিফর্ম গাড়ির অন্য দুই ব্যক্তির সাথে সামনের সিটে বসে আছে। মদ খাচ্ছে। সব জানালার কাচ বন্ধ ছিল। পুলিশ কমিশনার খবর পেয়ে অবিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং যাচাই করার সময়, দেখতে পান যে ইউনিফর্মে থাকা ব্যক্তি এক জন ভুয়ো পুলিশ। কোনও ডিএসপি নন।
সুয়োমোটো মামলা দায়ের পুলিশের
গাড়িতে অন্য আরও দুজনের সাথে মদ্যপান করছিল সে। পরে থানায় নিয়ে যাওয়া হলে অভিযুক্ত জেরায় স্বীকার করে যে সে ডিএসপি নয়। তার নাম সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। পুলিশ সুয়োমোটো অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা (নির্দিষ্ট মামলা) নেওয়া হচ্ছে।
আবার ভুয়ো ! অবাক জনতা
এ রাজ্যে কিসে ভুয়ো নেই, তা নিয়ে সন্দেহ এবার আরও দৃঢ় হচ্ছে। ভুয়ো আইএএস দিয়ে শুরু হয়েছিল। তারপর ভুয়ো ডাক্তার, আইপিএস, ভুয়ো বিডিও, ভুয়ো সরকারি অফিসার থেকে শুরু করে এবার রাজ্যে ধরা পড়ল ভুয়ো ডিএসপি। যা ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। হুগলির চন্দননগরে ভুয়ো ডিএসপি ধরা পড়ার ঘটনা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তেই হতবাক অনেকেই। অতি সাহসী হয়ে মদ্যপান করেই যে জালে ডিএসপি, সে ব্যাপারে নিশ্চিত সকলেই।