মধ্যযুগীর বর্বরতায় পাঁচ শিশুকে মার, কারেন্টের শক
কি বলবেন একে? অমানবিক না পৈশাচিক? নাকি মধ্যযুগীয় বর্বরতা? মোবাইল চোর সন্দেহে পাঁচটি শিশুকে তালিবানি অত্যাচারের মুখে পড়তে হল। শিশুদের দড়ি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে চাবুক দিয়ে এলোপাথারি মারা হল। এতেও শান্তি নেই। নির্যাতনকারী ব্যক্তি আরও কয়েকজন সঙ্গী-সাথীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের গায়ে ইলেকট্রিক শক দিয়ে তাদের শাস্তি দিল।
শিউরে উঠেছে দেশ
যা প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। যা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন এর তরফ থেকে ঘটনার তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মধ্যযুগীয় এই বর্বরতার ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরৈলিতে।
মোবাইল চুরির অভিযোগে অত্যাচার
বরৈলির বরাদরি থানার গঙ্গাপুর এলাকায় অবনীশ কুমার যাদব এর ডেয়ারি ফার্ম রয়েছে। কয়েকদিন আগেই তার ৩০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। কাউকে চুরি করতে দেখেনি ওই ব্যক্তি। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে এরপরে ওই ডেয়ারি মালিক প্রতিবেশী ওই পাঁচ বাচ্চাকে ধরে নিয়ে আসে। তারপর সবাইকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয়। তাকে সঙ্গ দেয় স্ত্রী ও পরিবারের অন্যরা। বাচ্চাদের অভিযোগ, তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে চাবুক দিয়ে মারা হয়েছে এবং ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের লোক পুলিশের মদতে উদ্ধার করে শিশুদের
ঘটনার খবর পেয়ে বাচ্চাদের পরিবারে লোকজন দ্রুত ডেয়ারি ফার্মে যায়। পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। এরপর পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত অবনীশের খপ্পর থেকে বাচ্চাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে এবং তাদের জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
চাবুক, লাথি, ইলেকট্রিক শক
ধাতস্ত হওয়ার পর বাচ্চারাই পুলিশকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে তারা। জানায় রাতে অবনেশ তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে বেঁধে মারধর শুরু করে। মোবাইল তারাই চুরি করেছে বলে অভিযোগ করতে থাকে। তারা মোবাইল নেয়নি বলে জানালেও তাদের কথা শোনা হয়নি। উল্টে তাদের খুঁটির সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধে। এরপর চাবুক নিয়ে আসে তারা। তাদের এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। পরে নিজেই মারতে মারতে হাঁপিয়ে গেলে ইলেকট্রিক তার নিয়ে এসে তাদের শক দেয়। পা দিয়ে জুতো পরা অবস্থায় তাদের লাথিও মারে বলে অভিযোগ। বাচ্চারা জল চাইলে তাদের তাও দেওয়া হয়নি।
মামলা দায়ের করে গ্রেফতারির প্রস্তুতি
এই ঘটনায় বারাদরি থানাতে অবনীশ যাদব তার স্ত্রী শাবানা, সঞ্জয় খন্ডেলওয়াল সহ ছজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বরৈলির পুলিশ সুপার রবীন্দ্র কুমার জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তল্লাশি শুরু হয়েছে। তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে।