ক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর থানার কৃষ্ণনগর বাজার এলাকায় এক আইসিডিএস কর্মীর উপর রাসায়নিক তরল ছিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত যুবকের নাম বাপি মাইতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ওই কর্মী কৃষ্ণনগর মধ্যপল্লী আইসিডিএস সেন্টারে কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বাপি মাইতি তাঁকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এরপর শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় যখন তিনি কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন অভিযুক্ত যুবক তাঁর উপর রাসায়নিক তরল ছিটিয়ে পালিয়ে যায়।
হামলার পর গুরুতর জখম হন ওই আইসিডিএস কর্মী। রাসায়নিক তরল তাঁর ত্বকে লেগে মারাত্মক ক্ষতি করে। স্থানীয়রা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাসায়নিকের প্রকৃতি নির্ধারণের জন্য পরীক্ষা চলছে।
ঘটনার পর সাগর থানায় অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই হামলার পেছনে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থাকতে পারে।
ভারতে অ্যাসিড হামলার ঘটনা দীর্ঘদিন ধরেই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত ব্যক্তিগত শত্রুতা, প্রতিশোধ কিংবা প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কারণেই এই ধরনের হামলা হয়।
জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (NCRB) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রতি বছর গড়ে ২০০-৩০০টি অ্যাসিড হামলার ঘটনা নথিভুক্ত হয়। বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক ভুক্তভোগী ভয়ে বা সামাজিক কারণে অভিযোগ জানান না।
এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। অনেকেই বলছেন, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আক্রান্ত আইসিডিএস কর্মীও অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অ্যাসিড হামলার বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও, বাস্তবে অপরাধীরা সহজেই মুক্তি পেয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, যথাযথ তদন্ত ও দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করাই একমাত্র সমাধান।
সংবাদদাতাঃ প্রসেনজিৎ সাহা