আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছরের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে এল এমার্জেন্সিতে ডিউটিতে থাকা ডাক্তারের বয়ান। ঘটনার রাতে অর্থাৎ ৮ অগাস্ট ডিউটিতে ছিলেন তাপস প্রামাণিক নামে এক চিকিৎসক। তাঁর দাবি, পরের দিন সকালে তিনি ঘটনার কথা জানতে পারেন। মৃতদেহ উদ্ধার থেকে ময়নাতন্ত নিয়ে একাধিক বিষয়ে অসঙ্গতি রয়েছে বলে তাঁর দাবি।
তাপস প্রামাণিক নামের ওই ডাক্তার জানান, ৮ অগাস্ট রাত নটা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত তাঁর ডিউটি ছিল। হাসপাতালে থাকাকালীন তিনি কিছুই জানতে পারেননি। বাড়ি যাওয়ার পর অফিসের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে প্রথম জানতে পারেন তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর। তিনি জানান, বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিটে বাড়ি ফিরে অফিসের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে রাতের মর্মান্তিক ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন। বলেন, 'আমি হাসপাতালে ফোন করার পর জানি, থার্ড ফ্লোরে এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও সকাল পর্যন্ত কেউ আমাকে এই ব্যাপারে খবর দেয়নি। বা আমার কাছে খবর আসেনি।'
তরুণীর মৃত্যু বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে হয়েছিল। এমনটাই ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা ছিল। তবে কলকাতার টালা থানার পুলিশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে মৃতদেহ মেলে সকাল ৯.৪৫ মিনিট নাগাদ। আবার সুপ্রিম কোর্টে যে হলফনামা পেশ করা হয়েছে, সেখানা দাবি করা হয়েছে সকাল ১০ টার দিকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়। যদি সেটাই হয় তাহলে ডেথ সার্টিফিকেটে কেন ১২.৪৫ লেখা ছিল? আর সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিট থেকে ১২ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অর্থাৎ এই ৩ ঘণ্টা কী হয়েছিল? এই বিষয়গুলো এখনও পরিষ্কার নয়।
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে উত্তাল দেশ। রাজ্যে দফায় দফায় আন্দোলন চলছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন কর্মসূচি হচ্ছে শহরে। গতকাল কলেজ স্ক্যয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করেন বাংলা সিনেমার কলাকুশীলবরা। ধর্মতলায় সারারাত বসেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মতো তারকারা। আবার আজ সোমবার রাজ্যজুড়ে ডিএ অফিস ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি। সেখানে লালবাজারের উদ্দেশে মিছিল করছেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। যত আন্দোলনের দিন গড়াচ্ছে ততই তা বড় আকার নিচ্ছেষ।
উল্লেখ্য, ৯ অগাস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হলে তরুণী ডাক্তারের মৃতদেহ পাওয়া যায়। অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়। রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এই ঘটনার পর রেসিডেন্ট ডাক্তারদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে যায়। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাইকোর্ট মামলা উঠলে তার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা গ্রহণ করে।