![শ্রদ্ধা খুনের চেয়েও ভয়ঙ্কর](https://akm-img-a-in.tosshub.com/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202303/whatsapp_image_2023-03-16_at_17.33.53.jpeg)
Mumbai Shivering Murder Case: মুম্বই থেকে একটি হাড় হিম ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে এক মেয়ে তাঁর মাকে শুধু খুন করেননি, খুন করার পরে তাঁর মায়ের দেহ টুকরো করে তা ঘরে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে কিছু টুকরো জলের ড্রামে, কিছু আলমারিতে লুকিয়ে রাখে ওই যুবতী। ওই ঘরেই মায়ের লাশ লুকিয়ে রেখে প্রায় তিন মাস সেখানেই ছিল, কিন্তু কেউ এ বিষয়ে ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। ঘটনা সামনে আসতেই শিউরে উঠেছেন গোটা দেশের মানুষ।
ফ্রিজ থেকে আলমারি পর্যন্ত লুকিয়ে থাকে দেহ
প্রথমে ফ্রিজ, এরপর বাক্স এবং এখন আলমারি। আলাদা আলাদা জায়গায় রাখা লাশের গল্প। মঙ্গলবার একটি গল্পের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে পুরনো ঘটনার গল্পগুলি। যখন মুম্বইয়ের একটি অভিজাত এলাকার পুলিশ আলমারিতে গুঁজে রাখা এই লাশ উদ্ধার করে। প্লাস্টিকের প্যাকেটে বন্ধ ছিল লাশ। মঙ্গলবার রাতে যখন লালবাগের একটি বাড়ি থেকে এই লাশের টুকরোগুলি উদ্ধার করা হয়, তখন আশপাশের লোকেরা বুঝতেও পারেনি আসলে এ রকম ঘটনা ঘটে গিয়েছে তাঁদের নাকের ডগায়। কোনও অভিজাত এলাকায় এত জনবহুল হওয়া সত্ত্বেও তার মধ্যে খুন এবং মানুষের লাশ টুকরো টুকরো করে রাখা এবং পুলিশের সাহায্যে লাশ বাইরে বের করতে হওয়া বিষয়টি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না এলাকার মানুষ।
আরও পড়ুনঃ আমি আপনার মেয়ের মতো,' ইনস্পেক্টর ও মহিলা SI-এর চ্যাট VIRAL
খুন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন সামনে আসছে
প্রথমবার এই খবর শোনার পরে কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি যে দিল্লির শ্রদ্ধা মার্ডার কেসের মত ঘটনা তাঁদের এলাকাতেও ঘটে গিয়েছে। এই ঘটনা কী সে রকমই কিছু? ওই লাশ কার? মৃত মহিলাকে খুন করেন কে? কীভাবে লাশ লুকানো হয়েছে, এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমনকী পুলিশ কীভাবে লাশ খুঁজে বের করল, সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।
বোনের নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর ভাই
আসলে মঙ্গলবার রাতে মুম্বাইয়ের কালাচৌকি পুলিশ স্টেশনে এক ব্যক্তি তাঁর বোনের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারী ব্যক্তির বয়স ৫৫ বছর এবং তাঁর বোন বীনা জৈন গত প্রায় তিন মাস থেকে তাঁকে একবারও ফোন করেননি বা তাঁর সঙ্গে কথা হয়নি। যেখানে এর আগে তারা প্রায়ই নিজেদের মধ্যে ফোনে কথা বলতেন।
অভিযোগে বলা হয় যে, বীনা কালাচৌকি থানা এলাকায় পেরু কম্পাউন্ডে ইব্রাহিম কাসেম বিল্ডিংয়ে ২৩ বছরের মেয়ে রিম্পলের সঙ্গে থাকেন। কিন্তু রিম্পলকেও ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়িতে গেলে তার সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে না। বরং যতবারই তিনি পরিবারের লোক বীণার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন, তাঁর মেয়ে রিম্পল আলাদা আলাদা বাহানা করে তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। কখনও তিনি বাড়িতে নেই, দেখা করতে পারবেন না। কখনও ঘুমোচ্ছেন, এরকম নানা রকম বাহানা করতে থাকেন, যা প্রায় তিন মাস ধরে শোনার পর তাঁরা থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন।
মহিলার ঘরে পৌঁছয় পুলিশ
অভিযোগকারী জানান যে তাঁর ছেলে নিজের পিসির সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবারও তাঁর বাড়িতে পৌঁছন। কিন্তু প্রত্যেকবারের মতো এই দিনও তার মেয়ে তাঁকে দরজা থেকেই ফিরিয়ে দেন এবং বলেন যে পিসি এখন ঘরে নেই। অভিযোগ পাওয়ার পরেই কালাচৌকি পুলিশ দ্রুত ওই মহিলাকে খুঁজতে তার বাড়িতে পৌঁছয়। পুলিশের একটি টিম রাতে বিনা জৈনের খোঁজে তাঁর বাড়িতে পৌঁছয়। কিন্তু যখনই তিনি দরজা নক করেন, বীণার মেয়ে রিম্পল মা ঘুমিয়ে আছেন বলে জানান। এই পরিস্থিতিতে পুলিশকর্মীরা বাড়িতে জোর করে ঘরে ঢুকে যান। পুলিশ দরজা খুলতেই ঘর থেকে পচা দুর্গন্ধ পেতে শুরু করে এবং পুলিশের সন্দেহ গাঢ় হয়। এরপরে পুলিশ কর্মীরা খোঁজ করার জন্য ঘরের ভেতর ঢোকেন এবং ঘরের ভেতরে যা দেখতে পান তাতে তাঁদের মাথা ঘুরতো শুরু করে।
আরও পড়ুনঃ হোলিতে বচসার জেরে খুন যুবক, আলিপুরদুয়ারে অভিযুক্তর বাড়ি জ্বালিয়ে দিল জনতা
কী দেখেন পুলিশ?
ঘরের আলমারিতে তাঁরা একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট দেখতে পান। যার মধ্যে থেকে গন্ধ আসছিল। যখন তাঁরা প্যাকেট খুলে দেখেন, প্লাস্টিকের প্যাকেটে একটা মানুষের মাথা এবং দেহ রাখা রয়েছে। হ্যাঁ মানুষের মাথা এবং ধড়। লাশ এভাবে টুকরো করে রাখাতে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করেছিল। জলের ড্রামে পাওয়া যায় ওই মৃতদেহের হাত-পা। ওই মৃতদেহ আসলে আর কারও নয়, রিম্পলের মা বীণাদেবীর। জানা যায় যে, তিন মাস থেকে রিম্পল তাঁর মায়ের মৃতদেহ ঘরে নিয়ে থাকছিলেন।পুলিশ পরিবারের বাকি সদস্যদের লাশ দেখান, তাঁরা বীণার লাশ সনাক্ত করেছেন। এরপরে লাশ এর টুকরো পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যে রিম্পল নিজের মাকে এভাবে খুন করল কেন এবং এভাবে টুকরো করে আলমারিতে লুকিয়ে রাখলই বা কেন?
কেন খুন সদুত্তর মেলেনি
পুলিশ যখন শুরু করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে, তখন পুলিশের প্রশ্নের উত্তরে অসংলগ্ন জবাব দিতে থাকে রিম্পল। কখনও বলে, যে মা নিজেই মারা গেছেন। কখনও বলে যে তিনি জানেন না যে লাশ ঘরে আলমারিতে কীভাবে পৌঁছল। জানা গেছে গত ১৬ বছর ধরে বীণা তার মেয়ের মেয়ের সঙ্গে সেখানে থাকছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর এলাকাতে শিফট করেন তাঁরা।