মোবাইল আমাদের জীবনে এখন একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। মোবাইল ছাড়া এখন আর কিছুই ভাবতে পারা যায় না। অনলাইন ক্লাস থেকে শুরু করে মোবাইলে হোম ডেলিভারি, খাবার হোক কিংবা জামাকাপড়। অথবা সময় কাটানোর জন্য সোশ্যাল সাইটে ইতিউতি বিচরণ, সবের জন্যই মোবাইল বা স্মার্টফোন অত্যন্ত অপরিহার্য একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোবাইলে চরম আসক্তি
বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও মোবাইল আসক্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশেষ করে গত দুবছরে লকডাউন পিরিওডে বাইরে ঘোরাফেরা একেবারেই বন্ধ। যারা ন্যূনতম মোবাইল ঘাঁটত না, তাঁরাও এখন মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে কিছুটা মেনে নিতে হচ্ছে বাবা-মায়েদের। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে মোবাইলে আসক্তি এতটাই বেড়ে যাচ্ছে, যা থেকে বিরত করা যাচ্ছে না শিশুদের।
মোবাইল আসক্তির চরম কুফল
মোবাইলের আসক্তির কুফল কতটা মারাত্মক হতে পারে তার সামনে এসেছে সম্প্রতি। যেখানে দিনভর মোবাইল গেমে আসক্ত থাকা নাবালক ছেলেকে মোবাইল খেলতে বাধা দিয়েছিলেন বাবা। তার পরিণতি যা হল, তা জেনেশুনে শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। নাবালক কিশোর মোবাইলে গেম খেলতে বাধা দেওয়ায় বাবার প্রতি রাগে অন্ধ হয়ে বাবার গলা চেপে ধরে বাবাকে খুন করে ফেলেছে। তবে আরও ভয়ঙ্কর ব্যাপার, হঠাৎ নয়, ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করেই এ কাজ করেছে সে।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সম্ভবত মৃত্যু
এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের সুরত শহরের ইচ্ছাপুর থান এলাকায়। এই গ্রামের বাসিন্দা অর্জুন অরুণ সরকার এর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে। অর্জুন সরকার নিজের স্ত্রী এবং এক ছেলের সঙ্গে এখানে একটি বাড়িতে থাকতেন। মঙ্গলবার অর্জুন অরুণকে তার স্ত্রী ডলি অজ্ঞান অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্ত্রী ও ছেলে মিথ্য়া কথা বলে চিকিৎসককে
স্ত্রী এবং তাঁর ছেলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন অর্জুন আট দিন আগে বাথরুমে পড়ে গিয়েছিল। তখন তার চোট লাগে। মঙ্গলবার তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং আর ওঠেননি। মৃত অর্জুন সরকার-এর স্ত্রী ডলি এবং তার নাবালক কিশোর ছেলের কথাবার্তায় হাসপাতালের চিকিৎসকের কিছুটা সন্দেহ হয়। তাঁরা মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠিয়ে দেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, অর্জুনের মৃত্যু গলা টিপে শ্বাসরোধের ফলে হয়েছে।
জেরায় খুনের কথা স্বীকার ছেলের
এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ ইচ্ছাপুর পুলিশ থানাতে দেওয়া হয়েছে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ১৭ বছরের কিশোর পুলিশকে জানায় যে সে সারাদিন মোবাইল গেম খেলতে থাকত। এই কারণে তার বাবা তাকে বারবার বকত। সারাদিন গেম খেলতে বারণ করত। তাই মঙ্গলবার যখন তার বাবা ঘুমোচ্ছিল, তখন বাবার গলা টিপে মেরে ফেলে। পুলিশ আপাতত অর্জুন সরকারের স্ত্রী এবং নাবালক-কিশোর ছেলেকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। মোবাইল গেম খেলতে বাধা দেওয়ার কারণে সুরতে এই ঘটনা খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। তবে পুলিশ এখনই এই জবানবন্দি বিশ্বাস করেনি। তাঁরা আরও তদন্ত করতে চান।