পণের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর হাতে শিকল বেঁধে মারধরের অভিযোগ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার চাঁচলে। খবর পেয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর আত্মীয়রা। মঙ্গলবার গৃহবধূর বাপের বাড়ির তরফে তাঁর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর আগে মোবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলির সঙ্গে বিয়ে হয় চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আশ্বিনপুরের বাসিন্দা পিঙ্কি খাতুনের। ইতিমধ্যেই দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে ওই দম্পতির। বর্তমানেও ওই গৃহবধূ তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে ওই গৃহবধূর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। ঘটনার কথা বাবা-মাকেও জানিয়েছিলেন পিঙ্কি। যার জেরে গ্রামে একাধিকবার সালিশি সভাও বসে। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। বরং পণের দাবিতে বাড়তেই থাকে অত্যাচার।
এরপর সোমবার রাতে গৃহবধূর হাতে শিকল বেঁধে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা চরম মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘরের মেঝেতে ফেলে চড়, কিল, লাথি সহ ব্যাপক মারধর করা হয় তাঁকে। এমনকী গলায় শাড়ির আচল পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ।
এদিকে প্রতিবেশীদের মারফৎ পিঙ্কির ওপর অত্যাচারের খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান তাঁর এক আত্মীয়। পিঙ্কির বাপের বাড়িতেও খবর দেন তিনি। এরপর তাঁরাই পিঙ্কিকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও পিঙ্কির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। পিঙ্কির শ্বশুর মজিফুর রহমানের দাবি, 'বৌমার ওপর কোনও নির্যাতন হয়নি। সে বাড়িতে অশান্তি করে পালিয়ে যাচ্ছিল। পালিয়ে গিয়ে বাইরে যাতে কোনও অঘটন না ঘটায় তাই তাকে বাড়িতে আটকে রেখেছিলাম। বৌমাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার কোনও প্রশ্নই উঠে না।'