Insurance Scam Gang: দরিদ্রদের বিমা করাত এই গ্যাং! মৃত্যুর পর নিজেরাই নিত কোটি-কোটি টাকা

চিকিৎসা, মৃত্যু আর বিমা নিয়েও যে প্রতারণার ব্যবসা হতে পারে, তা কখনও কল্পনা করেছেন? উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে সম্প্রতি এমনই এক ‘জামতাড়া স্টাইল’ প্রতারণা চক্র ধরা পড়ল। দেশের অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে চলছে এই চক্রের খেলা।

Advertisement
দরিদ্রদের বিমা করাত এই গ্যাং! মৃত্যুর পর নিজেরাই নিত কোটি-কোটি টাকা

চিকিৎসা, মৃত্যু আর বিমা নিয়েও যে প্রতারণার ব্যবসা হতে পারে, তা কখনও কল্পনা করেছেন? উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে সম্প্রতি এমনই এক ‘জামতাড়া স্টাইল’ প্রতারণা চক্র ধরা পড়ল। দেশের অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে চলছে এই চক্রের খেলা। মারা গিয়েছেন, মারা যেতে পারেন— এমন ব্যক্তিদের কাজে লাগিয়ে চলছে কোটি কোটি টাকার গেম।

দক্ষিণ ভারতের জম্মু-কাশ্মীর এবং হিমাচলপ্রদেশ বাদ দিলে বাকি প্রায় সব রাজ্যেই এমন চক্র সক্রিয়। দরিদ্র, অসুস্থ মানুষদের টার্গেট করে এই চক্র।  

কীভাবে ধরা পড়ল?
জানুয়ারির এক ঠান্ডা, কুয়াশাচ্ছন্ন রাত। পুলিশের তল্লাশিতে একটি গাড়ি ধরা পড়ল। গাড়িতে ছিল ওঙ্করেশ মিশ্র ও অমিত। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১১.৫ লক্ষ টাকা নগদ, ১৯টি ডেবিট কার্ড। সেই সঙ্গে মেলে এমন একটি স্মার্টফোন, যাতে ১ লক্ষেরও বেশি মানুষের ছবি ছিল। বিষয়টি যে বেশ সন্দেহজনক, তা বলাই বাহুল্য।

পুলিশ প্রথমে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি। মূলত আর্থিকভাবে দুর্বল, প্রান্তিক মানুষদের ছবিতে ভরা ফোন। মেসেজে বিমার টাকা মেটানোর কথা। এরপর সম্ভলের গুজরাট ব্যাঙ্কের পাসবুক ও অন্যান্য কাগজ ঘেঁটে বোঝা যায়, শুধু ভুয়ো বিমার নয়, ‘মৃত্যু বিমা’ নিয়েও প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে এই চক্র।

তদন্ত শুরু হয় প্রিয়ঙ্কা নামে এক মহিলার বাড়ি থেকে। তিনি জানান, তাঁর স্বামী দীনেশ শর্মা ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। কয়েকজন এসে জানান, চিকিৎসার খরচ দেওয়ার নাম করে তারা ২৫ লক্ষ টাকার বিমা করায়। ৩০ মার্চ ২০২৪, দিনেশের মৃত্যু হয়। প্রিয়ঙ্কার নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হলেও, চেকবুকে সই করিয়ে নেয় প্রতারকরা। ফোন নম্বর পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়। ফলে ২৫ লক্ষ টাকার বিমায় এক পয়সাও পাননি প্রিয়ঙ্কা।

দীনেশ নামের আরও এক যুবকের মৃত্যু
এই ব্যক্তিকে দিয়ে তাঁকে দিয়ে ট্র্যাক্টর ও বাইকের লোন করানো হয়। এরপরেই তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ব্যাঙ্ক লোন নিয়মমাফিক মুকুব হয়। কিন্তু গাড়ি চলে যায় ওই চক্রের হাতে।

তদন্তে দেখা যায়, এমনই বহু গরিব মানুষকে দিয়ে গাড়ির লোন করিয়ে, পরে গাড়ি চুরি দেখিয়েও টাকা আত্মসাৎ করে চক্রটি। একাধিক ট্র্যাক্টর বাজেয়াপ্ত করা হয় আমরোহা অঞ্চলে।

Advertisement

তদন্তে উঠে আসে ত্রিলোক নামে এক ব্যক্তির নাম। জুনেই তাঁর মৃত্যু হলেও, এর অনেক পরে তাঁর নামে বিমা করানো হয়। পরে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু দেখানো হয়। মৃতের নামে বিমা করে সেই টাকা তুলে নেয় চক্রটি।

এখানেই শেষ নয় থাকেনি। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য—তাজা যুবকদের বিমা করে খুন করে রোড অ্যাক্সিডেন্টে মৃত্যু বলে দেখিয়ে টাকা আদায়। এক ঘটনায় তো সই ভাই-ই ভাইকে ই-রিকশা দিয়ে ধাক্কা মেরে খুন করে টাকা তুলেছে।

এই সব চলছিল এক গোটা নেটওয়ার্কে। খবর দিতেন আশা কর্মী বা গ্রাম প্রধানেরা। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারদের সহায়তায় খুলত অ্যাকাউন্ট। সরকারি কর্মচারী, গ্রাম সচিব, বিমা কোম্পানির কর্মী—সবাই জড়িত।

এই খেলায় কত টাকা ঘোরাফেরা করছে, তা আন্দাজ করতেই যথেষ্ট—এখনও পর্যন্ত ৫১ জন গ্রেফতার, ১৭টি আলাদা FIR দায়ের। সম্ভল পুলিশের দাবি, রীতিমতো এক প্যারালাল ইকোনমি গড়ে উঠেছিল।

মাত্র চার মাসে এতগুলি মামলা খোলার পর পুলিশ জানাচ্ছে, এটা সবে শুরু। অন্যান্য রাজ্যেও চলছে একই খেলা।  

POST A COMMENT
Advertisement