শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে পুলিশ। মঙ্গলবার, পুলিশ অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালাকে জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উদ্ধার হয় শ্রদ্ধার দেহাংশ। তবে এখনও পর্যন্ত শ্রদ্ধার মাথা ও শরীরের আরও কিছু অংশ পাননি তদন্তকারীরা। তারও সন্ধান চলছে। অন্যদিকে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে যে যে তথ্য সামনে এসেছে তা দেখে কার্যত তাজ্জব বাঘা বাঘা পুলিশ অফিসাররা।
আফতাবকে নিয়ে যে যে তথ্য সামনে এসেছে
১) আফতাব এবং শ্রদ্ধার আলাপ ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। পরে দুজনেই মুম্বাইতে একই কল সেন্টারে কাজ শুরু করেন। এই সময় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আফতাব ও শ্রদ্ধা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তাদের পরিবারে এই সম্পর্ক নিয়ে সমস্যা ছিল। গত বছরের শেষের দিকে দুজনেই দিল্লির মেহরাউলিতে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে। চলতি বছরের ১৮ মে বিয়ে নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়, তারপরই আফতাব শ্রদ্ধাকে হত্যা করে।
২)আফতাব শ্রদ্ধার শরীরকে ৩৫টিরও বেশি টুকরো করে। লাশের টুকরো রাখার জন্য তিনি ৩০০ লিটারের একটি ফ্রিজ কেনে। আফতাব প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে সেই দেহাংশ ফেলে দিত। দেহ টুকরো টুকরো করে তার সংরক্ষণের পরিকল্পনা সে করে আমেরিকান টিভি সিরিজ 'ডেক্সটার' দেখে।
আরও পড়ুন : সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর, কিছুদিনের মধ্যেই ফের বাড়বে ডিএ; কত টাকা?
৩) খুনের পরদিন ইলেক্ট্রিক করাত কিনে আনে আফতাব। দেহ টুকরো করা শুরু করে। এরপর সে ইন্টারনেটে সার্চ করে, কীভাবে খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে হয়। বাজার থেকে সে অ্যাসিড কিনে আনে। নমুনা মুছে ফেলার জন্য।
৪) ১৯ মে সকালেই এই ফ্রিজ কিনে আনে আফতাব। তারপর শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে। সেদিন রাতে শ্রদ্ধার গোটা শরীর পিস পিস করতে পারেনি। তাই অর্ধক লাশ কেটে জোমাটো থেকে খাবার অর্ডার করে। খায় ও তারপর ঘুমিয়ে পড়ে। ১৯ তারিখ থেকে টানা ১৮ দিন ধরে সে এভাবেই দেহ কেটে ফ্রিজে রেখে বাইরে ফেলে আসতে শুরু করে।
৫) খুনের পরও ওই ফ্ল্যাটেই থাকত আফতাব। এরই মধ্যে সে অন্য মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে। সেই নতুন বান্ধবীকে ফ্ল্যাটেও আনে। অথচ ঘরের ফ্রিজে তখনও রাখা শ্রদ্ধার মৃতদেহ।
৬) শ্রদ্ধার লাশ কাটার সময় আফতাবের হাতও কেটে যায়। চিকিৎসার জন্য সে ডাঃ অনিল কুমারের কাছে যায়। ডাঃ অনিল কুমার জানান, তার হাতে একটি ক্ষত ছিল এবং এটি কীভাবে কাটা হয়েছিল জানতে চাইলে আফতাব বলেছিল, ফল কাটার সময় তার হাত কাটে।
আরও পড়ুন : চিনির বদলে খান এই ৫ মিষ্টি জিনিস, ডায়াবেটিস ছুঁতেও পারবে না
৭) খুনের পর আফতাব কী করে? শ্রদ্ধাকে হত্যার পর আফতাব এমনভাবে জীবনযাপন করছিলেন যেন কিছুই হয়নি। সে এমন আচরণ করছিল যাতে কেউ তাকে সন্দেহ না করে। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পর কয়েক সপ্তাহ ধরে আফতাব শ্রদ্ধার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিল। যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
৮) ২৬ মে আফতাব শ্রদ্ধার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৪ হাজার টাকা তোলে ও নিজের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে।
৯) পুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান, শ্রদ্ধাকে খুনের পর একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল আফতাব। তা বিস্তারিত জানতে, তদন্তকারীরা আফতাবের প্রোফাইল ঘাঁটবে।