শিলিগুড়ির কাছে সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের কাজ চলছে জোরকদমে। এই রেলপথ স্থাপন হয়ে গেলে রেলপথে প্রথমবার জুড়ে যাবে পাহাড়ি রাজ্য সিকিম। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিকিম পর্যন্ত প্রবেশ শুধু নয়। রেলমন্ত্রকের উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে এই রেলপথটিকে চিন সীমান্তের নাথুলা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার।
সম্প্রতি কাজের অগ্রগতি জানিয়ে ট্যুইট করেছে রেলমন্ত্রক। ২০২২ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা ও আবহাওয়া পরিস্থিতির জেরে সেই কাজ সম্পন্ন হতে দেরি হবে। তবে আগামী বছরের শেষে এই কাজ শেষ হয়ে যেতে পারে।
সিকিমের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত রেল যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। সড়ক এবং আকাশপথে যোগাযোগ রয়েছে। যদিও আকাশপথে যোগাযোগ আপাতত বন্ধ। এবারে রেললাইন জুড়লে গতি আসবে যোগাযোগ ব্যবস্থায়।
২০০৮-০৯ সালে প্রকল্পটি হাতে নেয় ভারতীয় রেল। সেইসময় রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ সালে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী। তারপর কাজ শুরু হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়।
মহানন্দা অভয়ারণ্যের ভেতর দিয়ে যাবে রেল লাইন। সবুজ ধ্বংস করা যাবে না। বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠন বাধা দেয়, চলে আন্দোলন। অবশেষে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে শুরু হয় প্রকল্পটি।
সেবক থেকে ছেড়ে প্রথম স্টপেজ রিয়াং। তারপর তিস্তাবাজার এবং মল্লি স্টেশন। শেষ স্টপ সিকিমের রংপো। তার জন্যে রেলের বাজেট বরাদ্দ হয়েছিল ৮,৯০০ কোটি টাকা।
গত জুন মাস পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩৩৫.৫২ কোটি টাকা। সময় বেশি লাগায় ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে নতুন করে ৬০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যেহেতু এলাকাটি ধস প্রবণ, তাই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে তৈরি করা হচ্ছে এই লাইন।
সেবক থেকে রংপো রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে ৪৪.৯৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৪১.৫৫ কিলোমিটার পথ থাকবে পশ্চিমবঙ্গে। বাকি ৩.৪১ কিলোমিটার সিকিমে।
এই পথে মোট ১৪টি সুড়ঙ্গ থাকবে। সুড়ঙ্গগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হবে ৫.২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ, সবচেয়ে ছোটটি ৫৩৮ মিটার।
পথে থাকবে পাঁচটি স্টেশন। সেবক, রিয়াংস মেল্লি, রংপো এবং তিস্তা বাজার। রেলের দাবি, ইতিমধ্যেই এই লাইন তৈরির ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এই লাইন তৈরিতে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।
এই রেলপথ স্থাপন হলে যেমন পর্যটনের ক্ষেত্রে দিগন্ত খুলে যাবে, পাশাপাশি চিন সীমান্ত সুরক্ষার ক্ষেত্রেও একটা দারুণ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।