একটা সময় ছিল যখন অস্ত্র আমদানিতে ভারত বিশ্বের পয়লা নম্বর দেশ ছিল। তবে গত ১০ বছরে চিত্রটা বদলে গেছে। ৩৩ শতাংশ অস্ত্র আমদানি কমিয়ে ফেলেছে ভারত। এই কথা জানিয়েছে Stockholm International Peace Research Institute (Sipri)।
অন্যদিকে গত ৫ বছরে আস্ত্র রফতানির পরিমাণ ৫.২ শতাংশ বেড়েছে চিনে। এরমধ্যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আলজেরিয়া সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করেছে। তবে সবার আগে রয়েছে পাকিস্তান। পাক সরকারই সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনেছে জিনিপং-এর দেশ থেকে।
এদিকে ভারতে অস্ত্র আমদানি কমার পেছনে মূল কারণ হল সামরিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার বিষয়টিতে জোর দেওয়া।
মূলত রাশিয়ান অস্ত্র থেকে নিজেদের নির্ভরশীলতা কমানোর প্রচেষ্টার ফলেই আমদানির পরিমাণ এতটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু রাশিয়া নয়, আমেরিকা থেকেও ভারতে অস্ত্র আমদানির পরিমাণ কমিয়েছে ৪৬ শতাংশ। তবে তার মানে এটা নয় যে ভারত বাইরে থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করে দিচ্ছে। আগামী দিনে বড়সড় অস্ত্র আমদানির পরিকল্পনা আছে দেশের বলে সিপরি রিপোর্টে উঠে এসেছে।
রিপোর্ট বলছে, ২০১৬-২০ তে রাশিয়া থেকে ৪৯ শতাংশ অস্ত্র কিনেছিল ভারত, এরপরেই ফ্রান্স ও ইজরায়েল থেকে যথাক্রমে ১৮ এবং ১৩ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করে ভারত।
তরে কেবল আমদানি নয় রফতানিতেও ভারত নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছে। ভারত এই মুহূর্তে অস্ত্র রফতানিতে বিশ্বের ২৪তম স্থানে রয়েছে। মোট যা বিশ্বে অস্ত্র রফতানি হয় তার ০.২ শতাংশ করে ভারত। ২০১১-১৫ তে এই সংখ্যাটি ছিল ০.১ শতাংশ। মূলত শ্রীলঙ্কা, মরিশাস ও মায়ানমার ভারত থেকে অস্ত্র কেনে।
পাকিস্তান যে অস্ত্র কিনেছে গত পাঁচ বছরে, তার ৭৪ শতাংশ এসেছে চিন থেকে। রফতানিতে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে বর্তমানে চিন। শীর্ষে আমেরিকা। তারপরেই আছে রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি। অন্যদিকে আমদানিতে বিশ্বের প্রথম পাঁচে যথাক্রমে সৌদি আরব,,ভারত, মিশর, অস্ট্রেলিয়া ও চিন। এদিকে চিন থেকে ক্রমাগত অস্ত্র কিনে চলেছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।
চলতি বছরে মোট অস্ত্র কেনার বাজেটের ৬৩ শতাংশ ঘরোয়া বাজার থেকে কেনার জন্য বরাদ্দ করে রেখেছে ভারত সরকার। তবে সিপরি জানিয়েছে যেভাবে চিন ও পাকিস্তানের রক্তচক্ষুর মুখে পড়েছে ভারত, সেখানে আগামী পাঁচ বছরে আমদানি বাড়াতেই হবে ভারতকে নিজের রক্ষণকে আটোসাঁটো করার জন্য। এদিকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত।