মালদার আমের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে গোটা দেশে। এমনকী বিদেশেও এর চাহিদা রয়েছে প্রচুর। প্রতি বছর কয়েক হাজার টন আম দেশে বিদেশে রপ্তানি হয়। কিন্তু এখন বুঝি সেই আধিপত্যে থাবা বসাতে চলেছে উত্তরপ্রদেশ।
উত্তরপ্রদেশের বারাবকি জেলাতে কৃষকেরা বড় সংখ্যায় আমের চাষ শুরু করেছেন। এখানে আমের হরেক রকম প্রজাতি দেশ-বিদেশেও যাচ্ছে।তবে সংখ্যায় এবং পরিমাণে আগে অনেক কম ছিল কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বড় পরিমাণে উত্তরপ্রদেশে আমের চাষ শুরু হয়েছে।
আম্রপালি, যকুতি, চৌষা, ল্যাংড়ার মতো মালদার আম, এর সঙ্গে মালিহাবাদি, আমও স্বাদ ও গন্ধে অন্য জায়গার আমকে টক্কর দিচ্ছে। এছাড়া দশহরি আম লোকেরা খুব পছন্দ করছে। তার সুস্বাদু এবং সুগন্ধে জন্য।
কিন্তু আম্রপালি আমের মিষ্টির সামনে অবশ্য কেউ টিঁকতে পারেনা। আম্রপালি আম নিজের মিঠা স্বাদের জন্য বিখ্যাত। বাজারের দাম দেড়শ থেকে দুশো টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এই মরশুমে কৃষকেরা মালদার আমের ঘাটতির সুযোগ নিয়ে বারাবকির আম বাজারে আনছে।
কৃষকেরা জানিয়েছেন যে আমের চাষ করতে গেলে প্রথমে গাছ লাগানোর পর ৫ বছর সময় দিতে হবে। এক বিঘা জমিতে ৫০ থেকে ৬০ টি গাছ লাগানো সম্ভব। পাঁচ বছর পরে ফল আসা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত এটি বাজারে চাহিদা থাকে। এর কারণে কৃষকরা ঠিকমতো পয়সা কামিয়ে নিতে পারেন।
বারাবকিতে ১২ হাজার হেক্টরে আমের চাষ হচ্ছে। বারাবকি জেলায় কৃষকেরা প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করছেন। এখানকার আম মালদার আমের মতোই মিষ্টি এবং সুস্বাদু। যেহেতু এখানকার তাপমাত্রা বেশি থাকে, সে কারণে আম পাকার জন্য সুপরিবেশ থাকে।
এখানকার কৃষকরা প্রায় কুড়ি বছর ধরে আম চাষ করছেন। আমচাষিদের এখানে সবারই ২৫-৩০ বিঘা করে জমি রয়েছে এবং প্রত্যেকেই গড়ে পাঁচ থেকে আট লাখ টাকা বছরে আম চাষ করে কামিয়ে নেন।
কি কি ধরনের আমি এখানে চাষ করা হয়? এখানে দশহরি, ফজলি, বেনারসি ল্যাংড়া, জলসা বোম্বাই, বোম্বাই, হিমসাগর সুবর্ণরেখা, মল্লিকা, আম্রপালি, রচনা, অরুণ আনমোল আম মিলিয়ে প্রায় ৫১ প্রজাতির আম চাষ করা হয়।
আমের মরশুমে কেউ মিষ্টি খান না। আমের মরশুমে এখানে এত আম হয়, যে রপ্তানি করে এখানকার মানুষ আমের মরশুমে মিষ্টি খাওয়া ভুলে যান। বাড়িতে লোকজন গেলে তাঁকে অভ্যর্থনা করা হয় আম দিয়ে। পাশাপাশি কারও বাড়িতে কেউ গেলে, ঝুড়িতে আম নিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছে যান।