পৃথিবীর অন্যতম উচ্চতম এলাকা লাদাখ, যেখানে সারা বছর তাপমাত্রা খুব কম থাকে। আর শীতকালে তো -১৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা নেমে যায়। কোনও কোনও এলাকায় তার থেকেও বেশি। এখানে জল জমে তুষার হয়ে যায় তবে। তবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় গলতে শুরু করেছে সেখানকার হিমবাহ, তুষার গলছে। তাই হিমালয়ে বড়সড় বন্যা আসতে পারে, আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।
সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউট আর হেইডেলবার্গ সেন্টার ফর দ্যা এনভায়রনমেন্টে রিপোর্ট তৈরি করেছে। জিওলজিস্ট মার্কস নুসরের জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে স্যাটেলাইট ছবি কাজে লাগানো হয়েছিল। যেখানে গদ ৫০ বছরের ছবি বিশ্লেষণ করে দেখেছি।
তিনি জানিয়েছেন, ওই হিমবাহ যদি দ্রুত বলতে আরম্ভ করে, তাহলে হিমালয়ের নিচের অংশে ভয়াবহ বন্যা আসতে পারে। কী হতে পারে কেদারনাথ তা দেখিয়েছে। ওই বিপর্যয় সামলানো সহজ কাজ নয়।
কী করে তা সামলানো যেতে পারে, রক্ষা করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে গবেষণা চালানো হয়েছে। এই রিপোর্ট ন্যাচরাল হ্যাজার্ডস নামে এক বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে?
এমন নয় যে কেবল ভারতের হিমবাহ গলছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য সারা দুনিয়ার হিমবাহ বলছে। অধ্যাপক নুসরে ২০১৪ সালে আগস্ট মাসে লাদাখের প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে গবেষণা করেছেন। তুষারের ঝিল ফাটার কারণে ওই বিপর্যয় তৈরি হয়েছিল। অজস্র বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছিলেন।
২০১৪ সালে যে হ্রদ ফেটে উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়, সেটা ৫ হাজার ৩০০ মিটার উপরে অবস্থিত। এবার কল্পনা করে নিন, অত উঁচু থেকে জলের স্রোত যদি নিচে নেমে আসে, তাহলে কী হতে পারে? কতটা ক্ষতি হতে পারে?
জেনে নেই কেন এমন হয়। যখন কোনও হিমবাহ গলে, তখন তার জল জমা হয়ে সেখানকার হ্রদে। আর সেখানকার জলস্তর বাড়িয়ে দেয়। বেশি জল পৌঁছে তা ফেটে যায়।
বিশ্বের উষ্ণতা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেলে হিমালয় অবস্থিত গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ গলবে আরও দ্রুত। আর এই কারণে পাহাড়ি এলাকায় বিপর্যয়ের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।