করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট 'ওমিক্রন' থাবা বসিয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। ফেরেকবার উদ্বেগ ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট হল B.1.1.529, এরই নাম নাম দেওয়া হয়েছে 'ওমিক্রন' (Omicron)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে একটিকে উদ্বেগজনক 'তকমা' দেওয়া হয়।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রথমবার এই নয়া ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মেলে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপর বৎসোয়ানা, হংকং ও ইজরায়েলের মতো দেশগুলিতেও 'ওমিক্রন'-এর হদিশ মেলে। করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট 'ওমিক্রন' কীকরে এল? জেনে নিন বিস্তারিত।
এই ভ্যারিয়েন্ট কোথা থেকে এসেছে?
লন্ডনের ইউসিএল জেনেটিক্স ইনস্টিটিউটের একজন বিজ্ঞানী বলেছেন, করোনার এই ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম কোথা থেকে এসেছে তা পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। সম্ভবত, কোনও এইচআইভি/এইডস রোগীর ইমিউনোকম্প্রোমাইজড ব্যক্তির কাছ থেকে দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আফ্রিকার দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভ্যারিয়েন্ট।
এই ভ্যারিয়েন্টটি আরও বিপজ্জনক?
বলা হচ্ছে, এই ভ্যারিয়েন্টটি ৩০ বার খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়, যা উত্তেজনার কারণ। আলফা, বিটা এবং ডেল্টা ভেরিয়েন্টের তুলনায়, এটি রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
ভারত সরকার কী বলছে?
করোনার নতুন স্ট্রেনের জন্য ভারত সরকার সমস্ত রাজ্যকে একটি পরামর্শ জারি করেছে। রাজ্যগুলিকে বিদেশ থেকে আসা সমস্ত ভ্রমণকারীদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কোভিড পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেখান থেকে আসা যাত্রীদের কড়া নজরদারি করা হচ্ছে। এই দেশগুলি হল- ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বাংলাদেশ, বৎসোয়ানা, চিন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, হংকং এবং ইজরাইল। এই দেশগুলি থেকে যারা ভারতে আসবেন তাদের ৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এবং প্রস্থানের ৪৮ ঘণ্টা আগে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে হবে। ভারতে এখনও 'ওমিক্রন'-এর কেস মেলেনি।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে এটি কতটা বিপজ্জনক তা জানতে এটি নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি কোভিড ভ্যাকসিন একে প্রতিরোধ করতে পারে কিনা। ভ্যাকসি না পাওয়ায়, আফ্রিকান দেশগুলিতে টিকা দেওয়ার হার কম এবং এই স্ট্রেনটি সেখান থেকে এসেছে বলে বলা হয়।
কোভিডের টিকা এটি প্রতিরোধ করতে সক্ষম? Pfizer-BioNtech জানিয়েছে, তারা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ আফ্রিকার দেশ থেকে আসা বিমান নিষিদ্ধ করেছে। আমেরিকা ও কানাডাও আফ্রিকা থেকে আসা যাত্রীদের জন্য কঠোর নিয়ম জারি করেছে।
ব্রিটেন ইতিমধ্যে সাময়িকভাবে আফ্রিকার ৬টি দেশের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে। সিঙ্গাপুর গত ১৪দিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অন্যান্য আফ্রিকান দেশগুলি থেকে আগত সকলের প্রবেশে কড়াকড়ি করেছে। অস্ট্রেলিয়াও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা লোকদের প্রবেশের নিয়ম কড়া করেছে।