বাংলার রসগোাল্লার মত কাশ্মীরের জাফরানও পেয়েছে জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন বা জিআই তকমা। ফলে বিশ্ব মানচিত্রে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে জাফরান।
এবছর জাফরানের ফলনের কেন্দ্রবিন্দু কাশ্মীরের পাম্পোরে ফলন দারুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এজন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ন্যাশনাল মিশন অন স্যাফ্রন। কেন্দ্র এজন্য ৪১১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তাতে ৩,৭১৫ হেক্টর জমিকে জাফরান চাষের জন্য উপযোগী করা হচ্ছে।
জিআই তকমার ফলে জাফরানে ভেজাল মেশানো বন্ধ হবে। কাশ্মীরী জাফরান একমাত্র পুলওয়ামা ও বদগামে ১৬০০ মিটার উচ্চতায় ফলন হয়। তাছাড়া, লম্বা ও মোটা, প্রাকৃতিক ঘন লাল রং, দারুণ গন্ধ, তেতো স্বাদ ও রাসায়নিক মিশ্রণ ছাড়াই তৈরি জাফরান বিশ্বে অতুলনীয়।
জিআই তকমার ফলে রফতানির বাজারে কাশ্মীরী জাফরান চাষিদের বেশি দাম এনে দেবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি জাগরান রফতানি করা হয় ইরান ও ফ্রান্সে।
তবে প্রদীপের নীচেও রয়েছে অন্ধকার। কাশ্মীর উপত্যকায় ১০ বছর আগে শুরু হওয়া ন্যাশনাল স্যাফ্রন (জাফরান) মিশন নিয়ে অনেক আলোচনা, অনেক কথা হলেও এটি কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন করতে পারেনি বলেই দাবি একটি নহলের। পুলওয়ামা জেলার পাম্পোরে উপত্যকার চাষীদের একটা অংশ এই মিশন নিয়ে ভীষণভাবে হতাশ বলেই জানা যাচ্ছে।
২০১১ সালে ৪০০ কোটি টাকার জাফরান মিশন প্রকল্প শুরু করে ভারত সরকার। লক্ষ্য ছিল উৎপাদন ও মান বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকের আয় দ্বিগুণ করে দেওয়া ছিল মূল লক্ষ্য। এটি ২০১৪ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়নি এই প্রকল্প। কৃষকদের উৎপাদন ও আয় না বেড়ে বরং আশা পরিণত হয়েছে হতাশায়। প্রকল্পটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।
চাষীরা চরম হতাশ, কেননা মিশনটি শুরুর আগে যে কৃষক মৌসুমে এক কেজি কিংবা ৫০০ গ্রাম জাফরান উৎপাদন করতেন, এখন তার উৎপাদন কমে নেমেছে অর্ধেকে। জাফরান গাছের যে বীজ জমিতে বপন করা হচ্ছে তা ক্ষয়ে যাচ্ছে এবং চাষ ও উৎপাদন পুনরুজ্জীবনের যে আশা করা হয়েছিল আশানরূপ হচ্ছে না বলে অভিযোগ চাষীদের।
অনেক চাষী প্রকাশ্যেই এই মিশন বন্ধের দাবি করছেন। তাদের মতে, মিশনটি গত ১০ বছরে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের মতো তেমন কিছুই করতে পারেনি, বরং তাদের দুর্দশা বয়ে এনেছে।
যদিও কাশ্মীরের কৃষি বিভাগের পরিচালক আলতাফ আন্দ্রাবি দাবি করেছেন, এই মিশনে অধিকাংশ কৃষকই লাভবান হয়েছেন। একে বিরাট সফলতা হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। তার মতে, এটি উদ্বাধনী ও বৈজ্ঞানিক মেথড হওয়ায় ভালো ফল এসেছে।