প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে মৌনী অমাবস্যার দ্বিতীয় অমৃত স্নান উৎসবের দিন পুণ্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে পদপিষ্ট হন। ইতিমধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের কুম্ভ এলাকার ২ নম্বর সেক্টরের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আজ অর্থাত্ বুধবার মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে প্রয়াগরাজে সঙ্গমে অমৃত স্নানের সময় হুড়োহুড়ি পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রায় ১৫ কোটির বেশি মানুষ মহাকুম্ভে জড়ো হয়েছেন স্নান করতে।
রাত ২টো থেকে সঙ্গম তীরে পুণ্যার্থীদের ভিড় জমেছিল। এই সময় ব্যারিকেডের একাংশ ভেঙে পড়ে। হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং লোকজন এদিক ওদিক ছুটতে থাকে। অনেক পুণ্যার্থীর জিনিসপত্র পড়ে যায়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, 'আমরা নির্বিঘ্নে যাচ্ছিলাম, এমন সময় হঠাৎ ভিড় এসে হাতাহাতি হয়। আমরা পালানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোথাও জায়গা ছিল না। সবাই এখানে-সেখানে গেল। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। পরিস্থিতি এমন যে আমরা জানি না কী ঘটছে।'
ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চলছে এবং পুরো এলাকায় পুলিশ নজরদারি বাড়াচ্ছে। ভক্তদের ধৈর্য ধরতে এবং প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভের দ্বিতীয় অমৃত স্নানের জন্য সারা দেশ থেকে কোটি কোটি পুণ্যার্থী প্রয়াগরাজ পৌঁছেছেন। অনুমান করা হচ্ছে, আজ কুম্ভমেলায় ১০ কোটিরও বেশি পুণ্যার্থী পৌঁছতে পারেন। গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে এনএসজি, ব়্যাফ নামানো হয়। হেলিকপ্টারে চলছে নজরদারি। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, "কারা এই ভিড় সামলাতে ব্যর্থ, কাদের গাফিলতি চিহ্নিত করে প্রশাসনের তরফে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে পঞ্চায়েতি নিরঞ্জনী আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর কৈলাশানন্দ গিরি বলেন, 'ভিড় খুব বেশি। ভিড় দেখে আখড়া পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বসন্ত পঞ্চমীতে আমরা অমৃত স্নান করব।"
মহাকুম্ভে সঙ্গমস্থলে পদপিষ্ট হওয়ার পর অমৃতস্নান সাময়িক সময়ের জন্য বাতিল করা হয়। আখড়া পরিষদ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
তথ্য অনুযায়ী, সঙ্গমের নাকের অংশে ১১ থেকে ১৭ নম্বর খুঁটির মধ্যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। আহতদের সবাইকে মেলা এলাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সঙ্গমের নাকের অংশে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় অনেকে আহত হন। অনেকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হারিয়ে যান। অসম ও মেঘালয় থেকে আসা পরিবারগুলি জানায়, হঠাৎ করেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। এতে অনেকে একসঙ্গে পড়ে যায়, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন আহত হয়।
প্রয়াগরাজগামী সমস্ত বিশেষ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।