একটা সময় মনমোহন সিংকে 'মৌনমোহন' বলে কটাক্ষ করতেন তৎকালীন বিরোধী বিজেপির নেতানেত্রীরা। সোমবার সংসদের বিশেষ অধিবেশনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টানলেন অধীর চৌধুরী। বললেন,'মনমোহন সিং চুপ করে থাকতেন না, তিনি কথা কম কাজ বেশি করতেন।' সেই সঙ্গে নেহরুর ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের উন্নতিতে নেহরুর অবদানের কথাও টেনেছেন অধীর। তাঁর দাবি,'বিরোধীদের কথা শুনতেন নেহরু।'
নেহরুর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অধীর। তাঁর কথায়,'বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিরোধীদের কথা শুনতেন। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় কটাক্ষ বা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন না। সংসদে নেহরু ভাষণ যখন দিতেন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ঘণ্টা বাজিয়ে দিতেন স্পিকার। এটা বুঝিয়ে দেয়, সংসদের উর্ধ্বে কেউ নয়। এটাই সংসদীয় গণতন্ত্রে নেহরুর অবদান।'
অধীর বলেন,'পোখরানের সময় বিদেশিরা আমাদের বাধা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা থামিনি। গোটা বিশ্বকে বার্তা দিয়েছিলেন অটলজি। সেই পরমাণু পরীক্ষার পর আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। যে নিষেধাজ্ঞা হঠিয়েছিলেন আমাদের মনমোহন সিং। যাঁকে মৌন থাকার অভিযোগ করেছিল বিজেপি। তিনি নীরব থাকেননি। জি২০ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, এটা দেশের জন্য হিতকর। আসলে মনমোহন মৌন থাকতেন না, কথা কম কাজ বেশি করতেন।'
আগামী অধিবেশন বসবে নতুন সংসদ ভবনে। পুরনো ভবনের শেষ অধিবেশনে অধীর এ দিন বলেন,'এটা আবেগঘন মুহূর্ত। যখন খবর পেলাম, এটা সংসদের শেষ দিন। স্বাভাবিকভাবে আবেগপ্রবণ হওয়া স্বাভাবিক। সংসদ ও সংবিধান রক্ষার জন্য বহু মানুষের অবদান রয়েছে। আধুনিক ভারতের স্থপতি নেহরু। ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।' বিশেষ অধিবেশন নিয়ে সরকার অন্ধকারে রেখেছিল বলেও অভিযোগ করেছেন অধীর। তাঁর কথায়,'এটা সংসদের সাধারণ অধিবেশন না বিশেষ অধিবেশন, সেটাই আমরা জানি না। সংবাদমাধ্যমের থেকে জানতে হচ্ছে। জিরো আওয়ারে প্রশ্নোত্তরে অংশ নিতে অনুমতি দেওয়া হয়নি সাংসদদের।'
সনাতন ধর্ম নিয়ে উদয়নিধির মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের নিশানা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। মধ্যপ্রদেশের সভায় তিনি বলেছিলেন,'সনাতন ধর্মকে ধ্বংস করাই বিরোধীদের গোপন উদ্দেশ্য।' এনিয়ে অধীর বলেন,'হিন্দু ধর্মে চারটি বেদ, লক্ষ দেবতা, ১৮টি উপনিষদ। দুটি মহাকাব্য আছে... আমরা যখন বাসুধৈব কুটুম্বকম নিয়ে কথা বলি তখন এর মানে কী - বহুত্ববাদ কথাই বলে হিন্দু ধর্ম।'