India Attack on Pakistan, Operation Sindoor: ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বুধবার পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (PoJK) ৯টি জঙ্গি শিবিরে নির্ভুল হামলা চালিয়ে 'অপারেশন সিঁদুর' শুরু করেছে। পহেলগাঁওতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার কয়েকদিন পর এই অপারেশন করা হল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিছু সময় আগে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী কাঠামো লক্ষ্য করে 'অপারেশন সিন্দুর' শুরু করে, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বলা হচ্ছে যে মোট ৯টি জায়গাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, ভারতীয় হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং হামলায় নিহতদের জন্য সমবেদনা জানিয়েছেন। এরদোগান পাহেলগাম হামলার নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য পাকিস্তানের আহ্বানকে সমর্থন করেছেন এবং উত্তেজনা কমাতে তুরস্কের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় মক ড্রিল এবং ব্ল্যাকআউট। পাটনা-লখনউতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। বিহারের পাটনা এবং উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ সহ দেশের অনেক জায়গায় ব্ল্যাকআউট শুরু হয়েছে। একই সময়ে, দিল্লির ভিভিআইপি এলাকা লুটিয়েন্স জোনে রাত ৮টা থেকে রাত ৮টা১৫ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। দেশব্যাপী নাগরিক নিরাপত্তা মক ড্রিলের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে, নয়াদিল্লি পৌর পরিষদ (এনডিএমসি) একটি সরকারি বিবৃতি জারি করেছে।
বদলা নিলেও ভারতীয় সেনা মানবিকতা ভোলেনি। ভারত ইতিহাস তৈরি করেছে। জঙ্গিদের জবাব দেওয়া প্রয়োজন ছিল : রাজনাথ
সুনির্দিষ্ট, সতর্ক এবং পরিমাপিত স্ট্রাইক করা হয়েছে জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে। বললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, 'কড়া জবাব দিয়েছে পহেলগাঁও হামলার। রাইট টু রেসপন্ড অধিকার প্রয়োগ করেছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অপারেশ সিঁদুরের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন, ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসবাদকে মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না। ভারতীয় সেনাকে এই হামলা চালানোর জন্য প্রণাম জানাই।' তাঁর সংযোজন, 'আমরা কেবল তাদের উপরই হামলা চালিয়েছি যারা আমাদের নিরীহ নাগরিকদের নৃশংস হত্যা করেছেন।'
সেনা জওয়ানদের শুভেচ্ছা, ভারত নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পেরেছে। বললেন রাজনাথ সিং। তিনি আরও জানান, যারা নিরীহদের হত্য়া করেছে তাদেরই কেবল নিকেশ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের এমারজেন্সি জারি, ঘোষণা করলেন সিএম মরিয়ম নওয়াজ। ভারতের হামলা নিয়ে চিন্তিত পাকিস্তান। সেখানকার প্রশাসনিক আধিকারিকরা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। তারইমধ্যে পঞ্জাবে জরুরি অবস্থা জারি করা হল।
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে চিন্তিত পাকিস্তান, পঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা পাক সরকারের।
বুধবার দুপুরে দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি শীর্ষ প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিরাও উপস্থিত থাকবেন বলেও খবর।
পাকিস্তান ও নেপাল সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী, ডিজিপি এবং মুখ্য সচিবদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে জরুরি বৈঠক করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহের ডাকা বৈঠকে যোগ দেবেন জম্মু-কাশ্মীর, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাত, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ডিজিপি, প্রধান সচিবরা।
অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, দেশের জন্য গর্বের মুহূর্ত।
'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। জানা গিয়েছে, ক্যাবিনেট মিটিংয়ে তিনি মন্ত্রীদের বলেন, 'আমাদের সকলের জন্য এটা অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত'।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে, মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা সফল অপারেশন সিঁদুরের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানালেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অমিত শাহ, রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের অপারেশন সিঁদুরে জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য এবং চার সহযোগীর মৃত্যু হয়েছে। একথা জানিয়েছে স্বয়ং মাসুদ।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাক সেনাঘাঁটি বা সাধারণ কোনও নাগরিককে নিশানা করা হয়নি। বায়ুসেনার মহিলা আধিকারিকরা বলেন, 'কোনও সাধারণ নাগরিকের ক্ষতি করা হয়নি। নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বিল্ডিংয়ে হামলা হয়েছে। সেনাঘাঁটিতে কোনও হামলা হয়নি। প্রযুক্তির সাহায্যে ওই ভবনগুলি ভাঙা হয়েছে।'
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং জানালেন কী ভাবে পাকিস্তানে হামলা চালানো হয়েছে। তাঁরা বলেন, '২৫ মিনিটে পাকিস্তানে মোট ন’টি ঘাঁটিকে নিশানা করা হয়েছে। সেগুলিকে পুরো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
৯টি জঙ্গি ঘাঁটি টার্গেট করা হয়েছিল। প্রেসি বিফ্রিংয়ে জানালেন বায়ুসেনার মহিলা আধিকারিক। হামলার তালিকায় রয়েছে বাহাওয়ালপুরের জইশ-ই-মহম্মদের সদরঘাঁটি, মুরিদকে লস্কর-ই-তৈবার ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র, কোটলিতে আত্মঘাতী জঙ্গি ও অনুপ্রবেশ প্রশিক্ষণকেন্দ্র, গুলপুরে রাজৌরি ও পুঞ্চে হামলার লঞ্চপ্যাড, সাওয়াইতে কাশ্মীর উপত্যকার হামলার সঙ্গে যুক্ত ঘাঁটি, সারজালে অনুপ্রবেশ পথ, বারনালায় অনুপ্রবেশ পথ, মেহমুনা, শিয়ালকোটে হিজবুল মুজাহিদিনের ঘাঁটি, মুজাফফরাবাদে লস্কর ও জইশের ক্যাম্প এবং মুজাফফরাবাদের শাওয়াই নাল্লা ক্যাম্পে লস্কর-ই-তৈবার ঘাঁটি।
ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার শিকারদের ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য অপারেশন সিঁদুর শুরু করা হয়েছিল। এই অভিযানে ৯টি জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে ধ্বংস করা হয়েছিল।
কাশ্মীরে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়াতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানালেন বিক্রম মিস্রি। তিনি বলেন, 'পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়। জেনেশুনে সেই দেশে লুকিয়ে রাখা হয় সন্ত্রাসবাদীদের। পহেলগাঁওয়ের হামলার পর দেশের নানা প্রান্তে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই তারপর ভারত সরকার কিছু পদক্ষেপ করে। কিন্তু তার পরেও পহেলগাঁওয়ের ঘটনার জন্য ন্যায়বিচার আবশ্যক ছিল। ওই ঘটনার পরেও পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে ঘটনার সঙ্গে যোগাযোগ অস্বীকার করছে। আমাদের কাছে খবর ছিল, ভারতের বিরুদ্ধে আগামী দিনেও হামলা হতে পারে। তাই এই প্রত্যাঘাত আবশ্যক ছিল। ভারত নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করেছে জবাব দিতে। সন্ত্রাসবাদের কাঠামোকে ধ্বংস করতেই এই হামলা। রাষ্ট্রপুঞ্জ গত ২৫ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের হামলার নিন্দা করে বলেছিল ন্যায়বিচার দরকার। ভারতের প্রত্যাঘাত তার ভিত্তিতেই।'
সন্ত্রাসবাদ রুখতে ভারত নিজের অধিকার প্রয়োগ করেছে। পহেলগাঁও হামলার জবাব দিয়েছে ভারত। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এটাই ভারতের পদক্ষেপ। দায়িত্বপূর্ণ ভাবে ভারত এই জবাব দিয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্তব্য বিদেশ মন্ত্রকের সচিব বিক্রম মিস্রির