সময়ের আগেই বুধবার সকাল সোয়া নটা নাগাদ ওড়িশার বালেশ্বর ও ধামড়ার মধ্যে উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ল্যান্ডফল সম্পূর্ণ হতে সময় লেগেছিল ৩ ঘণ্টা। ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার। তবে ইয়াসের সেই শক্তি এখন অতীত। বরং সুপার সাইক্লোন ইয়াসের ৬৩ ঘণ্টার জীবনচক্র বুধবার রাতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। শক্তি হারিয়ে ইয়াস এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। যার ফলে রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করছে হাওয়া অফিস।
IT IS LIKELY TO MOVE FURTHER NORTHWESTWARDS AND WEAKEN GRADUALLY INTO A DEEP DEPRESSION DURING NEXT 3-4 HOURS. pic.twitter.com/YxWGp81KlG
— India Meteorological Department (@Indiametdept) May 26, 2021
নিম্নচাপের প্রভাব ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে বাংলাতেও
বুধবার সকালে বালেশ্বরের দক্ষিণে ভূভাগে প্রবেশের পর ক্রমশ ঝাড়খণ্ডের দিকে এগিয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ভূভাগে প্রবেশের সময় ঝড়ের কেন্দ্রের কাছে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার। তারপরেই ক্রমশ শক্তি হারাতে শুরু করে ঝড়টি। ভূভাগে প্রবেশের ৯ ঘণ্টা পর শক্তি হারিয়ে সেটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। মৌসম ভবন জানাচ্ছে ড়িশা সীমান্ত টপকে বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়খন্ডে পাড়ি দেবে ইয়াস। ফলে আগামিকাল থেকে ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়জায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে প্রতিবেশী বাংলার ৯ জেলাতেও জারি করা হয়েছে সতর্কতা। ঝাড়খণ্ডে প্রবল বর্ষণের কারণে কংসাবতী সহ একাধিক নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করবে।
বাংলাতে বাড়তি সতর্কতা
ইয়াসের কারণে ইতিমধ্যেই ঝাড়খণ্ডে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। ধানবাদ-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় প্রবল বর্ষণ চলবে আগামী কয়েকদিন। আর এমন হলে অতি বৃষ্টিতে বাঁধের জল ছাড়তে শুরু করবে ঝাড়খণ্ড। তার জেরে বাংলায় একাধিক নদীতে জল বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে রাজ্যের সেচ দফতরকে আগে থেকেই সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ডে ইয়াসের তাণ্ডবের কারণে বাংলার ৯ জেলায় হাইঅ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম সহ একাধিক জায়গায় নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। তাতে নদী সংলগ্ন এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সেনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কলকাতায় ইয়াসের প্রভাব
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে কলকাতায় হাওয়ার সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। দিঘায় বাতাসের বেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। বুধবারের সঙ্গে বৃহস্পতিবারও উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। এদিকে ইয়াস শক্তি হারাতেই বুধবার দুপুর থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে কলকাতা। দুপুরেই ঝলমলে রোদ দেখা যায় আকাশে। যানচলাচলের জন্য রাস্তাঘাট খুলে দিয়েছে পুলিশ। খুলে দেওয়া হয়েছে উড়ালপুলগুলিও।