পহেলগাঁও হামলার সন্দেহভাজনকে স্কেচ দেখেই চিনতে পারলেন এক মহিলা পর্যটক। তাঁর দাবির ভিত্তিতেই গান্ডারবাল জেলার পুলিশ সন্দেহভাজন খচ্চর চালককে পাকড়াও করেছে।
'স্কেচের ওই দু'জনই আমাকে খচ্চরে চড়িয়েছিল', চাঞ্চল্যকর দাবি করেন ওই মহিলা। শুধু তাই নয়, সেই সময় ধর্ম নিয়ে বেশ কিছু সন্দেহজনক প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। রীতিমতো ছবি দেখিয়ে এমন দাবি করেন একতা তিওয়ারি নামের এক মহিলা। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের বাসিন্দা একতা। তাঁর দাবি, গত ২০ এপ্রিল তিনি বৈসরন ভ্যালি ঘুরতে গিয়েছিলেন। আর পাঁচটা পর্যটকের মতো তিনিও একটি খচ্চর ভাড়া করেন। সেই খচ্চর নিয়ে যে দুই ব্যক্তি হাঁটছিল, তাদের সঙ্গে স্কেচের ছবি হুবহু মিলে যাচ্ছে বলে দাবি মহিলা পর্যটকের।
একতার অভিযোগ, খচ্চর রাইডের সময়েই তাঁর বেশ অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ওই দুই ব্যক্তি তাঁকে ধর্ম সংক্রান্ত বেশ কিছু অদ্ভুত প্রশ্ন করে। ধর্ম, তীর্থযাত্রা, এমনকি তাঁর বন্ধুদের ধর্ম নিয়েও প্রশ্ন করা হয়।
একতা তাঁর মোবাইলে থাকা একটি ছবি এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশটও দেখাচ্ছেন। সেটা দেখে তাঁর বন্ধুরাও ওই সন্দেহভাজনদের চিনতে পেরেছেন। ছবিতে মেরুন রঙের জ্যাকেট-পায়জামা পরা এক ব্যক্তি। সেটাই সম্ভবত ওই স্কেচের সন্দেহভাজন, দাবি একতার।
ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন, সন্দেহজনক আলোচনা
একতা বলেন, তিনি কখনও আজমীর দরগা বা অমরনাথ যাত্রায় গিয়েছেন কিনা সেটাও জানতে চাওয়া হয়। তার উত্তরে একতা জানিয়েছিলেন যে, তিনি অমরনাথ যাত্রার জন্য রেজিস্ট্রেশন করালেও আর যাওয়া হয়নি।
তখন সেই সন্দেহভাজন তাঁকে বলে, ‘রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না, শুধু কোনদিন যাবেন বলে দেবেন, আমাদের লোকই আপনাকে নিতে আসবে।’ সেই শুনে একতা তার নম্বর চান। কিন্তু তখন সে জানায় যে নম্বর দিতে পারবে না। তার ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
‘প্ল্যান A ব্রেক ফেল’, ‘প্ল্যান B – ৩৫টি বন্দুক পাঠানো হয়েছে’
এর পরই নাকি ওই ব্যক্তির ফোন বেজে ওঠে। একতা বলেন, সেই ফোনের বার্তাবলাপেই তাঁর বেশ সন্দেহ হয়। খচ্চর চালক সম্ভবত কোনও কোড ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলছিল। তাঁর কথায়, ওই ব্যক্তি ফোনে বলছিল ‘প্ল্যান A ব্রেক ফেল, প্ল্যান B – ৩৫ বন্দুক পাঠানো হয়েছে, ঘাসের মধ্যে লুকানো আছে।’ একতা বুঝতে পারেন, এটি কোনও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তবে এরপরেই সন্দেহভাজন ব্যক্তি স্থানীয় ভাষায় কথা বলতে শুরু করে।
ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন
এরপরেই একতা তিওয়ারিকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি হিন্দু ধর্ম বেশি পছন্দ করেন নাকি ইসলাম? একতা জানান, তিনি দু'টো ধর্মকেই সম্মান করেন। তখন ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করে, তাঁর কতজন হিন্দু বন্ধু আর কতজন মুসলিম বন্ধু আছে। এরপর প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি কখনও কোরান পড়েছেন? একতা জানান, তিনি উর্দু জানেন না, তাই পড়েননি। তখন উত্তর আসে—‘সে তো হিন্দিতেও পাওয়া যায়।’ এসব কথা শুনেই তাঁর ভয় লাগছিল, দাবি একতার।
২০ এপ্রিলই হামলা হতে পারত?
একতার দাবি, ২০ এপ্রিলই হামলা হতে পারত। কিন্তু কোনও কারণে তা হয়নি। সেই দিন বৈসরন ভ্যালিতে কোনও নিরাপত্তা কর্মীদেরই তিনি দেখতে পাননি। একতার আরও দাবি, তাঁর বন্ধুরাও এই ঘটনায় বেশ ভয় পেয়েছেন। সেই কারণে তাঁরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে তাঁরাও সন্দেহভাজনদের চিনতে পেরেছেন বলে দাবি একতার।
খবরটি জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।