২০২১ সালে বাংলা নির্বাচনের সময় মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী ও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। অনেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে সেই সময় ডেলি প্যাসেঞ্জার বলেও কটাক্ষ করেছিলেন। বাংলা নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করতে পারেনি বিজেপি তবে তা সুদে-আসলে যেন পুসিয়ে দিল গুজরাত। নিজের রাজ্য গুজরাতে এবার রেকর্ড জয় পেল মোদী-শাহ জুটি। যা ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির আত্মবিশ্বাস যে আরও অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে তা বলাই বাহুল্য।
এবার গুজরাত নির্বাচনে ৩০টিরও বেশি জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঘুরে বেরিয়েছেন রাজ্যের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। তার সুফল ৮ তারিখ সকাল থেকেই ভোট বাক্সে প্রতিফলতি হতে থাকে। দেশের সবকটি এক্সিট পোলও বিজেপির জয়ের দিকেই নির্দেশ করছিল। তা সত্যি করেই গুজরাতে ২৭ বছরের সরকারে সবচেয়ে বড় জয় পেল বিজেপি। গুজরাতের এই ব্যাপক বিজয় উদযাপন করতে বৃহস্পতিবার সন্ধে সাতটা নাগাদ বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছন পিএম মোদী।
'আমরা ১ শতাংশে হেরেছি'
গুজরাটের জয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, জনতা জনার্দনের আশীর্বাদ অপ্রতিরোধ্য। হিমাচলে এত কম ব্যবধানে ফলাফল আসেনি। মোদী বলেন, আমরা ১ শতাংশেরও কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছি। আমরা হিমাচল সম্পর্কিত সমস্যাগুলি উত্থাপন করতে থাকব।
'বিনয়ের সঙ্গে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা'
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, "আমি জনতা জনার্দনের সামনে মাথা নত করছি। জনতা জনার্দনের আশীর্বাদ অপ্রতিরোধ্য। জেপি নাড্ডার নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, আজ আমরা চারদিকে তা অনুভব করছি। যেখানে ভারতীয় জনতা দল সরাসরি জিততে পারেনি, সেখানেও বিজেপির ভোট শতাংশা বিজেপির প্রতি জনতার স্নেহের সাক্ষ্য। আমি বিনীতভাবে গুজরাত, হিমাচল এবং দিল্লির জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।"
'UP-এর রামপুরে বিজেপি জিতেছে'
মোদী বলেছেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের উপনির্বাচনেও বিজেপির প্রতি এই অনুরাগ দেখা যাচ্ছে। ইউপির রামপুরে জয় পেয়েছে বিজেপি। বিহারের উপনির্বাচনে বিজেপির পারফরম্যান্স সামনের দিনগুলির স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। বিজেপি যে জনসমর্থন পেয়েছে তা নতুন ভারতের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। বিজেপি যে জনসমর্থন পেয়েছে তা ভারতের তরুণদের 'তরুণ চিন্তার' বহিঃপ্রকাশ।
'মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে, কারণ...'
মোদী বলেছেন, বিজেপি যে জনসমর্থন পেয়েছে তা হল দরিদ্র, শোষিত, বঞ্চিত, আদিবাসীদের ক্ষমতায়নের জন্য প্রাপ্ত সমর্থন। লোকেরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে কারণ বিজেপি চায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিটি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে প্রতিটি সুবিধা পৌঁছাতে। লোকেরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে কারণ বিজেপির কাছে দেশের স্বার্থে সবচেয়ে বড় এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। নরেন্দ্র-ভূপেন্দ্র গুজরাতে রেকর্ড ভাঙার রেকর্ডও ভেঙেছে জনতার জন্যই। বিজেপি যে জনসমর্থন পেয়েছে তা নতুন ভারতের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। বিজেপি যে জনসমর্থন পেয়েছে তা ভারতের তরুণদের 'তরুণ চিন্তার' বহিঃপ্রকাশ। বিজেপি যে জনসমর্থন পেয়েছে তা হল দরিদ্র, শোষিত, বঞ্চিত, আদিবাসীদের ক্ষমতায়নের জন্য প্রাপ্ত সমর্থন।
বিজেপির সদর দফতরে সভাপতি জেপি নাড্ডা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংরা। জেপি নাড্ডা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, " আজ একটি খুব ঐতিহাসিক দিন। আমি গুজরাতের জনগণকে, গুজরাতের শ্রমিকদের এবং হিমাচল প্রদেশ ও দিল্লির সকলকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। আজ একটি ঐতিহাসিক দিন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে, আমরা গুজরাতে রেকর্ড ভাঙা বিজয় অর্জন করেছি। প্রধানমন্ত্রী মোদী 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস' মন্ত্র নিয়ে যে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে গুজরাত ও দেশের মানুষের সেবা করেছেন তার ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি।"