scorecardresearch
 

Joshimath Sinking: প্রকৃতির রোষ, জোশীমঠের মতোই ধ্বংসের পথে উত্তরাখণ্ডের আরও ৫ শহর

মারণ ফাটলের জেরে বাসযোগ্য নয় বলে ঘোষিত হয়েছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ। এ বার একই রকম ফাটল দেখা দিল উত্তরাখণ্ডের কাওয়ারিগঞ্জ এলাকায়। একের পর এক বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বদ্রীনাথ ধামের পথে এই পবিত্র শহরের ৬৭৮টি ভবন অনিরাপদ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং ৮২টি পরিবারকে অস্থায়ীভাবে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement
উত্তরাখণ্ডেরও আরও ৫টি জায়গায় ফাটল। উত্তরাখণ্ডেরও আরও ৫টি জায়গায় ফাটল।
হাইলাইটস
  • মারণ ফাটলের জেরে বাসযোগ্য নয় বলে ঘোষিত হয়েছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ।
  • এ বার একই রকম ফাটল দেখা দিল উত্তরাখণ্ডের কাওয়ারিগঞ্জ এলাকায়।

মারণ ফাটলের জেরে বাসযোগ্য নয় বলে ঘোষিত হয়েছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ (Joshimath Sinking)। এ বার একই রকম ফাটল দেখা দিল উত্তরাখণ্ডের কাওয়ারিগঞ্জ এলাকায়। একের পর এক বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বদ্রীনাথ ধামের পথে এই পবিত্র শহরের ৬৭৮টি ভবন অনিরাপদ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং ৮২টি পরিবারকে অস্থায়ীভাবে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয়রা এর কারণ হিসেবে একাধিক ইমারত ও হোটেলকে দায়ী করছেন। এছাড়াও তপোবন বিষ্ণুগড় এনটিপিসি হাইডেল প্রকল্প-সহ প্রকল্পগুলিকে দায়ী করছেন।

তবে জোশীমঠ একা নয়। পার্বত্য রাজ্য উত্তরাখণ্ডে পাউরি, বাগেশ্বর, উত্তরকাশী, তেহরি গাড়ওয়াল এবং রুদ্রপ্রয়াগ একই পরিণতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা৷

তেহরি গাড়ওয়াল


তেহরি জেলার নরেন্দ্রনগর নির্বাচনী এলাকার আতালি গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া ঋষিকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেললাইন স্থানীয় মানুষের অসুবিধা বাড়িয়েছে। আতালি এক প্রান্তে প্রবল ভূমিধসের কারণে কয়েক ডজন বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে গ্রামের অপর প্রান্তে সুড়ঙ্গের ব্লাস্টিং কাজ চলায় ঘরবাড়িতেও ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। আতালির বাসিন্দা হরিশ সিং বলেন, যখন দিনে ও রাতে সুড়ঙ্গে ব্লাস্টিং করা হয়, তখন তার ঘর কাঁপতে থাকে। কোনও কোনও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার তাদের সন্তানদের নিয়ে রাতের অন্ধকারে বাইরে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন।

আরও পড়ুন: ভয়াবহ বিপর্যয় জোশীমঠে! ধসে তলিয়েছে মন্দির, ভাঙা বাড়ির সংখ্যা ৬০০ পার  

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, তেহরি এবং এসডিএম নরেন্দ্রনগরও সমস্ত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সাথে বৈঠক করেছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রশাসন প্রতি ছ’মাস পরপর বৈঠক করলেও কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। গ্রামবাসীরা এখন তাদের পুনর্বাসনের দাবি করছেন। আতালি ছাড়াও গুলার, ব্যাসি, কৌদিয়ালা এবং মালেথা গ্রামগুলিও ঋষিকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেললাইন প্রকল্পের কাজে ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
পাউরি। স্থানীয়রা বলছেন, রেল প্রকল্পের কারণে তাদের বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

Advertisement

ঋষিকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেললাইনের টানেল নির্মাণ কাজের কারণে শ্রীনগরের হেদাল মহল্লা, আশিস বিহার এবং নার্সারি রোডের বাড়িগুলিতে ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে। হেদাল মহল্লার বাসিন্দা শান্তা দেবী চৌধুরী বলেছেন, তাঁরা ভয়ে রয়েছেন।

আশিস বিহারের বাসিন্দা পিএল আর্য বলেছেন, রেলওয়ের কাজে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। যেকারণে কম্পনের কারণে বাড়িগুলিতে ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে। তাঁদের দাবি, সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং ম্যানুয়ালি কাজ করতে হবে যাতে তাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

আরও পড়ুন: Joshimath Sinking: ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জোশীমঠ শহর, মানুষের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিশোধ নিল প্রকৃতি


বাগেশ্বরের কাপকোটের খরবগড় গ্রাম আসন্ন বিপদের দিকে তাকিয়ে আছে। এই গ্রামের ঠিক উপরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের টানেলের উপরে পাহাড়ে গর্ত তৈরি করা হয়েছে এবং বেশ কিছু জায়গায় জল ছিটানোর ঘটনা ঘটছে। এতে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

কাপকোটেও ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। এই গ্রামে প্রায় ৬০টি পরিবার বাস করে৷ সুড়ঙ্গ থেকে জল নিষ্কাশনের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে, তবে কিছু সময় থেকে সুড়ঙ্গের মতো গর্ত তৈরি হতে শুরু করেছে, খারবাগগড়ের বাসিন্দা হায়াত সিং বলেছেন৷ গ্রামের উপরে একটি সুড়ঙ্গ আছে এবং রেবতী নদী বয়ে গেছে।


উত্তরকাশীর মাস্তাদি এবং ভাটওয়াড়ি গ্রামগুলি বিপদজনক স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে।

জোশীমঠের ঘটনায় মাস্তাদির গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ১৯৯১ সালে একটি ভূমিকম্প ভবনগুলিতে ফাটল ফেলেছিল। উত্তরকাশী জেলার পুরোটাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। জেলা সদর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামটি ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাড়ি-ঘরে ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক দেবেন্দ্র পাটওয়াল বলেছেন, মাস্তাদি গ্রামের ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা আবার করা হবে। তার পরই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।


ভাটওয়াড়ি গ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান জোশীমঠের মতোই। কারণ ভাগীরথী তার নীচে প্রবাহিত এবং গঙ্গোত্রী জাতীয় সড়ক ঠিক উপরে।  যে বিল্ডিংগুলি নিরাপদ ছিল সেগুলি এখন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। কারণ প্রতি বছর ফাটল বাড়ছে৷ গঙ্গোত্রী জাতীয় সড়কের একটি অংশ ২০১০ সালে নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল, এবং ক্ষতিগ্রস্ত ৪৯ পরিবারকে অস্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। প্রশাসন প্রত্যেককে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল। ভূতাত্ত্বিকদের কাছ থেকে প্রাথমিক ও বিস্তারিত জরিপের পর প্রশাসন ৪৯টি পরিবারকে স্থায়ী পুনর্বাসনের সুপারিশ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন পাঠালেও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মোট ২৬টি গ্রামকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা হল ভাটওয়াড়ি, অস্তাল, উদ্রি, ধনেটি, সউদ, কামদ, থান্ডি, সিরি, ধরকোট, কিয়র্ক, বারসু, কুজ্জান, পিলাং, জোদাভ, হুরি, ধসদা, দান্ডলকা, আগুদা, ভানকোলি, সেকু, বীরপুর, বাদেথি, কান্সি, বাদিয়ারেলের নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। পাহাড়ে ভূমিধসের সম্ভাবনা বিবেচনা করে বেশিরভাগ ট্র্যাক টানেলের মাধ্যমে হবে। টানেল নির্মাণের ফলে গ্রামের বাড়িঘরে মোটা ফাটল দেখা দিয়েছে।

একসময় মারোদা গ্রামে ৩৫ থেকে ৪০টি পরিবার ছিল, কিন্তু এখন মাত্র ১৫ থেকে ২০টি পরিবার অবশিষ্ট রয়েছে। রুদ্রপ্রয়াগের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ময়ুর দীক্ষিত বলেছেন, মারোদা গ্রামের বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে শীঘ্রই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বর্তমানে তাদের জন্য টিনের চালা তৈরি করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এসব শেডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।

আরও পড়ুন-জোশীমঠে বাড়ি-হোটেল ভাঙার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

 

Advertisement