তেলেঙ্গনার রাজধানী হায়দরাবাদের ঐতিহাসিক চারমিনার এলাকার একটি ভবনে আজ সকালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১৭ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুন লাগার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ হায়দরাবাদের চারমিনারগামী রাস্তার পাশে অবস্থিত একটি ভবনে হঠাৎ করেই ভয়াবহ আগুন লেগে যায়। বিষয়টি পুলিশ ও দমকল বিভাগকে জানানো হয়। খবর পেয়ে দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে এরই মধ্যে আগুনের কারণে অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। বলা হচ্ছে ৮ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। নিহতদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। জানা গেছে, ১১টি দমকল ইঞ্জিনের সাহায্যে অনেক পরিশ্রমের পর অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
গুলজার হাউসে আগুন লেগেছে বলে জানা যাচ্ছে। ভবনের প্রথম তলায় আগুন লেগেছে। আহতদের ওসমানিয়া, যশোদা (মালকাপেটা), ডিআরডিও এবং অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন যে শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে। পুলিশ সব দিক থেকেই মামলাটি তদন্ত করছে। ভবনে থাকা এসির শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। খবর পেয়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং রাজ্য বিজেপি প্রধান জি কিষাণ রেড্ডি এবং তেলেঙ্গনার মন্ত্রী পুন্নম প্রভাকর চারমিনারের কাছে গুলজার হাউসে পৌঁছেছেন। চারমিনারের প্রাক্তন বিধায়ক, এআইএমআইএম নেতা মুমতাজ আহমেদ খানও ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে
দমকলকর্মীদের মতে, চারটি পরিবারের কয়েক ডজন মানুষ এখনও এই ভবনে আটকা পড়েছে। এখন পর্যন্ত যাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে তিন শিশুসহ ১৪ জন রয়েছেন। তাদের সকলেই মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে,অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের মতে, এই ভবনে ৩০ জনেরও বেশি লোক বাস করত। তাদের বেশিরভাগই ভাড়াটে ছিলেন।
হঠাৎ স্ফুলিঙ্গ
পুলিশের মতে, ভবনে আগুন লাগার কারণ তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাতে প্রচণ্ড গরম ছিল এবং বাড়িতে লাগানো সমস্ত এসি চালু ছিল। এর ফলে ঘরের তারগুলি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ইতিমধ্যে, তারে আগুন ধরে যায় এবং তা থেকে উৎপন্ন স্ফুলিঙ্গ কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ রূপ নেয়। স্থানীয়দের মতে, আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে, মানুষ দৌড়ে বেরিয়ে আসার সুযোগও পায়নি।
হায়দরাবাদ অগ্নিকাণ্ডে রাজ্য সরকার নিহতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। বিস্তারিত তদন্ত করা হবে, জানিয়েছেন তেলেঙ্গানর মন্ত্রী পুন্নম প্রভাকর। মন্ত্রী বলেন, এটি একটি পুরনো নির্মাণ ছিল, প্রবেশ-প্রস্থানের পথ ছিল সরু, বেশিরভাগই অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। মৃতরা একই পরিবারের সদস্য।