বেঙ্গালুরুতে তৈরি স্কাইস্ট্রাইকার আত্মঘাতি ড্রোন হামলায় নাস্তানাবুদ পাকিস্তান। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK) ও পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতে এই আত্মঘাতি ড্রোনই ব্যবহার করা হয়।
পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার ও বুধবারের মাঝামাঝি সময়ে ভারত 'অপারেশন সিঁদুর' শুরু করে। তখন পাকিস্তানের উপর আছড়ে পড়ে একের পর এক স্কাইস্ট্রাইকার।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় সেনাবাহিনী আক্রমণের জন্য স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল এবং হ্যামার বোমের মতো শক্তিশালী অস্ত্র এবং আত্মঘাতী ড্রোন স্কাইস্ট্রাইকার মোতায়েন করেছে। এই ড্রোনটি অত্যন্ত নির্ভুলভাবে টার্গেটকে আঘাত করতে পারে। চোখের নিমেষে তা করে ফেলতে পারে এই শক্তিশালী তিন অস্ত্র। দেশে তৈরি এই দেশি স্কাইস্ট্রাইকারের আর কী কী বিশেষত্ব দেখুন।
এই ড্রোনটি বেঙ্গালুরুতে তৈরি হয়:
স্কাইস্ট্রাইকার ড্রোনটি বেঙ্গালুরুর আলফা ডিজাইন টেকনোলজিস দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। স্কাইস্ট্রাইকার হল একটি মনুষ্যবিহীন আকাশযান (UAV) আত্মঘাতী ড্রোন। যা অনেক দূর থেকে টার্গেটকে সঠিকভাবে সনাক্ত এবং ধ্বংস করতে সক্ষম। সাম্প্রতিক অভিযানের সময় এগুলি SCALP ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং হ্যামার বোমের ব্যবহার করা হয়।
ইজরায়েলের সঙ্গে পার্টনারশিপ:
আলফা ডিজাইন টেকনোলজিস ইসরায়েলের এলবিট সিস্টেমের সঙ্গে পার্টনারশিপে বেঙ্গালুরুতে এই ড্রোনটি তৈরি হয়েছে। আদানি ডিফেন্স সিস্টেমস অ্যান্ড টেকনোলজিস লিমিটেডের আলফা ডিজাইন টেকনোলজিসে ২৬ শতাংশ পার্টনারশিপ রয়েছে। এটি অনেক দিক থেকেই খুবই বিশেষ।
ভারী পে-লোড এবং দীর্ঘ পরিসর:
শত্রুকে সনাক্ত এবং আক্রমণ করার জন্য তৈরি, এই ড্রোনগুলি ৫-১০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে সরাসরি আকাশ থেকে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। এই ড্রোনটি কেবল আকারে ছোটই নয়, খুব নীরবে কাজ করে।
নীরব ঘাতক:
এলবিট সিস্টেমের মতে, স্কাইস্ট্রাইকার ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্রের মতো আক্রমণ করে। নীশব্দে, অদৃশ্য এবং আশ্চর্য আক্রমণকারী ড্রোন। বালাকোট হামলার পর ২০২১ সালে সেনাবাহিনী এই ড্রোনের বেশ কয়েকটি ইউনিট অর্ডার করেছিল, যার পরে এর অনেক ইউনিট ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মোতায়েন করা হয়েছে। এই আত্মঘাতী ড্রোনগুলি, যা কামিকাজে ড্রোন নামেও পরিচিত, তাদের সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘ পাল্লার আক্রমণের জন্য পরিচিত। সম্প্রতি ভারত 'অপারেশন সিঁদুর'- এই দেশীয় ড্রোনের শক্তি পাকিস্তান খুব কাছ থেকে অনুভব করেছে। এই ড্রোনটি কীভাবে কাজ করে তা ভিডিওর মাধ্যমে খবরের শেষে দেখতে পাবেন।
হারোপের বৈশিষ্ট্য:
আরেকটি ড্রোন যা খবরে আছে তা হল হারোপ। ইজরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (IAI) এর MBT মিসাইল ডিভিশন দ্বারা নির্মিত। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, যেকোনও একটি এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে হাওয়ায় উড়তে পারে। নির্দেশ পেলে সরাসরি টার্গেটকে আক্রমণ করে। এর প্রক্রিয়া এত দ্রুত, তীব্র যে শত্রু শ্বাস নেওয়ারও সুযোগ পায় না।
হারোপ হল ম্যান-ইন-দ্য-লুপ নিয়ন্ত্রণ মোড। এটি ব্যবহার করে দূরের কোনও মিশন অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। হারোপ অপারেটর বিমানের ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল (EO) সেন্সর দ্বারা সনাক্ত করা স্থির বা চলমান লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন করে। এটির ক্ষমতা ৬ ঘণ্টারও বেশি এবং এর পরিসীমা ২০০ কিলোমিটার।