‘নফরত কে বাজার মে মহব্বত কি দুকান খোলনে আয়া হু’, ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালীন এটাই ছিল রাহুল গান্ধীর কথা। গোটা দেশের যে যে প্রান্তে তিনি গিয়েছেন, সব প্রান্তেই এই ‘ভালবাসা’র কথাই বলে এসেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। এদিন কর্নাটকে জয়ের পর তাঁরই দাবি, সেই ‘ভালবাসা’ বিলোনোর প্রথম ফল তিনি পেলেন কর্ণাটক থেকে।
দক্ষিণের এই রাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় ফেরার পথে কংগ্রেস। কার্যত নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে বিজেপি। এ হেন সাফল্যের দিনও রাহুল গান্ধীর মুখে শোনা গেল সেই পুরনো কথা। বললেন, “কর্ণাটক মে নফরত কি বাজার বন্ধ হো চুকে হ্যায়, অর মহব্বতকে বাজার খুল চুকা হ্যায়।” যার বাংলা তরজমা করলে দাঁড়ায়, ‘কর্ণাটকে ঘৃণার বাজার বন্ধ হয়েছে। ভালবাসার দোকান খুলে গিয়েছে।’ প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বলছেন, “এটা কর্ণাটকের মানুষের জয়। কর্ণাটকে কংগ্রেস গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এটা সবার জয়। কর্ণাটকের জয়। আমরা নির্বাচনে কর্ণাটকের জনতার কাছে পাঁচটি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সেটা পূরণ করব।”
কর্ণাটকে কংগ্রেসের বিপুল জয়কে অনেকেই সেরাজ্যের হাত শিবিরের স্থানীয় নেতৃত্বের পরিশ্রমের ফল হিসাবে বর্ণনা করছেন। কংগ্রেস অবশ্য শুরু থেকেই এই জয়ের কৃতিত্ব রাহুল এবং ভারত জোড়ো যাত্রাকে দিতে চাইছে। ভোট ঘোষণার ঠিক মাস ছয়েক আগে দক্ষিণের রাজ্যটিতে নিজের যাত্রা নিয়ে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের ‘পোস্টার বয়’। টানা ২২ দিন রাজ্যের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত চষে বাড়িয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের দাবি, রাহুলের সেই যাত্রা যে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করেছে তাতে সন্দেহ নেই। দলে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আবহ ছিল, সেটাও অনেকাংশে মেটানো সম্ভব হয়েছে ওই যাত্রার সুবাদেই।
এদিন বিপুল জয়ের পরই আকবর রোডের উঠোনে চলে আসেন রাহুল। পরনে সাদা হাফ স্লিভ পোলো টি শার্ট। মুখে এক গাল কাঁচা পাকা দাঁড়ি। কর্নাটকের জয় নিয়ে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় রাহুল বলেন, “বিজেপি পুঁজিপতিদের সঙ্গে নিয়ে লড়েছিল। আমরা গরিব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লড়েছি। কর্নাটকের জয়ে একটা ব্যাপার স্পষ্ট। তা হল মানুষ ঘৃণার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কর্নাটকে ঘৃণার বাজার বন্ধ হয়ে গেছে, প্রেম ভালবাসার দোকান খুলেছে”।
কর্নাটকের জয় কংগ্রেসের সমষ্টিগত জয়। ডিকে শিবকুমার, সিদ্দারামাইয়া বিজেপির বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়াইয়ের যে মেজাজ গত পাঁচ বছর ধরে দেখিয়েছেন, তার বিকল্প নেই। কিন্তু তা যেমন ঠিক, তেমনই এও ঠিক যে পিছনে থেকে রাহুল তথা গান্ধী পরিবার এই লড়াইয়ে সমস্ত শক্তি ঢেলে দিয়েছিল। রাহুল গান্ধী তাঁর ভারতজোড়ো যাত্রার সময়ে দীর্ঘ দিন কাটিয়েছেন কর্নাটকে। সেখানকার কর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন। ফলে কর্নাটকের জয়ে কিছু সাফল্য তাঁরও রয়েছে।
আরও পড়ুন-'সাগরদিঘি অক্সিজেনের' পর কর্ণাটকেও জয়, বাংলায় ঢাক পিটিয়ে সেলিব্রেশন কংগ্রেসের