বউমা গর্ভধারণ করতে পারছিলেন না। শারীরিক সমস্যা ছিল তাঁর। সেই কারণে তাঁকে খুন করল শ্বশুর ও শাশুড়ি। যদিও খুনকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। তবে পুলিশ পর্দাফাঁস করে দেয়। মৃতার স্বামীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই খুনে প্ররোচনা দিয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের।
মৃতার নাম রেণুকা সন্তোষ (৩০)। পেশায় চিকিৎসক রেণুকার সঙ্গে কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলার যুবক পেশায় ইঞ্জিনিয়র সন্তোষের বিয়ে হয় ২০২০ সালে। বিয়ের প্রথম দিকে সব ঠিকই ছিল। তবে কয়েক বছর যাওয়ার পরও রেণুকা সন্তান ধারণ করতে পারেননি। তা নিয়ে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। প্রতিবেশীদের দাবি, মাঝে মাঝে ওই গৃহবধূর উপর মানসিক নির্যাতন চালাত সন্তোষ ও তার বাবা-মা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৮ মে রেণুকাকে পরিকল্পনামাফিক খুন করে তাঁর শ্বশুর ও শাশুড়ি। তাদের নাম যথাক্রমে জয়শ্রী এবং কামান্না। সেদিন জয়শ্রীর সঙ্গে বাইকে চড়ে মন্দিরে যাচ্ছিলেন রেণুকা। তখন চলন্ত বাইক থেকে রেণুকাকে ফেলে দেওয়া হয়। তারপর পাথর দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করা হয়। কামান্না শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। গোটা ঘটনাকে দুর্ঘটনা দেখানোর জন্য রেণুকাকে বাইকে বেঁধে টেনে হিঁচড়ে ১০০ মিটার মতো নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর কামান্না স্থানীয় থানায় খবর দেয়। জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে তাদের বউমা। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দেহের ময়নাতদন্তও করা হয়। তদন্তের পর পুলিশ নিশ্চিত হয়, পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে চিকিৎসককে। রেণুকা মারা গেলেও একই বাইকে থাকা জয়শ্রীর কেন আঘাত লাগেনি সেই প্রশ্ন করা হয় অভিযুক্তদের। তাতে ঘাবড়ে যায় তারা। তখনই সত্যি কবুল করে নেয়।
বেলাগাভির পুলিশ সুপার ভীমশঙ্কর জানান, পুলিশ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত তথ্য হাতে পায়। অভিযুক্তরা স্বীকার করে নিয়েছে, ছেলে সন্তোষ রেণুকাকে খুনের জন্য প্ররোচিত করেছিল।
তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, রেণুকাকে ডিভোর্স না দিয়েই আর একজনকে বিয়ে করেছিল সন্তোষ। যা জানতে পেরেছিলেন রেণুকা। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তিও হত। তবে রেণুকা শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। তিনি সেখান থেকে বাপের বাড়িতে যেতে চাননি। আর তাই অসহ্য হয়ে উঠেছিল সন্তোষের কাছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, সন্তোষের দ্বিতীয় স্ত্রী এখন গর্ভবতী। তাই সন্তোষ ডিভোর্স চেয়েছিল। কিন্তু রেণুকা নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
ধৃত তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা এবং নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। রেণুকার মৃতদেহ তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়েছে।