দিল্লির মৌসম বিভাগ জানিয়ে দিয়েছে মেয়ের শুরুতেই দেশের নানা প্রান্তে বৃষ্টি চলবে। আপাতত তাপপ্রবাহের কোনও সতর্কতা নেই। বাংলাতেও দেওয়া হয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। উত্তরপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে রয়েছে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত। এর জেরেই সাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকছে বাংলায়। আর তাতেই রাজ্যজুড়ে বজ্র বিদ্যুৎসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকদিন এই আবহাওয়াই থাকবে, সেই সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গে রয়েছে শিলা বৃষ্টির সতর্কতাও। উত্তরবঙ্গেও ভারী বৃষ্টি হবে।
হাওয়া অফিসের আপাতত যা পূর্বাভাস তাতে মে-র প্রথম দু’সপ্তাহে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা নেই বাংলায়। তবে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে ফের তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গ। এদিকে সম্প্রতি একটি খবর একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। জানা যাচ্ছে, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিষুব রেখার কাছে সুমাত্রা সাগর বা আন্দামান সাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘মোচা’। নামটি রেখেছে ইয়েমেন।
প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরের যে অংশ বাসা বাঁধবে, সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা প্রবল। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আবহাওয়ার সংস্থা ও বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে বাসা বাঁধতে পারে ঘূর্ণিঝড়। আর সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, এই মে মাসে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় বাসা বাঁধলে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সরকারিভাবে কোনো পূর্বাভাস এখনও মেলেনি। ভারতের মৌসম বিভাগ বা আলিপুর আবহাওয়া দফতর এই সংক্রান্ত কোনো সম্ভাবনার কথা এখনও ব্যক্ত করেনি।
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কয়েকটি ভিনদেশি আবহাওয়া সংস্থা ও কিছু বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা। আলিপুর হাওয়া অফিসের আবহবিদ সৌরিশ বন্দ্যোপাধ্যায় আজতক বাংলাকে জানিয়েছেন, ওই সময় একটি স্টিস্টেম তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ঠিকই, তবে সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলার মত পরিস্থিতি নেই। " আবহবিদরা জানিয়েছেন, আরও কিছুদিন না গেলে এই ঝড়ের ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত এই সময়ে বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোনিক সার্কুলেশন তৈরি হয়। তা উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। অতীতে মে মাসেই বাংলার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার বহু উদাহরণ রয়েছে। পাশপাশি ওড়িশা ও বাংলাদেশের উপকূলেও আছড়ে পড়েছে অনেক ঝড়। আয়লা-আম্ফানের স্মৃতি এখনও টাটকা, তেমনই ফণী ও ইয়াসের ধাক্কাও কম আসেনি। ২০২০ সালের মে মাইসেই হানা দিয়েছিল আমফান, ২০০৯ সালে আয়লার তাণ্ডবও অনেকের স্মরণে রয়েছে। এছাড়াও ফণী বা যশের মতো ঘূর্ণিঝড়ও আছড়ে পড়েছে বিভিন্ন বছরে। এখন দেখার সত্য়িই ওই সময় এবছর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় কিনা। আর হলে বাংলায় তার কতটা প্রভাব পড়ে?