অনুপ কুমার নাইয়ার। তিন বছর ধরে বন্দি ছিলেন নিজেরই ফ্ল্যাটে। অবশেষে তাঁকে উদ্ধার করল একটি এনজিও। নবি মুম্বইয়ের বাসিন্দা সেই ব্যক্তি পেশায় ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন তিনি। বছর তিনেক আগে স্বেচ্ছ্বায় নিজেকে ঘরবন্দি করে নেন। সেই থেকে বাড়ি থেকে বেরোননি।
জুইনগরের সেক্টর ২৪-এর ঘরকুল সোসাইটিতে থাকতেন অনুপ। বছর তিনেক আগে পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। আর পাঁচজনের মতো অফিস যেতেন। স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেন। কিন্তু পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্যুর পর বদলে যায় তাঁর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় ২০ বছর আগে আত্মহত্যা করেছিলেন অনুপের দাদা। তারপর বাবা ও মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তবে কয়েক বছর আগে তাঁরাও মারা যান। এতেই অনুপ ভেঙে পড়েন। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ওই ব্যক্তি একা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। বাইরের জগতের সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
তাহলে এই তিন বছর একা কীভাবে থাকতেন সেখানে? ওই আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করতেন অনুপ। প্রয়োজনীয় জিনিস আনিয়ে নিতেন। কিন্তু বাইরে পা রাখতেন না। তাতে সন্দেহ হয় আশপাশের লোকজনের। তাঁরা একটি এনজিও-কে খবর দেন।
এরপর এনজিও অনুপের ফ্ল্যাটে প্রবেশ করলে গোটা ঘটনা সামনে আসে। দেখা যায়, গোটা ফ্ল্যাট আবিন্যস্ত, নোংরা, এখানে সেখানে পড়ে জঞ্জাল। সেখানেই দিন কাটাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। তাঁর পায়ে গভীর ক্ষতও রয়েছে। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত ওই এনজিও-র একটি আশ্রমে রয়েছেন তিনি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি এখনও ডিপ্রেসড। তাঁর শরীরের অবস্থাও ভালো নয়। চিকিৎসা চলছে। এদিকে অনুপ বলেন, 'আমার মা-বাবা নেই। দাদা মারা গেছে। আমার কোনও বন্ধু নেই। শরীরের অবস্থা ভালো নয়। আমার আর বাঁচার আশা নেই।'