দেশে ক্রমশই বাড়ছে আত্মহত্যার সংখ্যা। এনসিআরবি-র (NCRB) রিপের্ট অনুযায়ী ২০২১ সালে সারা দেশে ১.৬৪ লক্ষরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এই সংখ্যাটি ২০২০ সালের তুলনায় ৭.২ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ১.৫৩ লক্ষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানাচ্ছে, পৃথিবীতে প্রতিবছর ৭ লক্ষরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন। আরও প্রচুর মানুষ আছেন যাঁরা আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। WHO-এর মতে, ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ আত্মহত্যা।
ভারতে প্রতিবছরই আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়ছে। গতবছর ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৩৩ জন মানুষ আত্মহত্যা করেন। প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ মানুষের মৃত্যু আত্মহত্যার কারণে হয়। এনসিআরবি জানাচ্ছে ২০১৭ সালে ১.২৯ লক্ষ মানুষ আত্মহত্যা করেন। অর্থাৎ ২-২১৭ থেকে ২০২১-এর মধ্যে আত্মহত্যার পরিমান ২৬ শতাংশ বেড়েছে।
আত্মহত্যার কারণ
আত্মহত্যার বিভিন্ন কারণ হতে পারে (Suicide Reasons In India)। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হতাশা ও মানসিক চাপের কারণে আত্মহত্যার পরিমান বাড়ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণেও অনেক সময় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। মদ্যাকথা, যখন মানুষ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও কারণ পায় না তখনই বেছে নেয় আত্মহত্যাকে। এনসিআরপিব-র রিপোর্টে আত্মহত্যার কারণের বিষয়ে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী পারিবারক সমস্যা, ক্যান্সার এইডসের মতো রোগের কারণে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। গতবছর ৩৩ শতাংশ আত্মহত্যা পারিবারিক সমস্যা এবং ১৯ শতাংশ আত্মহত্যা রোগের কারণে ঘটেছিল।
রিপোর্টে ৫টি প্রধান বিষয়
১. দেশে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। গতবছর মহারাষ্ট্রে আত্মহত্যা করেছেন ২২.২০৭ জন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু, সংখ্যাটা ১৮,৯২৫। মধ্যপ্রদেশ রয়েছে তৃতীয় স্থানে। সেখানে আত্মহত্যার সংখ্যা ১৪,৯৬৫। রাজধানী দিল্লিতে এই সংখ্যাটা ২,৮৪০।
২. ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার পরিমান ছিল ৫৬,৫৪৩। ৩০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে এই সংখ্যাটা ছিল ৫২,০৫৪। ৪৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আত্মহত্যা করেন ৩০,১৬৩ জন। আর ১৮ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১০,৭৩২টি।
৩. আত্মঘাতীদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ মানুষ এমন ছিলেন যাঁদের বার্ষিক আয় ১ লক্ষ টাকার কম। আবার ৩২ শতাংশ মানুষ এমন ছিলেন যাঁদের বার্ষিক আয় ছিল ১ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে।
৪. যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন তাঁদের মধ্যে ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ ছিলেন দিনমজুর, ১৪ শতাংশের বেশি ছিলেন গৃহবধূ, ১২ শতাংশের বেশি এমন মানুষ ছিলেন যাঁরা নিজেদের কাজ করতেন এবং ৮.৪ শতাংশ ছিলেন কর্মহীন।
৫. আত্মঘাতীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ মানুষ দশম বা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ১১ শতাংশ ছিলেন নিরক্ষর। আর ৪.৬ শতাংশ মানুষ এমন ছিলেন যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা তার থেকে বেশি।
আরও পড়ুন - শুধ স্টাইলের জন্য নয়, হিরে পরুন রাশি অনুযায়ী