scorecardresearch
 

ভারতের এই ৫ মিসাইলের পাঞ্চ বিপজ্জনক, ভিডিও পোস্ট করে প্রশংসা রাশিয়ান মিডিয়ার

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর রাশিয়া সফরে যাবেন। তাঁর সফরের আগে, রাশিয়ান মিডিয়া সংস্থা স্পুটনিক তাদের এক্স হ্যান্ডেলে ভারতের পারমাণবিক পাঞ্চের ভিডিও পোস্ট করেছে।

Advertisement
ভারতের এই ৫ পরমাণু মিসাইলের পাঞ্চ খুব বিপজ্জনক, ভিডিও পোস্ট করে প্রশংসা রাশিয়ান মিডিয়ার ভারতের এই ৫ পরমাণু মিসাইলের পাঞ্চ খুব বিপজ্জনক, ভিডিও পোস্ট করে প্রশংসা রাশিয়ান মিডিয়ার
হাইলাইটস
  • ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর রাশিয়া সফরে যাবেন
  • রাশিয়ান মিডিয়া সংস্থা স্পুটনিক তাদের এক্স হ্যান্ডেলে ভারতের পারমাণবিক পাঞ্চের ভিডিও পোস্ট করেছে

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর রাশিয়া সফরে যাবেন। তাঁর সফরের আগে, রাশিয়ান মিডিয়া সংস্থা স্পুটনিক তাদের এক্স হ্যান্ডেলে ভারতের পারমাণবিক পাঞ্চের ভিডিও পোস্ট করেছে। ক্যাপশনে লেখা আছে 'ভারতের সেরা ৫ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা একটি পাঞ্চ প্যাক... তাদের সকলকে অ্যাকশনে দেখুন'। আপনারাও জেনে নিন সেই ৫টি মিসাইল কী, যার প্রশংসা করেছে রাশিয়া।

অগ্নি-৫ ICBM

অগ্নি-৫ (Agni-V) আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ডিআরডিও এবং বিডিএল যৌথভাবে তৈরি করেছে। এর পরিসীমা ৫০০০ কিলোমিটারেরও বেশি। ওজন ৫০ হাজার কেজি। এটি ১৭.৫ মিটার দীর্ঘ। এর ব্যাস ২ মিটার। এটিতে ১৫০০ কেজি ওজনের পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১ সেকেন্ডে ৮.১৬ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। অর্থাৎ এটি ২৯,৪০১ কিমি/ঘণ্টা বেগে শত্রুকে আক্রমণ করে। এটি রিং লেজার জাইরোস্কোপ ইনর্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম, জিপিএস, নাভিক স্যাটেলাইট গাইডেন্স সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত। লঞ্চের জন্য গ্রাউন্ড মোবাইল লঞ্চার ব্যবহার করা হয়। এটি একটি ট্রাকে লোড করা যেতে পারে এবং সড়কপথে যে কোনও স্থানে নিয়ে যাওয়া যায়।

ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জে রয়েছে পুরো এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার কিছু অংশ। এই ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে বিশেষ জিনিস হল এর MIRV প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে একটি অস্ত্রের পরিবর্তে ক্ষেপণাস্ত্রে বসানো ওয়ারহেডে একাধিক অস্ত্র বসানো যাবে। অর্থাৎ একটি মিসাইল একসঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। MIRV প্রযুক্তি অর্থাৎ অগ্নি-৫ মিসাইলের একাধিক ওয়ারহেডের কথা বলা হচ্ছিল। মিসাইলের নাকে ২ থেকে ১০টি অস্ত্র বসানো যাবে। তার মানে একটি ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে ২ থেকে ১০টি বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে কয়েকশো কিলোমিটার জুড়ে।

ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল (BRAHMOS Supersonic Cruise Missile)

Advertisement

ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ভারতের প্রথম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা ভারতের তিনটি সেনাই ব্যবহার করে। এর অনেক রূপ পাওয়া যায়। তাদের ফায়ারপাওয়ার পরিসীমাও আলাদা। Sukhoi-30 MKI ভারতীয় বিমান বাহিনীর সবচেয়ে বিপজ্জনক যুদ্ধবিমানগুলির মধ্যে একটি। এই বিমানটি শব্দের দ্বিগুণ গতিতে উড়ে। মানে ২১২০ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগ। এর পরিসীমা ৩০০০ কিলোমিটার। এখন যদি এই বিমান থেকে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন এয়ার লঞ্চ সংস্করণ ছোড়া হয়, তাহলে শত্রু ধ্বংস হয়ে যাবে।

ভারতীয় বায়ুসেনার ব্রহ্মস মিসাইলের পাল্লা ৫০০ কিলোমিটার। ভবিষ্যতে অন্যান্য যুদ্ধবিমানেও এটি অ্যাটাচের পরিকল্পনা রয়েছে। ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র বাতাসে তার পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম। এমনকি চলমান লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে। এটি ১০ ​​মিটার উচ্চতায় উড়তে সক্ষম, যার মানে শত্রু রাডার এটি ধরতে পারবে না। এটি অন্য যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। একে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব। ব্রহ্মস মিসাইল আমেরিকার টমাহক মিসাইলের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে ওড়ে। যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণ করা ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ২০০ কেজি ওয়ারহেড বহন করতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৩২১কিমি।

K-4 SLBM

K-4 SLBM ক্ষেপণাস্ত্রের সীমা ৩৫০০ কিমি। অর্থাৎ স্থলভাগে পরিস্থিতি ভাল না হলে ডুবোজাহাজ থেকেই এই মিসাইল দিয়ে আক্রমণ করা যেতে পারে। K-4 SLBM হল একটি মিডিয়াম রেঞ্জের সাবমেরিন-লঞ্চড পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি নৌবাহিনীর অরিহন্ত শ্রেণির সাবমেরিনে রয়েছে। এর আগে ভারতীয় নৌবাহিনী K-15 ব্যবহার করত। কিন্তু K-4 অনেক ভাল ও নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির ওজন ১৭ টন এবং লম্বায় ৩৯ ফুট। এর ব্যাস ৪.৩ মিটার। এটি ২৫০০ কেজি ওজনের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উড়তে সক্ষম। এর অপারেশনাল রেঞ্জ ৪০০০ কিলোমিটার।

পৃথ্বী SRBM

পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রের স্ট্রাইক রেঞ্জ ৩৫০ কিলোমিটার। এর উপরের অংশে ৫০০ থেকে ১০০০ কেজি প্রচলিত বা পারমাণবিক অস্ত্র বহন করা যেতে পারে। এটি শত্রুর অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রযুক্তিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। পৃথ্বী-২ মিসাইল ভারতের সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এবং হালকা। এর ওজন ৪৬০০ কেজি।

কে-১৫ সাগরিকা

কে-১৫ সাগরিকা ভারতের অন্যতম পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, কে-১৫ সাগরিকা পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম। সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৭৫০-১৫০০ কিলোমিটার। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এই ক্ষেপণাস্ত্রের দুটি ভেরিয়েন্ট রয়েছে। প্রথমটি ভূমি থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্র। দ্বিতীয়টি একটি সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এ ছাড়া দুটি ভেরিয়েন্ট তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে, এটি শুধুমাত্র ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে আছে। এটি ডিআরডিও দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে। এর গতি ৯২৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। যা এটিকে অত্যন্ত প্রাণঘাতী করে তোলে। এর দ্বিতীয় বিপজ্জনক ল্যান্ড ভেরিয়েন্ট হল শৌর্য। এটি একটি হাইপারসনিক সারফেস-টু-সারফেস মিডিয়াম রেঞ্জের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। শৌর্য প্রচলিত এবং পারমাণবিক অস্ত্র উভয়ই বহন করতে পারে। এটি ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। এর রেঞ্জ ৭০০ থেকে ১৯০০ কিমি। এর গতি ঘণ্টায় ৯,৫০০ কিমি। এটি ২০০ থেকে ১০০০ কেজি ওজনের অস্ত্র বহন করতে পারে। এই দুটি ক্ষেপণাস্ত্রই ভারতের ইন্ডিয়ান রিজিওনাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমে কাজ করে। এর অর্থ হল শত্রুরা জানার আগেই হামলা হয়ে যাবে।

Advertisement