scorecardresearch
 

Sunil Bansal: BJP-র UP জয়ের সেনাপতিকে বাংলার দায়িত্ব, কে সুনীল বনসল?

সূত্রের খবর, বিজেপির অন্দরে গুঞ্জন চলছিল, সুনীল বনসলকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। টানা ৮ বছর উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সংগঠন সামলে সুনীলও চাইছিলেন, তাঁকে অন্য রাজ্যে পাঠানো হোক।

Advertisement
সুনীল বনসল সুনীল বনসল
হাইলাইটস
  • প্রশান্ত কিশোরের রণকৌশলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর লক্ষ্য বিজেপি-র
  • উত্তরপ্রদেশে কীভাবে সফল সুনীল?

Sunil Bansal in West Bengal: দীর্ঘ ৮ বছর উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) সংগঠনের দায়িত্ব সামলেছেন। সাফল্যের খতিয়ান ঈর্ষনীয়। উত্তরপ্রদেশ যোগী-রাজ কায়েমের কারিগরি তিনি। এহেন সুনীল বনসলকে (Sunil Bansal) এবার পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দিল বিজেপি (BJP)। পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) ছাড়াও তেলঙ্গানা ও ওড়িশার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বও সুনীল বনসলকে সঁপেছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)।

সূত্রের খবর, বিজেপির অন্দরে গুঞ্জন চলছিল, সুনীল বনসলকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। টানা ৮ বছর উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সংগঠন সামলে সুনীলও চাইছিলেন, তাঁকে অন্য রাজ্যে পাঠানো হোক। বিজেপি-র সবচেয়ে দক্ষ সংগঠনের স্ট্র্যাটেজিস্টকে দেশের সেই সব রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হল, যেখানে বিজেপি-র সংগঠন সবচেয়ে দুর্বল, বাংলা, ওড়িশা ও তেলঙ্গানা।

প্রশান্ত কিশোরের রণকৌশলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর লক্ষ্য বিজেপি-র

পশ্চিমবঙ্গে মমতা-ঝড়ে বিধানসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। তেলঙ্গানায় বিজেপি আশা করছে, কেসিআর-কে নাড়িয়ে দিতে পারে আবার ওড়িশায় বিজেপির সংগঠন আপাত মজবুত হলেও নবীন পট্টনায়েকের সামনে টিকতে পারছে না।

আরও পড়ুন: বাংলায় BJP-র নয়া পর্যবেক্ষক সুনীল, যোগীকে জেতানোর কারিগর

পূর্বের দুই রাজ্যের সঙ্গে দক্ষিণের রাজ্যের পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলকে করার বড় কারণ হল, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অশ্বমেধ রথ থামানোর কৌশলের নীলনকশা পেশ করছিলেন। যাতে পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অর্থাৎ কেরল উপকূলীয় রাজ্যগুলি একত্রিত হয়ে একটি রাজনৈতিক ব্লক তৈরি করে, তাহলে মোদীর ২৪-এর রথ থামানো যাবে।

সুনীল বনসল
সুনীল বনসল

বিরোধীদের এই ফর্মুলাকে টক্কর দিতে দলের সবচেয়ে দক্ষ সংগঠক সুনীল বনসলকে ৩ রাজ্যের দায়িত্ব দিল। উত্তরপ্রদেশের মতো এই ৩ রাজ্যেও বিজেপির সমীকরণ বদলে দিতে পরিশ্রম করবেন সুনীল। বাংলা, ওড়িশা ও তেলঙ্গানায় ২০২৪ সালে আসন বাড়ানোর দায়িত্ব এবার সুনীলের কাঁধে। বাংলা ও ওড়িশার রাজনীতিতে বিজেপি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলেও ভোটে জেতার পরিস্থিতিতে আসতে পারেনি এখনও। এখানেই অ্যাসিড টেস্ট সুনীলের।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে কীভাবে সফল সুনীল?

অমিত শাহের ফর্মুলাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে সুনীল বনসল উত্তরপ্রদেশের জমিতে জাতীয় আধার বিস্তার করেছেন, ওবিসি এবং দলিতদের যুক্ত করেছেন, তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব দিয়েছেন, এই শ্রেণিগুলি থেকে নেতা ও কর্মী তৈরি করেছেন এবং তাঁদের বিপুল সংখ্যককে সংগঠনে জায়গা দিয়েছেন। যার জেরে উত্তরপ্রদেশে এত বড় দল যে, আজ অন্য সব দল বামন।

শুধু সাংগঠনিক দক্ষতাই নয়, অন্যান্য দলের শক্তিশালী নেতাদের ভাঙার কৌশল, তাঁদের বিজেপিতে যুক্ত করা এবং অন্যান্য দল থেকে আনা নেতাদের যথাযথ সম্মান ও প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার কৌশল বিজেপিকে প্রায় অজেয় করে তুলেছে উত্তরপ্রদেশে। ২০১৭ সালে স্বামীপ্রসাদ মৌর্য- ওমপ্রকাশ রাজভর, অনুপ্রিয়া প্যাটেল, দারা সিং চৌহান, ধরম সিং সাইনির মতো নেতাদের আনার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন সুনীল। যদিও তাঁদের অনেকেই ২০২২ সালের নির্বাচনের আগে বিজেপি ছেড়েছিলেন কিন্তু কেউ এর জন্য সুনীল বনসল দায়ী বলে মনে করেননি।

যোগী আদিত্যনাথ ও সুনীল বনসল

অন্যান্য দলের শক্তিশালী নেতাদের, বিশেষ করে যাদের জনভিত্তি আছে, বিজেপিতে আনার ক্ষেত্রে একজন ওস্তাদ বলে মনে করা হয় সুনীলকে। দলের বড় নেতাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও, সুনীল বনসল ২০২২ সালের নির্বাচনের পরে আসন পেতে পারে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে যোগ করতে থাকেন। আজ তক-কে সুনীল বনসাল বলেছিলেন, এই নির্বাচনে মোট ২৯ জন বিরোধী নেতা তাঁর তালিকায় ছিলেন যাঁদেরকে অন্যান্য বিরোধী দলগুলি থেকে বিজেপিতে আনতে হয়েছিল। ২২ নেতা আনতে সফল।

সুনীল বনসলকে সংগঠনের ওস্তাদ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় কারণ তিনি সংগঠনকে পরিসংখ্যানের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিলেন, কোটি কোটি নতুন কর্মী তৈরি করার তাঁর স্টাইল, তৃণমূল স্তরের কর্মীদের কথা শোনা, নির্বাচনী কৌশলের সঙ্গে তাঁদের যুক্ত করা। সুনীলের কাজের ধরন অনন্য।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশে যান সুনীল বনসল, যখন অমিত শাহ সেই রাজ্যে নিজের জন্য আরএসএস থেকে একজন বন্ধু চেয়েছিলেন। কারণ অমিত শাহ সেই সময় ছিলেন উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির নির্বাচনী সাফল্যের কৌশলের বাস্তবায়নে সুনীল বনসলের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে, যখন বিজেপি ৭৩টি আসন জিতেছিল, তখন তাঁকে পুরস্কার হিসাবে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সংগঠন সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল।

বনসল উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি শহুরে দল হিসেবে পরিচিত বিজেপি সংগঠনের কাঠামোতে পরিবর্তন আনেন। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৩২৫টি আসনে বিপুল জয়ের কৌশলগুলির সাফল্যের ক্ষেত্রেও সুনীল বনসালের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল। এর পরে, তিনি  ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২২-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০১৪, ২০১৭, ২০১৯ এবং ২০২২ সালের নির্বাচনের পাশাপাশি, তিনি পঞ্চায়েত এবং পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের কৌশলবিদদের একজন ছিলেন।

Advertisement