Ambubachi 2025- Kamakhya- Tarapith Temple: অম্বুবাচীর সময় বন্ধ থাকে সব সতীপীঠ, কামাক্ষ্যা! শুধু তারাপীঠ খোলা কেন?

হিন্দু ধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ বাৎসরিক উৎসব অম্বুবাচী। এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শাস্ত্রের নানা কাহিনি। অম্বুবাচী, বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতী বলেও পরিচিত। ভারতের একাধিক স্থানে অম্বুবাচী উৎসব, রজঃউৎসব নামেও পালিত হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, ঋতুকালে মেয়েরা অশুচি থাকেন। হিন্দু শাস্ত্রে ও বেদে পৃথিবীকে মা বলা হয়ে থাকে। একই ভাবে মনে করা হয় পৃথিবীও এই সময়কালে অশুচি থাকে। এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শাস্ত্রের নানা কাহিনি।  

অম্বুবাচী তিন দিন ব্রহ্মচারী, সাধু, সন্ন্যাসী, যোগীপুরুষ এবং বিধবা মহিলারা 'অশুচি' পৃথিবীর উপর আগুনের রান্না করে কিছু খান না। অম্বুবাচী চলাকালীন সমস্ত সতীপীঠ সহ বিভিন্ন মন্দির ও বাড়ির ঠাকুর ঘরের মাতৃ শক্তি যেমন কালী, দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, বিপত্তারিণী,শীতলা, চণ্ডীর প্রতিমা বা ছবি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তবে এই সময় শুধুমাত্র তারাপীঠ মন্দির খোলা থাকে। 
 
কামাক্ষ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী 

সতীপিঠের অন্যতম অসমের কামাক্ষ্যা মন্দির। এই মন্দিরে সতীর গর্ভ এবং যোনি পড়েছিল। তন্ত্র সাধনার অন্যতম পীঠ এই মন্দির। প্রতি বছর অম্বুবাচীর তিন দিন কামাক্ষ্যা মন্দিরে বিশেষ উৎসব এবং মহা মেলার আয়োজন হয়। দেশ- বিদেশ থেকে ভক্তেরা ভিড় জমান মন্দিরে। তবে বন্ধ থাকে মন্দিরের দ্বার। 

অম্বুবাচীর সময় তারাপীঠ মন্দির 

অম্বুবাচীর সময়ে বছরের অন্যান্য দিনের মতোই তারাপীঠ মন্দিরে চলে মা তারার পুজো। এমনকী ভক্তদের জন্যেও খোলা থাকে মন্দিরের দ্বার। অনেকে ভুল করলেও, আসলে তারাপীঠ সতীপীঠ নয়। এটি একটি সাধনা স্থল বা সাধন ক্ষেত্রে বলে মনে করা হয়। এজন্যে পুরাকাল থেকে তারাপীঠ মন্দির অম্বুবাচীর সময়ও খোলা থাকে এবং নিত্য পুজো, ভোগ, আরতি সমস্ত কিছুই হয়।  

অম্বুবাচী উৎসব

পৌরাণিক যুগেও পৃথিবীকে ধরিত্রী মাতা বলে সম্বোধন করা হয়েছে। মনে করা হয়, আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের চতুর্থ পদে ঋতুমতী হন ধরিত্রী। পূর্ণ বয়স্কা ঋতুমতী নারীরাই কেবল সন্তান ধারণে সক্ষম হন। তাই অম্বুবাচীর পর ধরিত্রীও শস্য শ্যামলা হয়ে ওঠেন। এই অম্বুবাচী বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতী বলেও পরিচিত। 

অম্বুবাচী নিয়ে প্রচলিত বিশ্বাস 

প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, ঋতুকালে মেয়েরা অশুচি থাকেন। একই ভাবে মনে করা হয় পৃথিবীও সময়কালে অশুচি থাকেন। সেজন্যেই এই তিন দিন ব্রহ্মচারী, সাধু, সন্ন্যাসী,যোগীপুরুষ এবং বিধবা মহিলারা 'অশুচি' পৃথিবীর উপর আগুনের রান্না করে কিছু খান না। বিভিন্ন ফলমূল খেয়ে এই তিন দিন কাটাতে হয়। এখনও বিভিন্ন পরিবারের বয়স্ক বিধবা মহিলারা তিন দিন ধরে অম্বুবাচী উপলক্ষ্যে ব্রত পালন করেন৷ তিনদিন পরে জামাকাপড়, বিছানা সাবান দিয়ে ধুয়ে, নিজেরা সাবান- শ্যাম্পুতে স্নান করে সবকিছুতে হাত দেন। শুধু কামাখ্যা নয়, অম্বুবাচী চলাকালীন বিভিন্ন মন্দির ও বাড়ির ঠাকুর ঘরের মাতৃ শক্তির প্রতিমা বা ছবি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।  

অম্বুবাচী ২০২৫-র দিনক্ষণ

অম্বুবাচী শুরুর পর তিন দিন চলে এই উৎসব। চলতি বছরে অম্বুবাচী প্রবৃত্তিঃ অর্থাৎ শুরু হবে ২২ জুন অর্থাৎ ৭ আষাঢ় রাত ১১/৩/৫৭  এবং ২৫ জুন  অর্থাৎ ১০ আষাঢ় বিকেল  ৪/২৪/১৩ গতে এর নিবৃত্তিঃ অর্থাৎ সমাপ্তি হবে।